কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহর আযাব এবং তার কারণ ও প্রতিকার
=== বিষয়ঃ কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহর আযাব এবং তার কারণ ও প্রতিকার ===
>>> ভূমিকম্প <<<
أَأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الأرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ
তোমরা কি নিশ্চিত আছ যে, যিনি আকাশে রয়েছেন তিনি তোমাদেরকেসহ ভূমিকে ধ্বসিয়ে দিবেন না আর ওটা আকস্মিকভাবে থর থর করে কাঁপতে থাকবে? আল-মুলক, ৬৭/১৬
إِذَا زُلْزِلَتِ الأرْضُ زِلْزَالَهَا وَأَخْرَجَتِ الأرْضُ أَثْقَالَهَا وَقَالَ الإنْسَانُ مَا لَهَا
যখন প্রচন্ড কম্পনে জমিন প্রকম্পিত হবে এবং জমিন তার বোঝা বের করে দেবে আর মানুষ বলবে, ‘এর কী হল?’ আয-যিলযাল, ৯৯/১-৩
>>> ভূমিকম্প কিংবা শিলাবৃষ্টি <<<
أَفَأَمِنْتُمْ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمْ جَانِبَ الْبَرِّ أَوْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا ثُمَّ لا تَجِدُوا لَكُمْ وَكِيلا
তোমরা কি নিশ্চিত আছ যে, তিনি তোমাদেরসহ স্থলের কোন দিক ধ্বসিয়ে দেবেন না অথবা তোমাদের উপর শিলা বর্ষণকারী বাতাস প্রেরণ করবেন না? তারপর তোমরা তোমাদের জন্য কোন কর্মবিধায়ক পাবে না। আল-ইসরা, ১৭/৬৮
>>> ভূমিকম্প ছাড়া অন্য যে কোন আযাব যা ধারণাতীত <<<
أَفَأَمِنَ الَّذِينَ مَكَرُوا السَّيِّئَاتِ أَنْ يَخْسِفَ اللَّهُ بِهِمُ الأرْضَ أَوْ يَأْتِيَهُمُ الْعَذَابُ مِنْ حَيْثُ لا يَشْعُرُونَ
যারা (ইসলামের বিরুদ্ধে) মন্দের ষড়যন্ত্র করে তারা কি এ বিষয়ে নিশ্চিত যে, আল্লাহ তাদেরসহ মাটিকে ধ্বসিয়ে দেবেন না অথবা এমন দিক হতে শাস্তি আসবে না যা তাদের ধারণাতীত? আন- নাহল, ১৬/৪৫
>>> পাথর বর্ষণকারী ধুলোঝড় <<<
أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ
নাকি তোমরা নিশ্চিত আছ যে, যিনি আকাশের উপর রয়েছেন তিনি তোমাদের উপর পাথর বর্ষণকারী ঝড়ো হাওয়া প্রেরণ করবেন না, তখন তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী ? আল-মুল্ক ৬৭/১৭
>>> পানিতে ডুবিয়ে আযাব <<<
أَمْ أَمِنْتُمْ أَنْ يُعِيدَكُمْ فِيهِ تَارَةً أُخْرَى فَيُرْسِلَ عَلَيْكُمْ قَاصِفًا مِنَ الرِّيحِ فَيُغْرِقَكُمْ بِمَا كَفَرْتُمْ ثُمَّ لا تَجِدُوا لَكُمْ عَلَيْنَا بِهِ تَبِيعًا
নাকি তোমরা নিশ্চিত আছ যে, তিনি তোমাদেরকে আরেকবার সমুদ্রে নিয়ে যাবেন না তখন তোমাদের উপর প্রচন্ড বাতাস পাঠাবেন না অতঃপর তোমাদের সত্য প্রত্যাখ্যান করার কারণে তোমাদেরকে ডুবিয়ে দেবেন না? তখন তোমরা আমার বিরুদ্ধে এ বিষয়ে কোন সাহায্যকারী পাবে না। আল-ইসরা, ১৭/৬৯
>>> আকাশে কালো ধোঁয়া দিয়ে আযাব <<<
فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ يَغْشَى النَّاسَ هَذَا عَذَابٌ أَلِيمٌ
অতএব অপেক্ষা কর সেই দিনের, যেদিন আকাশ স্পষ্ট ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হবে, যা মানুষদেরকে ঘিরে ফেলবে, এটি যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আদ্-দুখান ৪৪/১০-১১
>>> রাতে বা দ্বিপ্রহরে কিংবা যে কোন সময় আল্লাহর আযাব আসবে <<<
أَفَأَمِنَ أَهْلُ الْقُرَى أَنْ يَأْتِيَهُمْ بَأْسُنَا بَيَاتًا وَهُمْ نَائِمُونَ أَوَأَمِنَ أَهْلُ الْقُرَى أَنْ يَأْتِيَهُمْ بَأْسُنَا ضُحًى وَهُمْ يَلْعَبُونَ أَفَأَمِنُوا مَكْرَ اللَّهِ فَلا يَأْمَنُ مَكْرَ اللَّهِ إِلا الْقَوْمُ الْخَاسِرُونَ
তবে কি জনপদগুলোর অধিবাসীরা নিরাপদ হয়ে গেছে, তাদের উপর আমার কঠোর আযাব রাতে আসবে যখন তারা ঘুমিয়ে থাকবে? নাকি জনপদগুলোর অধিবাসীরা নিরাপদ হয়ে গেছে, তাদের উপর আমার কঠোর আযাব দ্বিপ্রহরে আসবে যখন তারা খেলায় মগ্ন থাকবে? তারা কি আল্লাহর কৌশল থেকে নিরাপদ হয়ে গেছে? বস্তুত ক্ষতিগ্রস্ত কওম ছাড়া আল্লাহর কৌশল থেকে আর কেউ (নিজেদেরকে) নিরাপদ মনে করে না। আল-আ‘রাফ, ৭/৯৭-৯৯
>>> যে কোন ভাবেই আল্লাহ আমাদেরকে আযাব দিতে সক্ষম <<<
قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ
তুমি বল, ‘তিনি তোমাদের উপর দিক থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নীচ থেকে তোমাদের উপর আযাব প্রেরণ করতে যথেষ্ট ক্ষমতাবান। আনআম, ৬/৬৫
>>> পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের উপর আল্লাহর আযাব <<<
فَكُلا أَخَذْنَا بِذَنْبِهِ فَمِنْهُمْ مَنْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِ حَاصِبًا وَمِنْهُمْ مَنْ أَخَذَتْهُ الصَّيْحَةُ وَمِنْهُمْ مَنْ خَسَفْنَا بِهِ الأرْضَ وَمِنْهُمْ مَنْ أَغْرَقْنَا وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَكِنْ كَانُوا أَنْفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
অতঃপর তাদের প্রত্যেককেই তাদের পাপের কারণে আমি পাকড়াও করেছিলাম; তাদের কারো উপর আমি পাঠিয়েছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড ঝড়, কাউকে পাকড়াও করেছিল বিকট আওয়াজ, কাউকে আবার জমিনে ধ্বসিয়ে দিয়েছি আর কাউকে পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছি আর আল্লাহ এমন নন যে, তাদের উপর যুলম করবেন বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর যুলম করেছিল। আল-আনকাবুত, ২৯/৪০
قُلْ سِيرُوا فِي الأرْضِ فَانْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُجْرِمِينَ
তুমি বল, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর তারপর প্রত্যক্ষ কর কিরূপ হয়েছিল অপরাধীদের পরিণাম। আন্-নামল, ২৭/৬৯
قُلْ سِيرُوا فِي الأرْضِ ثُمَّ انْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
তুমি বল, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর, তারপর দেখ, কিরূপ হয়েছিল সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের পরিণাম। আল-আন‘আম, ৬/১১
قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِكُمْ سُنَنٌ فَسِيرُوا فِي الأرْضِ فَانْظُروا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
অবশ্যই তোমাদের পূর্বে বহু জীবনাচরণ অতিবাহিত হয়েছে, সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর তারপর দেখ, কিরূপ হয়েছিল সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের পরিণাম। আলে‘ইমরান। ৩/১৩৭
فَسِيرُوا فِي الأرْضِ فَانْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর, তারপর দেখ, কিরূপ হয়েছিল সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের পরিণাম। আন্-নাহল, ১৬/৩৬
فَانْتَقَمْنَا مِنْهُمْ فَانْظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
অতঃপর আমি তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করলাম, তাই দেখ, কিরূপ হয়েছিল সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের পরিণাম। আয্-যুখরুফ, ৪৩/২৫
أَوَلَمْ يَهْدِ لَهُمْ كَمْ أَهْلَكْنَا مِنْ قَبْلِهِمْ مِنَ الْقُرُونِ يَمْشُونَ فِي مَسَاكِنِهِمْ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ أَفَلا يَسْمَعُونَ
এটাও কি তাদেরকে সত্য পথ দেখায় না যে, আমি তাদের পূর্বে কত মানব বংশ ধ্বংস করেছি, যাদের বাসভূমির উপর দিয়ে তারা (এখন) চলাফেরা করে? এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে; তবুও কি তারা শুনবে না? আস-সাজদাহ, ৩২/২৬
>>> মানুষের পাপের কারণেই আল্লাহর আযাব আসে <<<
وَلَقَدْ أَهْلَكْنَا الْقُرُونَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَمَّا ظَلَمُوا
আর অবশ্যই আমি তোমাদের পূর্বে বহু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি, যখন তারা যুলুম (অর্থাৎ গুনাহ/পাপ) করেছিল। ইউনুস, ১০/১৩
وَمَا أَصَابَكُمْ مِنْ مُصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُو عَنْ كَثِيرٍ
তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তোমাদের অনেক অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দেন। আশ-শুরা, ৪২/৩০
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُمْ بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
মানুষের কৃতকর্মের কারণে স্থলে ও জলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। আর-রূম, ৩০/৪১
>>> বড় আযাবের পূর্বে ছোট আযাব দেন যাতে মানুষ ফিরে আসে <<<
وَلَنُذِيقَنَّهُمْ مِنَ الْعَذَابِ الأدْنَى دُونَ الْعَذَابِ الأكْبَرِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
আর অবশ্যই আমি তাদেরকে গুরুতর আযাবের পূর্বে লঘু আযাব আস্বাদন করাব যাতে তারা (আল্লাহর দিকে) ফিরে আসে। আস-সাজদাহ, ৩২/২১
وَمَا نُرْسِلُ بِالآيَاتِ إِلا تَخْوِيفًا
আর কেবলমাত্র ভয়/ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আমি (তাদের কাছে আযাবের) নিদর্শনসমূহ পাঠাই। ইসরা, ১৭/৫৯
وَإِذَا أَرَدْنَا أَنْ نُهْلِكَ قَرْيَةً أَمَرْنَا مُتْرَفِيهَا فَفَسَقُوا فِيهَا فَحَقَّ عَلَيْهَا الْقَوْلُ فَدَمَّرْنَاهَا تَدْمِيرًا
আর যখন আমি কোন জনপদকে ধ্বংস করাতে চাই তখন তার সচ্ছললোকদেরকে নির্দেশ দেই কিন্তু যখন তারা সেখানে পাপাচারে মেতে উঠে তখন তাদের উপর আমার আযাবের ফায়সালা ন্যায়-সঙ্গত হয়ে যায় অতঃপর আমি তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করে দেই। আল-ইসরা, ১৭/১৬
إِنَّ بَطْشَ رَبِّكَ لَشَدِيدٌ
নিশ্চয় তোমার রবের পাকড়াও অত্যন্ত কঠিন। বুরুজ, ৮৫/১২
وَمَا لَهُمْ مِنَ اللَّهِ مِنْ وَاقٍ
আর আল্লাহর শাস্তি থেকে তাদেরকে রক্ষাকারী কেউ নেই। আর-রাদ, ১৩/৩৪
>>> হাদীসের আলোকে আল্লাহর আযাব ও তার কারণ <<<
আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُقْبَضَ الْعِلْمُ، وَتَكْثُرَ الزَّلاَزِلُ، وَيَتَقَارَبَ الزَّمَانُ، وَتَظْهَرَ الْفِتَنُ، وَيَكْثُرَ الْهَرْجُ ـ وَهْوَ الْقَتْلُ الْقَتْلُ ـ حَتَّى يَكْثُرَ فِيكُمُ الْمَالُ فَيَفِيضُ ".
কিয়ামত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিৎনা প্রকাশ পাবে এবং হারজ বৃদ্ধি পাবে (হারজ অর্থ খুন-খারাবী) তোমাদের সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে। সহীহুল বুখারী: ১০৩৬
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ﻓِﻲ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﺄُﻣَّﺔِ ﺧَﺴْﻒٌ ﻭَﻣَﺴْﺦٌ ﻭَﻗَﺬْﻑٌ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻣَﺘَﻰ ﺫَﺍﻙَ ﻗَﺎﻝَ ﺇِﺫَﺍ ﻇَﻬَﺮَﺕِ ﺍﻟْﻘَﻴْﻨَﺎﺕُ ﻭَﺍﻟْﻤَﻌَﺎﺯِﻑُ ﻭَﺷُﺮِﺑَﺖِ ﺍﻟْﺨُﻤُﻮﺭُ
এই উম্মাতের মধ্যে ভূমিধস, চেহারা বিকৃতি এবং উপর থেকে নিক্ষেপ করে ধ্বংস করার শাস্তি আসবে। জনৈক সাহাবী জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! কখন এরূপ হবে? তিনি বললেন, যখন ব্যাপকহারে গায়িকা, বাদ্যযন্ত্র এবং মদ্যপানের প্রসার ঘটবে। (তিরমিযী অধ্যায়: আবওয়াবুল ফিতান, সহীহুল জামে আস্ সাগীর, হাদীছ নং-৪১১৯)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ﻳَﻜُﻮْﻥُ ﻓِﻰْ ﺁﺧِﺮِ ﻫﺬِﻩِ ﺍﻷُﻣَّﺔِ ﺧَﺴْﻒٌ ﻭ ﻣَﺴْﺦٌ ﻭَﻗَﺬْﻑٌ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻗُﻠْﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ! ﺃَ ﻧُﻬْﻠَﻚُ ﻭَ ﻓِﻴْﻨَﺎ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺤُﻮْﻥَ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻧَﻌْﻢُ, ﺇِﺫﺍ ﻇَﻬَﺮَ ﺍﻟْﺨَﺒَﺚُ
আখেরী যামানায় এই উম্মাতের কিছু লোককে ভূমিধস, চেহারা পরিবর্তন এবং উপরে উঠিয়ে নিক্ষেপ করে শাস্তি দেয়া হবে। আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মাঝে সৎলোক থাকতেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো? উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন অশ্লীলতা বৃদ্ধি পাবে। (তিরমিযী, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান, ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে আস্ সাগীর হাদীছ নং-৮০১২)
>>> আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচতে হলে আমাদের করণীয় <<<<
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُوا وَاتَّقَوْا لَفَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَرَكَاتٍ مِنَ السَّمَاءِ وَالأرْضِ وَلَكِنْ كَذَّبُوا فَأَخَذْنَاهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
আর যদি জনপদসমূহের অধিবাসীরা ঈমান আনত আর তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে অবশ্যই আমি তাদের উপর আসমান ও জমিন থেকে বরকতসমূহ খুলে দিতাম কিন্তু তারা (সত্যকে) প্রত্যাখ্যান করেছিল; সুতরাং তাদের কৃতকর্মের কারণে আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম। আল-আ‘রাফ, ৭/৯৬
>>> এই সমস্ত মহাবিপর্যয় থেকে বাঁচতে হলে আল্লাহর বিধান কার্যকর করতে হবে <<<
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ إِلا تَفْعَلُوهُ تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الأرْضِ وَفَسَادٌ كَبِيرٌ
যারা কুফরী করছে তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, যদি তোমরা তা না কর (অর্থাৎ আল্লাহর বিধান কার্যকর না কর) তাহলে ভূ-পৃষ্ঠে ফিতনা ও মহাবিপর্যয় দেখা দিবে। আনফাল, ৮/৭৩
>>> আল্লাহর বিধান কার্যকর করলে আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন <<<
وَلَيَنْصُرَنَّ اللَّهُ مَنْ يَنْصُرُهُ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ الَّذِينَ إِنْ مَكَّنَّاهُمْ فِي الأرْضِ أَقَامُوا الصَّلاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الأمُورِ
আর আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা তাঁকে সাহায্য করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী। (এরা হল) যাদেরকে আমি পৃথিবীতে ক্ষমতা প্রদান করলে তারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে এবং সৎকাজের আদেশ করে ও মন্দ কাজে নিষেধ করে আর সকল কাজের পরিণাম আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত। আল-হাজ্জ, ২২/৪০-৪১
>>> আল্লাহর আযাব হতে হেফাজত থাকার দুআ <<<
ভূ-কম্পনে আক্রান্ত হলে মুসা আলাইহিস্ সালাম দু'আ করেছিলেন,
اللَّهُمَّ أَنْتَ وَلِيُّنَا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الْغَافِرِينَ وَاكْتُبْ لَنَا فِي هَذِهِ الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ
আল্লা-হুম্মা আন্তা ওয়ালি-য়ুনা- ফাগ্ ফির্ লানা- ওয়ার্ হাম্ না- ওয়া আন্তা খায়রুল্ গা-ফিরি---ন্ ওয়াক্ তুব্ লানা- ফি- হা-যিহিদ্ দুন্ইয়া- হাসানাতাঁও ওয়াফিল্ আ-খিরা
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের অভিভাবক তাই আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন ও আমাদেরকে রহমত করুন আর আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমাকারী। আর আমাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ লিখে দিন। আ’রাফ, ৭/১৫৫-১৫৬
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; প্রতিদিন সকালে ও প্রতি সন্ধ্যায় কোন বান্দা এই দু’আ তিনবার পাঠ করলে কোন কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না।
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
বিস্ মিল্লা- হিল্লাযি লা- ইয়াদ্বুররু মা‘আস্ মিহি শাইউন্ ফিল্ আরদি ওয়া লা- ফিস্ সামা---ই ওয়া হুওয়াস্ সামি-‘উল্ আলি---ম
মহান আল্লাহর নামে যাঁর নামের সাথে আকাশে ও জমিনে কোন কিছু ক্ষতি করতে পারে না আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (আবূ দাউদ, আত-তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, আহমদ)
তথ্যসূত্র :
বই: ওয়াহীর জ্ঞান। সংকলন: মোহাম্মদ সাইদুর রহমান; সম্পাদনা: অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক; প্রকাশনায়: তাওহীদ পাবলিকেশন্স। অষ্টাদশ অধ্যায়ঃ বিবিধ; পৃষ্ঠাঃ ৬০০ হতে ৬০৭ পর্যন্ত।

কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহর আযাব এবং তার কারণ ও প্রতিকার
Price : *Happy Shopping
আজকের আইডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url