কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে কথা বলার আদব-কায়দা
=== বিষয়ঃ কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে কথা বলার আদব-কায়দা ===
মন্দ কথা অনিষ্ট ডেকে আনে। মন্দ কথার ফলে মানুষের মনে কষ্ট, ঘৃণা, বিদ্বেষ, শত্রুতা এবং হানাহানি সৃষ্টি হয়। ফলে পরিবার, সমাজ ও দেশে অশান্তি, অস্থিরতা এবং বিশৃংখলা সৃষ্টি করে। তাই মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল মানুষকে মন্দ কথা থেকে বিরত হয়ে উত্তম, নম্র কথার মাধ্যমে মানুষকে উপদেশ দিতে বলেছেন।
>>> ফেরেশতা কর্ম লিপিবদ্ধ করছেন তাই প্রত্যেকের সাবধান হওয়া উচিত <<<
مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে, তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার কাছে সদা প্রস্তুত সংরক্ষণকারী রয়েছে। ক্বাফ, ৫০/১৮
>>> উত্তমভাবে কথা বলতে হবে <<<
ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
তুমি তোমার রবের পথের দিকে হিকমত ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর এবং সর্বোত্তম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর; নিশ্চয় তোমার রব খুব ভালভাবেই জানেন কে তার পথ ছেড়ে গুমরাহ হয়ে গেছে এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদেরকে তিনি খুব ভাল করেই জানেন। আন্-নাহ্ল, ১৬/১২৫
قَوْلٌ مَعْرُوفٌ وَمَغْفِرَةٌ خَيْرٌ مِنْ صَدَقَةٍ يَتْبَعُهَا أَذًى وَاللَّهُ غَنِيٌّ حَلِيمٌ
ভাল কথা ও ক্ষমা উত্তম, যে দানের পর কষ্ট দেয়া হয় তার চেয়ে আর আল্লাহ মহা সম্পদশালী, পরম সহিঞ্চু। আল-বাক্বারাহ, ২/২৬৩
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ
যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাস করে, সে যেন ভাল কথা বলে, নতুবা চুপ থাকে। সহীহুল বুখারী: ৬০১৮, সহীহ মুসলিম: ৪৪০৫
وَالْكَلِمَةُ الطَّيِّبَةُ صَدَقَةٌ، وَبِكُلِّ خُطْوَةٍ تَمْشِيهَا إلَى الصَّلَاةِ صَدَقَةٌ، وَتُمِيطُ الْأَذَى عَنْ الطَّرِيقِ صَدَقَةٌ
ভাল কথা হচ্ছে সাদকাহ্, স্বলাতের জন্য প্রত্যেক পদক্ষেপ হচ্ছে সাদকাহ্ এবং কষ্টদায়ক জিনিস রাস্তা থেকে সরানো হচ্ছে সাদকাহ্। সহীহুল বুখারী: ২৯৮৯, সহীহ মুসলিম: ২২২৫
>>> কোন ব্যক্তিকে গালি দেয়া উচিত নয় <<<
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
سِبَابُ المُسْلمِ فُسُوْقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ
কোন মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিকী (গুনাহের) কাজ এবং তার সাথে লড়াই করা কুফরী। সহীহুল বুখারী: ৪৮, ৬০৪৪, ৭০৭৬, সহীহ মুসলিম: ১২৪
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لاَ يَرْمِي رَجُلٌ رَجُلاً بِالْفُسُوقِ، وَلاَ يَرْمِيهِ بِالْكُفْرِ، إِلاَّ ارْتَدَّتْ عَلَيْهِ، إِنْ لَمْ يَكُنْ صَاحِبُهُ كَذَلِكَ
কোন ব্যক্তি যেন অপর ব্যক্তিকে ফাসিক বলে গালি না দেয় এবং কোন ব্যক্তি যেন আরেক ব্যক্তিকে কাফির বলে অপবাদ না দেয়। কেননা, যদি সে তা না হয়ে থাকে, তবে তা তার উপরই পতিত হবে। সহীহুল বুখারী: ৬০৪৫
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا نَهَى اللَّهُ عَنْهُ
প্রকৃত মুসলিম সেই ব্যক্তি, যার যবান (কথা) ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে। সহীহুল বুখারী: ৬৪৮৪
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الْجَنَّةَ
যে ব্যক্তি আমার (সন্তুষ্টির) জন্য তার দু’চোয়ালের মধ্যবর্তী স্থানের (অর্থাৎ জিহবার) ও দু’পা-এর মধ্যবর্তী স্থানের (অর্থাৎ লজ্জাস্থানের) হেফাযতের দায়িত্ব নিবে আমি তার জন্যে জান্নাতের যিম্মাদার হবো। সহীহুল বুখারী: ৬৪৭৪, ৬৮০৭
আনাস ইবনে মালিক থেকে বর্ণিত,
لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَبَّابًا وَلاَ فَحَّاشًا وَلاَ لَعَّانًا، كَانَ يَقُولُ لأَحَدِنَا عِنْدَ الْمَعْتَبَةِ " مَا لَهُ، تَرِبَ جَبِينُهُ ".
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গালি-গালাজকারী, অশালীন ও অভিশাপদাতা ছিলেন না। তিনি আমাদের কারো উপর নারাজ হলে, কেবল এতটুকু বলতেন, তার কি হলো? তার কপাল ধুলাময় হোক। সহীহুল বুখারী: ৬০৩১, ৬০৪৬
>>> কোন ব্যক্তিকে অভিশাপ দেওয়া উচিত নয় <<<
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
وَمَنْ لَعَنَ مُؤْمِنًا فَهْوَ كَقَتْلِهِ، وَمَنْ قَذَفَ مُؤْمِنًا بِكُفْرٍ فَهْوَ كَقَتْلِهِ
কোন ব্যক্তি অন্য মু‘মিনের উপর অভিশাপ দিলে, তা তাকে হত্যা করার শামিল হবে আর কোন মুমিনকে কাফির বলে অপবাদ দিলে, তাও তাকে হত্যা করার শামিল হবে। সহীহুল বুখারী: ৬০৪৭
>>> কোন পুরুষ বা নারীকে ঠাট্রা-বিদ্রূপ, উপহাস করা উচিত নয় <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا يَسْخَرْ قَومٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ
হে মুমিনগণ! কোন পুরুষ যেন অপর কোন পুরুষকে ঠাট্রা-বিদ্রূপ না করে; হতে পারে যাদের বিদ্রূপ করা হচ্ছে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম, আর কোন নারী যেন অন্য নারীকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ না করে হতে পারে যাদের বিদ্রূপ করা হচ্ছে তারা বিদ্রূপকারিণীদের চেয়ে উত্তম। আল-হুজুরাত, ৪৯/১১
>>> অপরের নিন্দা বা দোষারোপ না করা এবং বিকৃত নামে না ডাকা <<<
وَلا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلا تَنَابَزُوا بِالألْقَابِ بِئْسَ الاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الإيمَانِ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ কর না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ (বিকৃত) নামে ডেকো না; ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকা ফাসেকী (গোনাহের) কাজ আর যারা এ ধরণের কাজ হতে বিরত না হয় তারাই যালিম। আল-হুজুরাত, ৪৯/১১
>>> মানুষের দোষ গোপন করা উচিত <<<
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ، لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يُسْلِمُهُ، وَمَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ اللَّهُ فِي حَاجَتِهِ، وَمَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً فَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرُبَاتِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার উপর জুলুম করবে না এবং তাকে জালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে আল্লাহ তার অভাব পূরণ করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের বিপদ দূর করবে, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তার বিপদ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ গোপন করবে, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তার দোষ গোপন করবেন। সহীহুল বুখারী: ২৪৪২, ৬৯৫১
>>> কারো গীবত করা উচিত নয় <<<
وَلا تَجَسَّسُوا وَلا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ
আর তোমরা কারো দোষ অনুসন্ধান করো না এবং তোমরা একে অপরের গীবত করো না; তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? আসলে তোমরা তো একে ঘৃণাই করে থাক, আর আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। আল-হুজুরাত, ৪৯/১২
وَيْلٌ لِكُلِّ هُمَزَةٍ لُمَزَةٍ
দুর্ভোগ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে সামনে নিন্দাকারী ও পেছনে গীবতকারী। আল-হুমাযাহ, ১০৪/১
وَلا تُطِعْ كُلَّ حَلافٍ مَهِينٍ هَمَّازٍ مَشَّاءٍ بِنَمِيمٍ مَنَّاعٍ لِلْخَيْرِ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيمٍ
আর তুমি তার অনুসরণ কর না, যে বেশি বেশি শপথ করে, লাঞ্ছিত, যে পশ্চাতে নিন্দা করে, একের কথা অপরের কাছে লাগিয়ে বেড়ায়, যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সীমালংঘনকারী, পাপিষ্ঠ, কঠোর স্বভাবের, তদুপরি কুখ্যাত। আল-ক্বালাম, ৬৮/১০-১৩
>>> বিনা অপরাধে অন্যকে কষ্ট দেওয়া উচিত নয় <<<
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا
আর যারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে বিনা অপরাধে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। আল-আহযাব, ৩৩/৫৮
>>> মন্দ কথা প্রচার না করা <<<
لا يُحِبُّ اللَّهُ الْجَهْرَ بِالسُّوءِ مِنَ الْقَوْلِ إِلا مَنْ ظُلِمَ وَكَانَ اللَّهُ سَمِيعًا عَلِيمًا
মন্দ কথার প্রচারণা আল্লাহ ভালবাসেন না, তবে কারো উপর যুলম করা হলে ভিন্ন কথা এবং আল্লাহ সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী। আন-নিসা, ৪/১৪৮
>>> মিথ্যা পরিহার করা <<<
وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ
এবং মিথ্যা কথা পরিহার কর। আল-হাজ্জ, ২২/৩০
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِرِ " . قَالَ " قَوْلُ الزُّورِ " . أَوْ قَالَ " شَهَادَةُ الزُّورِ "
আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় গোনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না? তিনি বললেন, মিথ্যা কথা বলা কিংবা মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। সহীহ মুসলিম: ১৬২
إِنَّ اللَّهَ لا يَهْدِي مَنْ هُوَ مُسْرِفٌ كَذَّابٌ
নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারী, মিথ্যাবাদীকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না। আল-মুমিন, ৪০/২৮
وَيْلٌ لِكُلِّ أَفَّاكٍ أَثِيمٍ
দুর্ভোগ প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপীর জন্য। আল-জাসিয়া, ৪৫/৭
فَلا تُطِعِ الْمُكَذِّبِينَ
সুতরাং তুমি মিথ্যারোপকারীদের অনুসরণ কর না। আল-ক্বালাম, ৬৮/৮
>>>> ধারণা-অনুমান থেকে বিরত থাকা <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ
হে মুমিনগণ! তোমরা অত্যধিক ধারণা করা থেকে বেঁচে থাক, নিশ্চয় কতক ধারণা পাপ। আল-হুজুরাত, ৪৯/১২
قُتِلَ الْخَرَّاصُونَ الَّذِينَ هُمْ فِي غَمْرَةٍ سَاهُونَ
অনুমানকারীরা ধ্বংস হোক, যারা অজ্ঞতা ও উদাসীনতার মধ্যে রয়েছে। আয-যারিয়াত, ৫১/১০-১১
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
" إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الْحَدِيث"
তোমরা ধারণা-অনুমান থেকে বেঁচে থাক কারণ ধারণা-অনুমান সর্বাপেক্ষা মিথ্যা কথা। সহীহুল বুখারী: ৬০৬৬, ৬৭২৪, সহীহ মুসলিম: ৬৪৩০
>>> মুনাফেকের বৈশিষ্ট্য চারটি <<<
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ كَانَ مُنَافِقًا خَالِصًا، وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنَ النِّفَاقِ حَتَّى يَدَعَهَا إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ وَإِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ، وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ "
চারটি স্বভাব যার মধ্যে রয়েছে সে খাঁটি মুনাফেক; যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকবে সে তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফেকের একটি স্বভাব থেকে যায়। ১. তার কাছে আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে; ২. যখন সে কথা বলে, মিথ্যা বলে; ৩. সে ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে এবং ৪. সে বিবাদে লিপ্ত হলে কটূক্তি করে। সহীহুল বুখারী: ৩৪, ২৪৫৯, ৩১৭৮, সহীহ মুসলিম: ১১৩
>>> কথা ও কাজে মিল থাকা <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لا تَفْعَلُونَ كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللَّهِ أَنْ تَقُولُوا مَا لا تَفْعَلُونَ
হে মুমিনগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল যা তোমরা কর না? আল্লাহর কাছে অত্যন্ত নিন্দনীয় ব্যাপার যে, তোমরা এমন কথা বল যা তোমরা কর না। আস-সাফ, ৬১/২-৩
>>> ঝগড়া হলে মীমাংসা করে নেওয়া <<<
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
নিশ্চয় মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই, তাই তোমাদের ভাইদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও আর আল্লাহকে ভয় কর যেন তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হয়। আল-হুজুরাত, ৪৯/১০
সুতরাং নম্র কথা ও উত্তম বাক্যের মাধ্যমে মানুষকে উপদেশ দেওয়া উচিত। মানুষকে কুরআন ও হাদীসের দাওয়াত দিতে গিয়ে যারা কটূ বাক্য ও মন্দ কথা বলে তারা আসলে নিজেদেরই পাপের পাল্লা ভারী করছে, এতে নিজেরই ক্ষতি হচ্ছে। তাই দাওয়াত দিতে গিয়ে সবাইকে হিকমত ও উত্তম বাক্য বিনিময় করা উচিত। নতুবা লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।
তথ্যসূত্র :
বই: ওয়াহীর জ্ঞান। সংকলন: মোহাম্মদ সাইদুর রহমান; সম্পাদনা: অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক; প্রকাশনায়: তাওহীদ পাবলিকেশন্স। অষ্টাদশ অধ্যায়ঃ বিবিধ; পৃষ্ঠাঃ ৫৯৪ হতে ৬০০ পর্যন্ত।

কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে কথা বলার আদব-কায়দা
Price : *Happy Shopping
আজকের আইডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url