ওয়াহীর জ্ঞান ১৭ শেষ পর্ব
অষ্টাদশ অধ্যায়ঃ
=========•বিবিধ।
===========
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পবিত্রতা।•আযানের মর্মার্থ।
•একই আয়াতে সালাত ও যাকাত।
•কুরআনে মানব সৃষ্টি।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে যৌনকর্ম।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে কথা বলার আদব-কায়দা।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহর আযাব এবং তার কারণ ও
প্রতিকার।
•কুরআন খেলা সম্পর্কে কী বলে?।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে •মুরতাদের শাস্তির বিধান।
•নবীদের দু‘আ।
•কুরআনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দু‘আ।
•রোগমুক্তি কামনায় ও ঝাড়-ফুঁকে ব্যবহৃত কিছু দু`আ।
• সহায়ক গ্রন্থসমূহ।
।
==== বিষয়ঃ কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পবিত্রতা ====
আরবী طُهْر (তুহর) শব্দটি (ط ه ر) ধাতু থেকে এসেছে। শব্দটি মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল طَهَرَ (তহারা) ও طَهُرَ (তহুরা) এবং মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল يَطْهُرُ (ইয়াতহুরু) যার অর্থ পবিত্র হওয়া, পাক হওয়া, পরিষ্কার হওয়া, পরিচ্ছন্ন হওয়া। এর Verbal Noun طُهْر (তুহর) যার অর্থ পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা। আরেকটি অর্থ হল মহিলাদের ঋতু মুক্তিকাল। এর Noun أَطْهَر (আতহার) যার অর্থ অধিক পবিত্র, পবিত্রতর, পবিত্রতম, উৎকৃষ্টতম। এর Noun طُهُور (তহুর) এর অর্থ পরিষ্কারক, অধিক পবিত্র্, পবিত্রতা। এর Verb form II মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল طَهَّرَ (তহ্হারা) যার অর্থ পরিষ্কার করা, পবিত্র করা, পরিচ্ছন্ন করা, জীবাণুমুক্ত করা, খাতনা করা। আল্লাহর বাণী-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ وَإِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوا وَإِنْ كُنْتُمْ مَرْضَى أَوْ عَلَى سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنَ الْغَائِطِ أَوْ لامَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ مِنْهُ مَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُمْ مِنْ حَرَجٍ وَلَكِنْ يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা সালাতের উদ্দেশে দন্ডায়মান হও তখন (সালাতের পূর্বে) তোমাদের মুখমন্ডল ধৌত কর এবং হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও, আর মাথা মাসাহ কর এবং পা’গুলো টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে ফেল। আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে (গোসল করে) ভালোভাবে পবিত্র হও। কিন্তু যদি রোগগ্রস্ত হও কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ যদি মলত্যাগ করে আসে কিংবা তোমরা স্ত্রীদেরকে স্পর্শ কর (স্ত্রী-সহবাস কর), অতঃপর পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও, তখন তোমরা তা দ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত মাসাহ কর, আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা আনয়ন করতে চান না, বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে ও তোমাদের উপর স্বীয় নি‘আমাত পূর্ণ করতে চান, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। আল-মায়িদাহ, ৫/৬
উপরের আয়াতের প্রথম অংশে সালাতের জন্য আল্লাহ এক ধরণের পবিত্রতার কথা বলেছেন যাকে আমরা অজু বলে থাকি। অজুর ফরযগুলোর পর আল্লাহ বলেছেন- আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে (গোসল করে) ভালোভাবে পবিত্র হও। আল-মায়িদাহ, ৫/৬
এ থেকে বুঝা যায়, পবিত্রতা দুই প্রকার ১। ছোট পবিত্রতা অর্থাৎ অজু এবং ২। বড় পবিত্রতা অর্থাৎ গোসল। সালাতের জন্য বড় পবিত্রতার প্রয়োজন হলে অবশ্যই গোসল করতে হবে আর যদি বড় পবিত্রতার প্রয়োজন না হয় তাহলে অজু করে সালাত আদায় করতে হবে।
>>> রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোসল <<<
মায়মূনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
وَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَضُوءًا لِجَنَابَةٍ فَأَكْفَأَ بِيَمِينِهِ عَلَى شِمَالِهِ مَرَّتَيْنِ، أَوْ ثَلاَثًا، ثُمَّ غَسَلَ فَرْجَهُ، ثُمَّ ضَرَبَ يَدَهُ بِالأَرْضِ ـ أَوِ الْحَائِطِ ـ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا، ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ، وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَذِرَاعَيْهِ، ثُمَّ أَفَاضَ عَلَى رَأْسِهِ الْمَاءَ، ثُمَّ غَسَلَ جَسَدَهُ، ثُمَّ تَنَحَّى فَغَسَلَ رِجْلَيْهِ. قَالَتْ فَأَتَيْتُهُ بِخِرْقَةٍ، فَلَمْ يُرِدْهَا، فَجَعَلَ يَنْفُضُ بِيَدِهِ.
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাবাতের গোসলের জন্য পানি রাখলেন, তারপর দু’বার বা তিনবার ডান হাতে বাম হাতের উপর পানি ঢাললেন এবং তাঁর লজ্জাস্থান ধুলেন। তারপর তাঁর হাত মাটিতে বা দেওয়ালে দু’বার বা তিনবার ঘষলেন। পরে তিনি কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন এবং চেহারা ও দু’হাত ধুলেন। তারপর তাঁর মাথায় পানি ঢাললেন এবং তাঁর শরীর ধুলেন। একটু সরে গিয়ে তাঁর দুই পা ধুলেন। মায়মূনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, এরপর আমি একখন্ড কাপড় দিলে তিনি তা নিলেন না, বরং নিজ হাতে পানি ঝেড়ে ফেলতে থাকলেন। সহীহুল বুখারী : ২৭৪
>>> সালাতের জন্য অযু শর্ত <<<
ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ مِنَ الْخَلاَءِ فَأُتِيَ بِطَعَامٍ فَذَكَرُوا لَهُ الْوُضُوءَ فَقَالَ " أُرِيدُ أَنْ أُصَلِّيَ فَأَتَوَضَّأَ "
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শৌচাগার থেকে বের হলেন। ইতোমধ্যে খানা হাজির করা হল। লোকজন তাকে উযুর কথা স্মরণ করিয়ে দিল। তখন তিনি বললেন, আমি কি স্বলাত আদায়ের ইচ্ছা করছি যে উযু করব? সহীহ মুসলিম : ৭১৩
ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَ مِنَ الْغَائِطِ وَأُتِيَ بِطَعَامٍ فَقِيلَ لَهُ أَلاَ تَوَضَّأُ فَقَالَ " لِمَ أَأُصَلِّي فَأَتَوَضَّأَ "
আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম। তিনি পায়খানা থেকে এলেন। খানা হাযির করা হল। তাকে বলা হলো আপনি কি উযু করবেন না? তখন তিনি বললেন কেন, আমি কি স্বলাত আদায় করব যে উযু করব? সহীহ মুসলিম : ৭১৪
>>> বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করার জন্যও অযু শর্ত <<<
আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত,
أَنَّ أَوَّلَ، شَىْءٍ بَدَأَ بِهِ حِينَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ تَوَضَّأَ، ثُمَّ طَافَ، ثُمَّ لَمْ تَكُنْ عُمْرَةً، ثُمَّ حَجَّ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ ـ رضى الله عنهما ـ مِثْلَهُ،
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম উযূ করে তাওয়াফ সম্পন্ন করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ তাওয়াফটি ‘উমরার তাওয়াফ ছিল না। তারপর আবূ বকর ও উমর রাদ্বিয়াল্লাহ আনহুমা অনুরূপভাবে হজ্জ করেছেন। সহীহুল বুখারী : ১৬১৪, ১৬১৫
>>> রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে উযূ করতেন? <<<
ইয়াহিয়া আল-মাযিনী রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞাসা করলঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে উযূ করতেন? আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেনঃ
فَدَعَا بِمَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى يَدَيْهِ فَغَسَلَ يَدَهُ مَرَّتَيْنِ، ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ثَلاَثًا، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، ثُمَّ غَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ، ثُمَّ مَسَحَ رَأْسَهُ بِيَدَيْهِ، فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ، بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ، حَتَّى ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ، ثُمَّ رَدَّهُمَا إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ.
তিনি পানি আনালেন। হাতের উপর সে পানি ঢেলে দু’বার তাঁর হাত ধুলেন। তারপর কুলি করলেন এবং তিনবার নাকে পানি দিয়ে ঝেড়ে পরিষ্কার করলেন। এরপর চেহারা তিনবার ধুলেন। তারপর দু’হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার করে ধুলেন। তারপর দু’হাত দিয়ে মাথা মাসেহ করলেন। অর্থাৎ হাত দু’টি সামনে ও পিছনে নিলেন। মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে শুরু করে উভয় হাত পিছন পর্যন্ত নিলেন, তারপর আবার যেখান থেকে শুরু করেছিলেন সেখানেই ফিরিয়ে আনলেন। তারপর দু’পা ধুলেন। সহীহুল বুখারী : ১৮৫
উসমান ইবনু আফফান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর আযাদকৃত গোলাম হুমরান রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিতঃ
أَنَّهُ رَأَى عُثْمَانَ دَعَا بِوَضُوءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى يَدَيْهِ مِنْ إِنَائِهِ، فَغَسَلَهُمَا ثَلاَثَ مَرَّاتٍ، ثُمَّ أَدْخَلَ يَمِينَهُ فِي الْوَضُوءِ، ثُمَّ تَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، وَاسْتَنْثَرَ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ ثَلاَثًا، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ غَسَلَ كُلَّ رِجْلٍ ثَلاَثًا، ثُمَّ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَتَوَضَّأُ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا وَقَالَ " مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ، غَفَرَ اللَّهُ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
তিনি উসমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-কে উযূর পানি আনাতে দেখলেন তারপর তিনি সে পাত্র থেকে উভয় হাতের উপর পানি ঢেলে তা তিনবার ধুয়ে ফেললেন। এরপর তাঁর ডান হাত পানিতে ঢুকালেন। এরপর কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিয়ে নাক ঝেড়ে ফেললেন। এরপর তাঁর মুখমণ্ডল তিনবার এবং উভয় হাত কুনই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন, এরপর মাথা মাসাহ করলেন। এরপর প্রত্যেক পা তিনবার ধোয়ার পর বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার এ উযূর ন্যায় উযু করতে দেখেছি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি আমার এ উযূর ন্যায় উযূ করে দু’রাক‘আত স্বলাত আদায় করবে এবং তার মধ্য কোন বাজে খেয়াল মনে আনবে না, মহান আল্লাহ তাঁর অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দিবেন।’ সহীহুল বুখারী : ১৬৪, ১৫৯
>>> মুমিন অপবিত্র হয় না <<<
উপরের কুরআনের আয়াতে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ
“হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা সালাতের উদ্দেশে দন্ডায়মান হও তখন (সালাতের পূর্বে) তোমাদের মুখমন্ডল ধৌত কর এবং হাতগুলোকে কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও, আর মাথা মাসাহ কর এবং পা’গুলোকে টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো”। এই অংশে আল্লাহ পবিত্র কিংবা অপবিত্র শব্দ ব্যবহার করেননি। কিন্তু পরের অংশে আল্লাহ বললেন, وَإِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوا “আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে (গোসল করে) ভালোভাবে পবিত্র হও”; আল-মায়িদাহ, ৫/৬। অর্থাৎ এ অংশে অপবিত্র ও পবিত্র শব্দ ব্যবহার করেছেন। এ থেকে বুঝা যায় মুমিন গোসল ফরয না হলে অপবিত্র হয় না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
سُبْحَانَ اللَّهِ إِنَّ الْمُؤْمِنَ لاَ يَنْجُسُ
সুবহানাল্লাহ! মুমিন অপবিত্র হয় না। সহীহুল বুখারী :২৮৩, সহীহ মুসলিম : ৭১০
>>> হায়েযকালে নারীগণ অপবিত্র <<<
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ وَلا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّى يَطْهُرْنَ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
আর তারা তোমাকে (নারীদের) হায়েয সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে; তুমি বল, তা অশুচি; তাই তোমরা হায়েযকালে স্ত্রী-সহবাস হতে বিরত থাক এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা পবিত্র হয় তাদের নিকটে স্ত্রী-সহবাসে যেও না; অতঃপর যখন তারা পবিত্র হয়, তখন তাদের নিকট গমন কর (যৌনকর্ম কর) যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদেরকে আর পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকে ভালবাসেন। আল-বাকারাহ, ২/২২২
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
فَإِذَا أَقْبَلَتِ الْحَيْضَةُ فَدَعِي الصَّلاَةَ، وَإِذَا أَدْبَرَتْ فَاغْتَسِلِي وَصَلِّي
হায়েয শুরু হলে স্বলাত ছেড়ে দেবে আর হায়েয শেষ হলে গোসল করে স্বলাত আদায় করবে। সহীহুল বুখারী : ৩২০
>>> তায়াম্মুম সম্পর্কে আরও একটি আয়াত <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا تَقْرَبُوا الصَّلاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى حَتَّى تَعْلَمُوا مَا تَقُولُونَ وَلا جُنُبًا إِلا عَابِرِي سَبِيلٍ حَتَّى تَغْتَسِلُوا وَإِنْ كُنْتُمْ مَرْضَى أَوْ عَلَى سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنَ الْغَائِطِ أَوْ لامَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُورًا
হে মুমিনগণ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের কাছেও যেও না, যতক্ষণ না তোমরা যা বল তা বুঝতে পার এবং অপবিত্র অবস্থায়ও (সালাতের কাছে যেও না), যতক্ষণ না তোমরা গোসল কর, তবে পথ অতিক্রমকারী হলে ভিন্ন কথা আর যদি তোমরা অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ মলত্যাগ করে আসে কিংবা তোমরা স্ত্রী সম্ভোগ কর তখন যদি পানি না পাও তবে পবিত্র মাটিতে তায়াম্মুম কর, অতঃপর তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত মাসাহ কর, নিশ্চয় আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। আন-নিসা, ৪/৪৩
এ আয়াতে “তবে পথ অতিক্রমকারী হলে ভিন্ন কথা” এর অর্থ হলো সে গোসল না করে শুধু তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারবে। তায়াম্মুম تيمم এর আভিধানিক অর্থ ইচ্ছা করা। এখানে অর্থ হবে, ওযু ও গোসলের সময় পানি ব্যবহার অসম্ভব হলে মাটি দ্বারা পবিত্র হওয়ার নির্ধারিত কর্ম সম্পাদন করা। মাটিতে হাত স্পর্শ করে প্রথমে মুখমন্ডল মাসাহ করা অতঃপর উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসাহ করা। শরীয়তের পরিভাষায় একে তায়াম্মুম বলে।
কেউ কেউ বলেছেন, এখানে সালাত অর্থ সালাত আদায়স্থল। তাহলে অর্থ হবে, তোমরা অপবিত্র অবস্থায় সালাত আদায়স্থল তথা মসজিদে যেতে পারবে না। তবে পথ অতিক্রম করার উদ্দেশ্যে যাওয়া যাবে। (যুবদাতুত-তাফসীর)
>>> হাদীসের আলোকে তায়াম্মুম <<<
আম্মার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন,
فَضَرَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ الأَرْضَ، فَمَسَحَ وَجْهَهُ وَكَفَّيْهِ.
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাটিতে হাত মারলেন এবং তাঁর চেহারা এবং উভয় হাতের কব্জি মাসাহ করলেন। সহীহুল বুখারী : ৩৪৩
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমার জন্য হাত দিয়ে এরূপ করাই যথেষ্ট ছিল,
وَضَرَبَ بِيَدَيْهِ إِلَى الأَرْضِ فَنَفَضَ يَدَيْهِ فَمَسَحَ وَجْهَهُ وَكَفَّيْهِ
আর তিনি তাঁর উভয় হাত মাটিতে মারলেন অতঃপর ঝেড়ে ফেললেন আর মুখমন্ডল এবং উভয় হাতের কব্জি মাসাহ করলেন। সহীহ মুসলিম : ৭০৫
>>> কুরআনুল কারিম স্পর্শ করা <<<
কুরআনুল কারিম স্পর্শ করার জন্য অযু করা মুস্তাহাব, তবে অযু ব্যতীতও কুরআন স্পর্শ করা জায়েয। কুরআন ও সহীহ সুন্নাহে এমন কোনো দলিল নেই, যার দ্বারা প্রমাণ হয় যে, অযু ব্যতীত মুসহাফ (কুরআন) স্পর্শ করা যাবে না।
>>> কুরআন পবিত্র গ্রন্থ <<<
رَسُولٌ مِنَ اللَّهِ يَتْلُو صُحُفًا مُطَهَّرَةً
আল্লাহর নিকট হতে এক রাসূল এসেছে, যে পাঠ করে পবিত্র গ্রন্থ। আল-বাইয়্যিনাহ, ৯৮/২
>>> কুরআন সংরক্ষিত আছে লওহে মাহফুজে <<<
فِي صُحُفٍ مُكَرَّمَةٍ مَرْفُوعَةٍ مُطَهَّرَةٍ بِأَيْدِي سَفَرَةٍ كِرَامٍ بَرَرَةٍ
এটা লিপিবদ্ধ আছে মর্যাদাসম্পন্ন কিতাবসমূহে (অর্থাৎ লওহে মাহফুজে), সমুন্নত, পবিত্র। এমন লেখকদের হাতে, যারা মহাসম্মানিত, পূত-পবিত্র। আবাসা, ৮০/১৩-১৬
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন-
إِنَّهُ لَقُرْآنٌ كَرِيمٌ فِي كِتَابٍ مَكْنُونٍ لا يَمَسُّهُ إِلا الْمُطَهَّرُونَ تَنْزِيلٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ أَفَبِهَذَا الْحَدِيثِ أَنْتُمْ مُدْهِنُونَ
নিশ্চয় এটি মহা সম্মানিত কুরআন, যা (লিখিত) আছে সুরক্ষিত কিতাবে, পূত-পবিত্রগণ (ফেরেশতা) ছাড়া (শয়তানেরা) তা স্পর্শ করতে পারে না। জগৎসমূহের রবের পক্ষ হতে অবতীর্ণ। তবুও কি তোমরা এই (হাদীসকে) বাণীকে তুচ্ছ গণ্য কর? আল-ওয়াকিয়া, ৫৬/৭৭-৮১
>>> নিম্নের হাদীস প্রমাণ করে অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা যায়ঃ <<<
ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, আবু সুফিয়ান তাঁকে মুখোমুখি (প্রত্যক্ষ) এ ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমার (তথা কুরাইশ) ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মধ্যে (হুদাইবিয়ার) সন্ধিচুক্তি সূত্রে আবদ্ধ থাকাকালে (একদল ব্যবসায়ী আরব কাফেলাসহ) আমি সিরিয়া গেলাম। এ সময় হঠাৎ (রোম সম্রাট) হিরাক্লিয়াস (উপাধি কায়সার)-এর নামে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পত্র গিয়ে পৌঁছলো। পত্রখানা নিয়েছেন (রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দূত) দিহইয়া কালবি (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) তিনি তা দিয়েছেন বুসরার শাসনকর্তার কাছে আর তিনি তা পৌঁছিয়েছেন সম্রাট হিরাক্লিয়াস এর কাছে। .........
قَالَ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيهِ " بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللَّهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ أَسْلِمْ تَسْلَمْ وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ وَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ وَ ” يَٰٓأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ تَعَالَوۡاْ إِلَىٰ كَلِمَةٖ سَوَآءِۢ بَيۡنَنَا وَبَيۡنَكُمۡ أَلَّا نَعۡبُدَ إِلَّا ٱللَّهَ وَلَا نُشۡرِكَ بِهِۦ شَيۡٔٗا وَلَا يَتَّخِذَ بَعۡضُنَا بَعۡضًا أَرۡبَابٗا مِّن دُونِ ٱللَّهِۚ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَقُولُواْ ٱشۡهَدُواْ بِأَنَّا مُسۡلِمُونَ“ [ال عمران: ٦٤ [
আবু সুফিয়ান বলেনঃ অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের চিঠি তলব করেন, হিরাকল চিঠি হাতে নিয়ে পড়ল, তাতে ছিল: “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহর পক্ষ থেকে রোমের প্রধান হিরাকলের নিকট। হিদায়াত অনুসরণকারীর উপর সালাম, অতঃপরঃ আমি তোমাকে ইসলামের প্রতি আহবান জানাচ্ছি, ইসলাম গ্রহণ কর নিরাপদ থাকবে। আল্লাহ তোমাকে দ্বিগুণ সাওয়াব প্রদান করবেন। তবে যদি তুমি (এ আহবানে) সাড়া না দাও, তাহলে রোম সাম্রাজ্যের কৃষককুলের (সাধারণ প্রজাদের) পাপের বোঝা তোমাকেই বহন করতে হবে। (আল্লাহর বাণী) “হে আহলে-কিতাব! তোমরা এমন কথার দিকে আস, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই, তা এই যে, আমরা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদত করব না আর তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করব না এবং আল্লাহ ছাড়া আমাদের কেউ কাউকে রব হিসাবে গ্রহণ করব না, তারপর যদি তারা বিমুখ হয় তবে তুমি বলে দাও, ‘তোমরা সাক্ষী থাক যে, নিশ্চয় আমরা মুসলিম”। আলে‘ইমরান, ৩/৬৪ (সহীহ মুসলিম : ৪৪৯৯)
মন্তব্যঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনুল কারিমের এ আয়াতসহ নাসারাদের নিকট চিঠি প্রেরণ করেছেন। তিনি অবশ্যই জানতেন যে, এ চিঠি তারা স্পর্শ করবে, তবুও তিনি আয়াত লিখেছেন। চিঠিতে বিদ্যমান আয়াতটি কুরআনুল কারিমের হুকুম রাখে না, বরং এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বক্তৃতার অংশ, অথবা তাফসীরের কিতাবে বিদ্যমান আয়াতের ন্যায় একটি আয়াত, যা অযু ব্যতীত স্পর্শ করা বৈধ।
উপসংহারঃ উপরের কুরআনের আয়াত ও হাদীসের আলোকে বলা যায়, দুটি ইবাদতের জন্যই ওযু শর্ত ১. সালাত ২. বাইতুল্লাহ তাওয়াফ। কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে ওযু শর্ত নয় তবে অযু করে নেওয়া মুস্তাহাব। যেমন- কুরআন স্পর্শ করার ক্ষেত্রে। যদি বড় পবিত্রতা আবশ্যক না হয় অর্থাৎ গোসল ফরয না হয় তাতে কুরআন স্পর্শ করা যাবে। যদি গোসল ফরয হয় তবে কুরআন স্পর্শ করা যাবে না, গোসল করে কুরআন স্পর্শ করতে হবে। কিন্তু ওজর থাকলে তায়াম্মুম করে সালাত ও অন্যান্য ইবাদত কিংবা কুরআন স্পর্শ করতে পারবে। নারীগণ হায়েযকালে অপবিত্র, তাই নারীগণ হায়েযকালে কোন ইবাদত করতে পারবে না এবং কুরআনও স্পর্শ করতে পারবে না, তবে স্পর্শ না করে মুখস্থ কুরআন তিলায়াত করতে পারবে কিংবা মুখস্থ দু‘আ-কালাম পড়তে পারবে। সহীহুল বুখারীতে বর্ণিত আছে, বিনা অযুতে কুরআন পাঠ করা যায়। (বুখারী: ১৮৩)
সহীহুল বুখারীতে আরও বর্ণিত আছে, জানাবত বা অন্য কারণে অপবিত্র অবস্থায় মহান আল্লাহর যিকির করা যায়। আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন-
كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ اللَّهَ عَلَى كُلِّ أَحْيَانِهِ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব সময়ই আল্লাহর যিকর করতেন। সহীহ মুসলিম: ৭১২
==== বিষয়ঃ আযানের মর্মার্থ ====
আমরা প্রতিদিন পাঁচবার আযান শুনি কেউ সালাত আদায় করি আর কেউ সালাত আদায় করি না। কুরআনে আল্লাহ বলেন-إِنَّ الصَّلاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَوْقُوتًا নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয। আন-নিসা, ৪/১০৩
মসজিদে মুয়াজ্জিন আযান দেয় কিন্তু আমরা ঐ আযানের মর্মার্থগুলো কি বুঝতে পারি? মুয়াজ্জিন আযান দেওয়া শুরু করল >>>>
اللهُ أَكْبَرُ (‘আল্লা-হু আক্ববার’) চারবার বলা হল যার অর্থ আল্লাহ সর্বশক্তিমান। এ কথা বলে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্ব ঘোষণা করা হল।
أَشْهَدُ أَنْ لآ إلَهَ إلَّا الله (‘আশ্হাদু আল্ লা---ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’) দু’বার বলা হল যার অর্থ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতীত কোন (সত্য) ইলাহ নেই।
এ কথা বলার মানে একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করতে হবে অন্য কারো ইবাদত করা যাবে না। সালাতে আমাদের বলতে হয় إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ‘আমরা শুধুমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই নিকট সাহায্য চাই।’
আর ইবাদতে কাউকে শরীক করা যাবে না। হোক সে ওলী, গাউস, কুতুব, পীর, মাযার বা অন্য যে কেউ। যদি ইবাদতে কাউকে শরীক করা হয় তাহলে তার অতীতের সমস্ত আমল বাতিল হয়ে যাবে এবং সে মুশরিকদের অর্ন্তভুক্ত হবে। আল্লাহ বলেন-
وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
আর অবশ্যই তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে ওয়াহী পাঠানো হয়েছে যে, যদি তুমিও শির্ক কর তাহলে তোমার কর্ম নিষ্ফল হবেই আর অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আয-যুমার, ৩৯/৬৫
وَلَوْ أَشْرَكُوا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
আর তারাও যদি শির্ক করত, তাহলে যে আমলসমূহ (কর্মসমূহ) তারা করেছিল, তা অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যেত। আল-আন‘আম, ৬/৮৮
أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ (‘আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূ-লুল্লা---হ্’) দু’বার বলা হল যার অর্থ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল।
এ কথা বলার মানে, আমি যে ইবাদত করব তা একমাত্র মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরিকা বা পদ্ধতিতে করতে হবে অন্য কারো তরিকা বা পদ্ধতিতে ইবাদত করা যাবে না যদি করা হয় তাহলে আল্লাহ তা কবুল করবেন না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ
যে ব্যক্তি এমন আমল করল যার উপর আমাদের কোন নির্দেশনা নেই, তাহলে তা পরিত্যাজ্য হবে। সহিহ মুসলিম: ৪৩৮৫
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যত্র বলেছেন-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ
যে ব্যক্তি আমাদের এই দ্বীনের মাঝে নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে তাহলে তা পরিত্যাজ্য হবে। সহীহুল বুখারী: ২৬৯৭ সহিহ মুসলিম: ৪৩৮৪
حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ (‘হায়্যইয়া আলাছ্ ছালা---হ’) দু’বার বলা হল যার অর্থ সালাতের জন্য এসো।
সালাত একটি শ্রেষ্ঠ ইবাদত। সালাত অবশ্যই আদায় করতে হবে। সালাত পরিত্যাগকারীর জন্য আল্লাহর আযাব অপরিহার্য। আল্লাহ বলেন-
فَخَلَفَ مِنْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا
অতপর তাদের পরে স্থলাভিষিক্ত হল এমন বংশধর যারা সালাত নষ্ট করল আর প্রবৃত্তির অনুসরণ করল, সুতরাং অচিরেই তারা (জাহান্নামের) শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। মারইয়াম, ১৯/৫৯
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِنَّ بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكَ الصَّلاَةِ
বান্দা এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে স্বলাত পরিত্যাগ করা। সহিহ মুসলিম ১৪৯, ১৫০
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যত্র বলেছেন-
العهد الذي بيننا وبينهم الصلاة فمن تركها فقد كفر
আমাদের ও তাদের মধ্যকার অঙ্গীকার হল সালাত। অতএব যে ব্যক্তি সালাত ত্যাগ করল তবে অবশ্যই সে কুফরী করল। আত-তিরমিযী, আহমাদ: ২১৮৫৯
এই সালাতও আদায় করতে হবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তরিকা বা পদ্ধতিতে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
صَلُّوْا كَمَا رَأَيْتُمُوْنِيْ أُصَلِّيْ
তোমরা ঠিক সেভাবে সালাত আদায় কর, যেভাবে আমাকে সালাত আদায় করতে দেখছো। সহীহুল বুখারী: ৬৩১, ৬০০৮, ৭২৪৬
রাসুলের তরিকা ব্যতীত সালাত কবুল হবে না। যদি রাসুলের তরিকায় সালাত আদায় করা হয় তাহলে তার ফলাফল পাওয়া যাবে। যা পরে বলা হচ্ছে-
حَىَّ عَلَى الْفَلاَحْ (‘হায়্যইয়া আলাল্ ফালা---হ’) দু’বার বলা হল যার অর্থ কল্যাণের জন্য এসো।
যদি সালাত আদায় করা হয় আর তা যদি রাসুলের তরিকায় হয় তাহলেই দুনিয়া ও আখেরাতে সার্বিক কল্যাণ ও নিরাপত্তা রয়েছে। আল্লাহ বলেন-
الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ أُولَئِكَ لَهُمُ الأمْنُ وَهُمْ مُهْتَدُونَ
যারা ঈমান এনেছে ও নিজ ঈমান জুলুমের (মানে শির্ক) সাথে মিশ্রিত করে নাই, তাদের জন্যেই রয়েছে নিরাপত্তা আর তারাই সরল পথ প্রাপ্ত। আল-আন‘আম, ৬/৮২
اللهُ أَكْبَرُ (‘আল্লা-হু আক্ববার’) দু’বার বলা হল যার অর্থ আল্লাহ সর্বশক্তিমান। আবারও আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্ব ঘোষণা করা হল।
لآ إلَهَ إلَّا اللهُ (‘লা---ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’) একবার বলা হল যার অর্থ আল্লাহ ব্যতীত কোন (সত্য) ইলাহ নেই। আবারও এ কথা বলে বুঝান হল ইবাদতের হকদার একমাত্র আল্লাহ।
ফজরের আযানের সময় হায়্যাইয়া আলাল্ ফালা---হ এর পরে أُصَّلاَةُ خَيْرٌ مِّنَ النَّوْمِ (‘আসসালা-তু খায়-রূম মিনান নাউম’) দু’বার বলা হল যার অর্থ্ নিদ্রা হতে সালাত উত্তম।
এ থেকে বুঝা যায় সালাত সর্বোত্তম আমল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ‘কোন আমল উত্তম’ জিজ্ঞাসা করা হলে তার প্রত্যুত্তরে তিনি বলেছেন- الصَّلاَةُ عَلَى مِيقَاتِهَا সময় মত স্বলাত আদায় করা। সহীহুল বুখারী: ২৭৮২
পরিশেষে বলা যায়, আল্লাহর বিধান অনুযায়ী, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের মাধ্যমে, আল্লাহর ক্রোধ ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য, সময়মত সালাত আদায় করা প্রতিটি মুসলিমের অবশ্যই কর্তব্য। তাহলেই সালাতের ফলাফল পাওয়া যাবে। আল্লাহ বলেন-
وَأَقِمِ الصَّلاةَ إِنَّ الصَّلاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ
আর সালাত কায়েম কর, নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আল-আনকাবূত, ২৯/৪৫
আল্লাহ অন্যত্র বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
হে ঈমানদারগণ, তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। আল-বাকারাহ, ২/১৫৩
==== বিষয়ঃ একই আয়াতে সালাত ও যাকাত ====
কুরআনের ২৬টি আয়াতে সালাত ও যাকাত-এর কথা একই সঙ্গে উল্লেখ রয়েছে।
أَقِيمُوا الصَّلاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ
তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত প্রদান কর। এই বাক্য কুরআনের ৮ জায়গায় রয়েছে। ২/৪৩, ২/৮৩, ২/১১০, ৪/৭৭, ২২/৭৮, ২৪/৫৬, ৫৮/১৩, ৭৩/২০
أَقِمْنَ الصَّلاةَ وآتِينَ الزَّكَاةَ
তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত প্রদান কর। এই বাক্য কুরআনের ১ জায়গায় রয়েছে। ৩৩/৩৩
لَئِنْ أَقَمْتُمُ الصَّلاةَ وَآتَيْتُمُ الزَّكَاةَ
অবশ্যই যদি তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত প্রদান কর। এই বাক্য কুরআনের ১ জায়গায় রয়েছে। ৫/১২
يُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ
তারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে। এই বাক্য কুরআনের ৪ জায়গায় রয়েছে। ৫/৫৫, ৯/৭১, ২৭/৩, ৩১/৪
يُقِيمُوا الصَّلاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ
তারা সালাত কায়েম করবে ও যাকাত প্রদান করবে। এই বাক্য কুরআনের ১ জায়গায় রয়েছে। ৯৮/৫
أَقَامُوا الصَّلاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ
তারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে। এই বাক্য কুরআনের ৪ জায়গায় রয়েছে। ২/২৭৭, ৯/৫, ৯/১১, ২২/৪১
أَقَامَ الصَّلاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ
সালাত কায়েম করে আর যাকাত প্রদান করে। এই বাক্য কুরআনের ২ জায়গায় রয়েছে। ২/১৭৭, ৯/১১
إِقَامَ الصَّلاةِ وَإِيتَاءَ الزَّكَاةِ
সালাত কায়েম করার এবং যাকাত প্রদান করার। এই বাক্য কুরআনের ১ জায়গায় রয়েছে। ২১/৭৩
إِقَامِ الصَّلاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ
সালাত কায়েম করা ও যাকাত প্রদান করা। এই বাক্য ১ জায়গায় আছে। ২৪/৩৭
وَالْمُقِيمِينَ الصَّلاةَ وَالْمُؤْتُونَ الزَّكَاةَ
তারা সালাত প্রতিষ্ঠাকারী ও যাকাত প্রদানকারী। এই বাক্য কুরআনের ১ জায়গায় রয়েছে। ৪/১৬২
بِالصَّلاةِ وَالزَّكَاةِ
সালাতের ও যাকাতের। এই বাক্য কুরআনের ২ জায়গায় রয়েছে। ১৯/৩১, ১৯/৫৫
==== বিষয়ঃ কুরআনে মানব সৃষ্টি ====
>>> মানুষ সৃষ্টির তিনটি ধাপ <<<
أَكَفَرْتَ بِالَّذِي خَلَقَكَ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ ثُمَّ سَوَّاكَ رَجُلا
তুমি কি অস্বীকার করছ? যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে এরপর বীর্য থেকে এরপর তোমাকে পূর্ণাঙ্গ করেছেন মানুষের আকৃতিতে? আল-কাহ্ফ, ১৮/৩৭
الَّذِي أَحْسَنَ كُلَّ شَيْءٍ خَلَقَهُ وَبَدَأَ خَلْقَ الإنْسَانِ مِنْ طِينٍ ثُمَّ جَعَلَ نَسْلَهُ مِنْ سُلالَةٍ مِنْ مَاءٍ مَهِينٍ ثُمَّ سَوَّاهُ وَنَفَخَ فِيهِ مِنْ رُوحِهِ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالأبْصَارَ وَالأفْئِدَةَ قَلِيلا مَا تَشْكُرُونَ
তিনি তাঁর প্রতিটি সৃষ্টিকে অতি উত্তম করে সৃষ্টি করেছেন আর মানুষ সৃষ্টির সূচনা করেছেন কাদামাটি হতে; তারপর তার বংশধর বানিয়েছেন তুচ্ছ পানির নির্যাস থেকে; এরপর তাকে সুঠাম করেছেন ও তার মধ্যে রূহ ফুঁকে দিয়েছেন আর তোমাদের জন্য কর্ণ, চক্ষু ও অন্তরসমূহ দিয়েছেন, তোমরা অতি সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। আস-সাজদাহ, ৩২/৭-৯
>>> প্রথম ধাপ, আদমকে (আলাইহিস সালাম)-কে মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে <<<
إِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِنْ طِينٍ
যখন তোমার রব ফেরেশতাগণকে বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আমি মাটি থেকে একজন মানুষ সৃষ্টি করতে যাচ্ছি। সোয়াদ, ৩৮/৭১
خَلَقَ الإنْسَانَ مِنْ صَلْصَالٍ كَالْفَخَّارِ وَخَلَقَ الْجَانَّ مِنْ مَارِجٍ مِنْ نَارٍ
তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন পোড়া মাটির ন্যায় শুষ্ক ঠনঠনে মাটি থেকে আর জিন সৃষ্টি করেছেন অগ্নিশিখা থেকে। আর-রহমান, ৫৫/১৪-১৫
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الإنْسَانَ مِنْ صَلْصَالٍ مِنْ حَمَإٍ مَسْنُونٍ وَالْجَانَّ خَلَقْنَاهُ مِنْ قَبْلُ مِنْ نَارِ السَّمُومِ
আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি ছাঁচে ঢালা শুষ্ক ঠনঠনে মাটি থেকে আর এর পূর্বে জিনকে সৃষ্টি করেছি উত্তপ্ত অগ্নিশিখা থেকে। আল-হিজ্র, ১৫/২৬-২৭
فَاسْتَفْتِهِمْ أَهُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمْ مَنْ خَلَقْنَا إِنَّا خَلَقْنَاهُمْ مِنْ طِينٍ لازِبٍ
অতঃপর তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, তাদেরকে সৃষ্টি করা কি কঠিনতর, নাকি আমি অন্য যা কিছু সৃষ্টি করেছি তা? নিশ্চয় আমি তাদেরকে সৃষ্টি করেছি আঠালো মাটি থেকে। আস-সাফফাত, ৩৭/১১
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ طِينٍ ثُمَّ قَضَى أَجَلا وَأَجَلٌ مُسَمًّى عِنْدَهُ ثُمَّ أَنْتُمْ تَمْتَرُونَ
তিনিই আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে কাদামাটি হতে সৃষ্টি করেছেন, তারপর একটি নির্দিষ্ট জীবনকাল নির্ধারণ করেছেন; এছাড়া আরও একটি নির্দিষ্ট মেয়াদকাল নির্ধারিত রয়েছে, তারপরও তোমরা সন্দেহ করে থাক। আল-আন‘আম, ৬/২
مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَى
তা (মাটি) থেকেই আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি আর তার (মাটির) মধ্যেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব এবং পুনরায় তা (মাটি) হতেই আমি তোমাদেরকে বের করব। ত্ব-হা, ২০/৫৫
>>> আদম ও ঈসা (আলাইহিস সালাম) كُنْ ‘হও’ হতে সৃষ্টি <<<
إِنَّ مَثَلَ عِيسَى عِنْدَ اللَّهِ كَمَثَلِ آدَمَ خَلَقَهُ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ قَالَ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আদমের অনুরূপ; তাকে (আদমকে) তিনি সৃষ্টি করেছিলেন মাটি হতে তারপর তাকে তিনি বলেছিলেন, ‘হও’, তখনই সে হয়ে গেল। আলে‘ইমরান, ৩/৫৯
>>> আদম আলাইহিস সালাম হতে সকল মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে <<<
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالا كَثِيرًا وَنِسَاءً وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ وَالأرْحَامَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا
হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন আর তার থেকে তার সঙ্গিণীকে সৃষ্টি করেছেন; এবং তাদের দুজন থেকে বিস্তার করেছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর দোহাই দিয়ে তোমরা একে অপরের নিকট দাবী করে থাক এবং আত্নীয়তার সম্পর্কের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর দৃষ্টিবান রয়েছেন। আন্-নিসা, ৪/১
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَجَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا لِيَسْكُنَ إِلَيْهَا فَلَمَّا تَغَشَّاهَا حَمَلَتْ حَمْلا خَفِيفًا فَمَرَّتْ بِهِ فَلَمَّا أَثْقَلَتْ دَعَوَا اللَّهَ رَبَّهُمَا لَئِنْ آتَيْتَنَا صَالِحًا لَنَكُونَنَّ مِنَ الشَّاكِرِينَ
তিনিই সেই আল্লাহ, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন আর তার থেকে তার সঙ্গিণীকে বানিয়েছেন যেন তার নিকট থেকে স্বস্তি পেতে পারে অতঃপর যখন সে তার সঙ্গিণীর সাথে মিলিত হল তখন সে অতি হালকা গর্ভ ধারণ করল এবং তা নিয়ে চলাফেরা করতে থাকল; তারপর যখন ভারী হয়ে গেল, তখন উভয়ে তাদের রব আল্লাহকে ডাকল, যদি আপনি আমাদেরকে সুসন্তান দান করেন তবে আমরা আপনার শুকরিয়া আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হব। আল-আ‘রাফ, ৭/১৮৯
خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ ثُمَّ جَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَأَنْزَلَ لَكُمْ مِنَ الأنْعَامِ ثَمَانِيَةَ أَزْوَاجٍ يَخْلُقُكُمْ فِي بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ خَلْقًا مِنْ بَعْدِ خَلْقٍ فِي ظُلُمَاتٍ ثَلاثٍ ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ لا إِلَهَ إِلا هُوَ فَأَنَّى تُصْرَفُونَ
তিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তার থেকে তার সঙ্গিণীকে বানিয়েছেন, এবং তিনি তোমাদের জন্যে অবতীর্ণ করেছেন আট জোড়া চতুষ্পদ জন্তু; তিনি তোমাদেরকে তোমাদের মাতৃগর্ভে সৃষ্টি করেছেন এক সৃষ্টির পর আরেক সৃষ্টির মধ্য্ দিয়ে, ত্রিবিধ অন্ধকারে। তিনি আল্লাহ, তোমাদের রব, রাজত্ব তাঁরই; তিনি ব্যতীত কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তারপরও তোমাদেরকে কোথায় ফিরানো হচ্ছে? আয-যুমার, ৩৯/৬
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَكُمْ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ إِذَا أَنْتُمْ بَشَرٌ تَنْتَشِرُونَ وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُمْ مَوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, তারপর এখন তোমরা মানুষ হয়ে ছড়িয়ে পড়েছ। আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের নিজেদের মধ্য হতে সঙ্গিণীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা তাদের থেকে প্রশান্তি পাও এবং তিনি তোমাদের মাঝে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন, নিশ্চয়ই এসব নিদর্শনাবলী সেসব লোকদের জন্য যারা চিন্তা ভাবনা করে। আর-রূম, ৩০/২০-২১
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ
হে মানুষ! নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যেন তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই অধিক সম্মানিত যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়াসম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। আল-হুজুরাত, ৪৯/১৩
وَهُوَ الَّذِي أَنْشَأَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ فَمُسْتَقَرٌّ وَمُسْتَوْدَعٌ قَدْ فَصَّلْنَا الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَفْقَهُونَ
তিনিই সেই আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর একটি হচ্ছে স্থায়ী আবাসস্থান ও একটি হচ্ছে গচ্ছিত রাখারস্থান; নিশ্চয় আমি আয়াতগুলোকে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছি চিন্তাশীল কওমদের জন্যে । আন্-আম, ৬/৯৮
>>> দ্বিতীয় ধাপ, মানুষকে বীর্য থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে <<<
فَلْيَنْظُرِ الإنْسَانُ مِمَّ خُلِقَ خُلِقَ مِنْ مَاءٍ دَافِقٍ يَخْرُجُ مِنْ بَيْنِ الصُّلْبِ وَالتَّرَائِبِ
সুতরাং মানুষের লক্ষ্য করা উচিত কী বস্তু থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে; তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে প্রবল বেগে নিঃসৃত পানি হতে; যা বের হয় মেরুদন্ড ও বুকের হাড়ের মধ্য হতে। আত-তারিক্ব, ৮৬/৫-৭
وَأَنَّهُ خَلَقَ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالأنْثَى مِنْ نُطْفَةٍ إِذَا تُمْنَى وَأَنَّ عَلَيْهِ النَّشْأَةَ الأخْرَى
আর তিনিই জোড়ায় জোড়ায় পুরুষ ও নারী সৃষ্টি করেছেন বীর্য থেকে, যখন তা নিক্ষিপ্ত হয়; আর পুনরায় জীবিত করার দায়িত্বও তাঁরই। আন্-নাজ্ম, ৫৩/৪৫-৪৭
أَلَمْ نَخْلُقْكُمْ مِنْ مَاءٍ مَهِينٍ فَجَعَلْنَاهُ فِي قَرَارٍ مَكِينٍ إِلَى قَدَرٍ مَعْلُومٍ فَقَدَرْنَا فَنِعْمَ الْقَادِرُونَ
আমি কি তোমাদেরকে সৃষ্টি করিনি তুচ্ছ পানি থেকে? অতঃপর আমি তা রেখেছি এক সংরক্ষিত স্থানে, এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত, অতঃপর আমি একে গঠন করেছি পরিমিতভাবে, অতএব আমি কত উত্তম ক্ষমতার অধিকারী? আল-মুরসালাত, ৭৭/২০-২৩
إِنَّا خَلَقْنَا الإنْسَانَ مِنْ نُطْفَةٍ أَمْشَاجٍ نَبْتَلِيهِ فَجَعَلْنَاهُ سَمِيعًا بَصِيرًا
আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্রিত শুক্রবিন্দু থেকে; আমি তাকে পরীক্ষা করব অতঃপর আমি তাকে শ্রবণশক্তিসম্পন্ন ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন করেছি। আল-ইনসান, ৭৬/২
وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ مِنَ الْمَاءِ بَشَرًا فَجَعَلَهُ نَسَبًا وَصِهْرًا وَكَانَ رَبُّكَ قَدِيرًا
এবং তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষকে পানি থেকে অতঃপর তাকে বংশগত ও বৈবাহিক সম্পর্কযুক্ত করেছেন আর তোমার রব সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল-ফুরক্বান, ২৫/৫৪
أَوَلَمْ يَرَ الإنْسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِنْ نُطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُبِينٌ
মানুষ কি দেখে না, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি বীর্য থেকে? অথচ এখন সে সুস্পষ্ট ঝগড়াটে হয়ে গেছে। ইয়া-সীন, ৩৬/৭৭
خَلَقَ الإنْسَانَ مِنْ نُطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُبِينٌ
তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন বীর্য থেকে অথচ এখন সে সুস্পষ্ট ঝগড়াটে হয়ে গেছে। আন্-নাহ্ল, ১৬/৪
نَحْنُ خَلَقْنَاكُمْ فَلَوْلا تُصَدِّقُونَ أَفَرَأَيْتُمْ مَا تُمْنُونَ أَأَنْتُمْ تَخْلُقُونَهُ أَمْ نَحْنُ الْخَالِقُونَ نَحْنُ قَدَّرْنَا بَيْنَكُمُ الْمَوْتَ وَمَا نَحْنُ بِمَسْبُوقِينَ عَلَى أَنْ نُبَدِّلَ أَمْثَالَكُمْ وَنُنْشِئَكُمْ فِي مَا لا تَعْلَمُونَ وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ النَّشْأَةَ الأولَى فَلَوْلا تَذَكَّرُونَ
আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি তবুও কেন তোমরা সত্যতা স্বীকার কর না। তবে কি তোমরা ভেবে দেখেছ তোমরা যে বীর্যপাত কর সে সম্পর্কে? ওটা তোমরা সৃষ্টি কর, নাকি আমি সৃষ্টি করি? আমি তোমাদের মৃত্যু নির্ধারিত করেছি আর আমি অক্ষম নই যে, আমি তোমাদের আকৃতি পরিবর্তন করব এবং তোমাদেরকে সৃষ্টি করব এমন আকৃতিতে যা তোমরা জান না। এবং তোমরা নিশ্চতভাবে প্রথমবার সৃষ্টি সম্পর্কে জেনেছ, তাহলে কেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর না? আল- ওয়াকি’আ, ৫৬/৫৭-৬২
>>> আল-কুরআনে পূর্ণাঙ্গ মানুষ সৃষ্টি ও তার জীবন চক্র <<<
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الإنْسَانَ مِنْ سُلالَةٍ مِنْ طِينٍ ثُمَّ جَعَلْنَاهُ نُطْفَةً فِي قَرَارٍ مَكِينٍ ثُمَّ خَلَقْنَا النُّطْفَةَ عَلَقَةً فَخَلَقْنَا الْعَلَقَةَ مُضْغَةً فَخَلَقْنَا الْمُضْغَةَ عِظَامًا فَكَسَوْنَا الْعِظَامَ لَحْمًا ثُمَّ أَنْشَأْنَاهُ خَلْقًا آخَرَ فَتَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ ثُمَّ إِنَّكُمْ بَعْدَ ذَلِكَ لَمَيِّتُونَ ثُمَّ إِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تُبْعَثُونَ
আর অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি কাদামাটির নির্যাস থেকে; অতঃপর আমি তাকে রেখেছি শুক্রবিন্দুরূপে এক সংরক্ষিত আধারের মধ্যে; এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে জমাটবাঁধা রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাটবাঁধা রক্তকে মাংসপিন্ড বানিয়েছি, এরপর সেই মাংসপিন্ডকে অস্থিতে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি, তারপর তাকে অন্য এক সৃষ্টিরূপে দাঁড় করিয়েছি, তাই আল্লাহ কতই না বরকতময়, যিনি কারিগরদের মধ্যে সর্বোত্তম কারিগর। এরপর অবশ্যই তোমরা মৃত্যুবরণ করবে। তারপর নিশ্চয়ই তোমাদেরকে কেয়ামতের দিনে পুনরুত্থিত করা হবে। আল-মু’মিনুন, ২৩/১২-১৬
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنْ كُنْتُمْ فِي رَيْبٍ مِنَ الْبَعْثِ فَإِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِنْ مُضْغَةٍ مُخَلَّقَةٍ وَغَيْرِ مُخَلَّقَةٍ لِنُبَيِّنَ لَكُمْ وَنُقِرُّ فِي الأرْحَامِ مَا نَشَاءُ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى ثُمَّ نُخْرِجُكُمْ طِفْلا ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ وَمِنْكُمْ مَنْ يُتَوَفَّى وَمِنْكُمْ مَنْ يُرَدُّ إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ لِكَيْلا يَعْلَمَ مِنْ بَعْدِ عِلْمٍ شَيْئًا
হে মানুষেরা! যদি তোমরা পুনরায় জীবিত হওয়া সম্পর্কে সন্দেহের মধ্যে থাক, তবে নিশ্চিয় আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি মাটি থেকে, এরপর শুক্রবিন্দু থেকে, এরপর জমাটবাঁধা রক্তপিন্ড থেকে, এরপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট ও অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট মাংসপিন্ড থেকে, যেন আমি সুস্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে ব্যক্ত করি, আর জরায়ুসমূহের মধ্যে অবস্থিত রাখি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আমি যেভাবে ইচ্ছা চাই, এরপর আমি তোমাদেরকে শিশুরূপে বের করে আনি, এরপর যেন তোমরা যৌবনে পৌঁছে যাও (তার ব্যবস্থা করি), আর তোমাদের মধ্য হতে কাউকে কাউকে পূর্বাহ্নেই মৃত্যু দেয়া হয় আবার তোমাদের মধ্যে হতে কাউকে হীনতম বয়সে ফিরিয়ে নেয়া হয়, যেন জ্ঞান লাভের পরও কোনকিছুই তার জানা থাকে না। আল-হাজ্জ, ২২/৫
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ يُخْرِجُكُمْ طِفْلا ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُونُوا شُيُوخًا وَمِنْكُمْ مَنْ يُتَوَفَّى مِنْ قَبْلُ وَلِتَبْلُغُوا أَجَلا مُسَمًّى وَلَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ هُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ فَإِذَا قَضَى أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ
তিনি (আল্লাহ) যিনি তোমাদেরকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন, এরপর শুক্রবিন্দু হতে, এরপর জমাটবাঁধা রক্তপিন্ড হতে, এরপর তোমাদের বের করে আনেন শিশুরূপে, এরপর (বৃদ্ধি দেন) যেন তোমরা যৌবনে উপনীত হও, এরপর (বৃদ্ধি দেন) যেন তোমরা বৃদ্ধ হও, এবং তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ পূর্বেই মৃত্যুবরণ করে আবার কেউ কেউ নির্দিষ্ট একটি মেয়াদে উপনীত হও এবং তোমরা যাতে অনুধাবন কর। তিনিই (আল্লাহ) যিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন, অতঃপর যখন তিনি কোন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন, তখন শুধু বলেন, ‘হও’ তৎক্ষণাৎ হয়ে যায়। আল-মু‘মিন, ৪০/৬৭-৬৮
أَيَحْسَبُ الإنْسَانُ أَنْ يُتْرَكَ سُدًى أَلَمْ يَكُ نُطْفَةً مِنْ مَنِيٍّ يُمْنَى ثُمَّ كَانَ عَلَقَةً فَخَلَقَ فَسَوَّى فَجَعَلَ مِنْهُ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالأنْثَى أَلَيْسَ ذَلِكَ بِقَادِرٍ عَلَى أَنْ يُحْيِيَ الْمَوْتَى
মানুষ কি মনে করে নিয়েছে যে, তাকে এমনিতেই ছেড়ে দেয়া হবে? সে কি শুক্রবিন্দু ছিল না যে শুক্রবিন্দু (মায়ের গর্ভে) নিক্ষেপ করা হয়? এরপর সে ছিল জমাটবাঁধা রক্তপিন্ড, এরপর তিনি সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করলেন, তারপর সুঠাম করলেন। তারপর তা থেকে বানালেন পুরুষ ও নারীর জোড়া; এরপরও তিনি মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম নন কি? আল-ক্বিয়া-মাহ, ৭৫/৩৬-৪০
خَلَقَ الإنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ
তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাটবাঁধা রক্তপিন্ড থেকে। আল-আলাক্ক, ৯৬/২
وَاللَّهُ خَلَقَكُمْ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ ثُمَّ جَعَلَكُمْ أَزْوَاجًا وَمَا تَحْمِلُ مِنْ أُنْثَى وَلا تَضَعُ إِلا بِعِلْمِهِ وَمَا يُعَمَّرُ مِنْ مُعَمَّرٍ وَلا يُنْقَصُ مِنْ عُمُرِهِ إِلا فِي كِتَابٍ إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ
আর আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, এরপর শুক্রবিন্দু থেকে, এরপর তোমাদেরকে বানিয়েছেন জোড়া জোড়া, আর না কোন নারী গর্ভধারণ করে, আর না কোন নারী প্রসব করে তাঁর জ্ঞান ব্যতীত আর না কোন বয়স্কব্যক্তি আয়ু লাভ করে, আর না তার বয়স হ্রাস পায়; একটি কিতাবের (লাওহে মাহফুযের) লিখন ছাড়া, নিশ্চয় এটা আল্লাহর জন্যে খুবই সহজ। ফাত্বির, ৩৫/১১
قُتِلَ الإنْسَانُ مَا أَكْفَرَهُ مِنْ أَيِّ شَيْءٍ خَلَقَهُ مِنْ نُطْفَةٍ خَلَقَهُ فَقَدَّرَهُ ثُمَّ السَّبِيلَ يَسَّرَهُ ثُمَّ أَمَاتَهُ فَأَقْبَرَهُ ثُمَّ إِذَا شَاءَ أَنْشَرَهُ
মানুষ ধ্বংস হোক, সে কতই না অকৃতজ্ঞ! কোন্ জিনিস হতে তিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন? শুক্রবিন্দু হতে তাকে তিনি সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তার তাকদীর নির্ধারণ করেছেন। এরপর তার পথ সহজ করেছেন, এরপর তার মৃত্যু দেন অতঃপর তাকে কবরস্থ করেন। এরপর যখন তিনি চাইবেন তখন তাকে পুনরায় জীবন দান করবেন। ‘আবাসা, ৮০/১৭-২২
==== বিষয়ঃ কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে যৌনকর্ম ====
>>> লজ্জাস্থানের হেফাযত করা <<<
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلاتِهِمْ خَاشِعُونَ وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ إِلا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ فَمَنِ ابْتَغَى وَرَاءَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ
নিশ্চয় মুমিনগণ সফলকাম হয়েছে; যারা নিজেদের সালাতে বিনয়াবনত; আর যারা অনর্থক কথা-বার্তা থেকে বিরত থাকে; আর যারা তাদের যাকাতের ক্ষেত্রে সক্রিয়; এবং যারা নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাযত রাখে; তবে তাদের স্ত্রীদের ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ছাড়া, নিশ্চয় এতে তারা নিন্দিত হবে না; অতঃপর কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারাই সীমালংঘনকারী হবে। আল-মু’মিনুন, ২৩/১-৭
وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ إِلا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ فَمَنِ ابْتَغَى وَرَاءَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ
আর যারা তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে তবে তাদের স্ত্রীদের ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ছাড়া, নিশ্চয় এতে তারা নিন্দিত হবে না; অতঃপর কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারাই সীমালংঘনকারী হবে। আল-মা‘আরিজ, ৭০/২৯-৩১
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ
আপনি মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে; এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্রতা; নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। আন-নূর, ২৪/৩০
وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ
আপনি মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে; আর যা সাধারণভাবে প্রকাশ পায় তাছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আন-নূর, ২৪/৩১
فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ
নেক স্ত্রীরা হয় অনুগতা আর আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আন-নিসা, ৪/৩৪
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الْجَنَّةَ
যে ব্যক্তি আমার (সন্তুষ্টির) জন্য তার দু’চোয়ালের মধ্যবর্তী স্থানের (অর্থাৎ জিহবার) ও দু’পা-এর মধ্যবর্তী স্থানের (অর্থাৎ লজ্জাস্থানের) হেফাযতের দায়িত্ব নিবে আমি তার জন্যে জান্নাতের যিম্মাদার হবো। সহীহুল বুখারী: ৬৪৭৪, ৬৮০৭
>>> পোশাকের বিধান <<<
يَا بَنِي آدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآتِكُمْ وَرِيشًا وَلِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ ذَلِكَ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ
হে আদম সন্তান, আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করবে আর যা সৌন্দর্য্স্বরূপ এবং তাকওয়ার পোশাক (মানে আল্লাহকে ভয় করা), এটি সর্বোত্তম; এটি আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্যতম, হয়ত তারা চিন্তা-ভাবনা করবে। আল-আ‘রাফ, ৭/২৬
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لأزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا
হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়, এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না; আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। আল-আহযাব, ৩৩/৫৯
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الأولَى
আর তোমরা নিজ গৃহের মধ্যে অবস্থান কর, প্রাচীন অজ্ঞ্যুগের ন্যায় নিজেদেরকে প্রদর্শন কর না। আল-আহযাব, ৩৩/৩৩
>>> অবৈধ যৌনকর্ম থেকে বিরত থাকা <<<
وَلا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلا
আর তোমরা যিনার (অবৈধ যৌনকর্মের) কাছেও যেয়ো না, নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট পথ। আল-ইস্রা, ১৭/৩২
وَلا يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا
আর যারা ব্যভিচার (অবৈধ যৌনকর্ম) করে না, আর যে এ কাজ করবে সে শাস্তি ভোগ করবে। আল-ফুরক্বান, ২৫/৬৮
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
لاَ يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهْوَ مُؤْمِنٌ
কোন ব্যভিচারী ব্যভিচার করার সময় মুমিন থাকে না। সহীহুল বুখারী: ৬৭৭২
>>> অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকা <<<
قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالإثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَنْ تُشْرِكُوا بِاللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَأَنْ تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ مَا لا تَعْلَمُونَ
আপনি বলে দিন, অবশ্যই আমার রব হারাম করেছেন অশ্লীল কাজসমূহকে যা প্রকাশ পায় আর যা গোপন থাকে, এবং হারাম করেছেন পাপ, অসংগতভাবে সীমালঙ্ঘন করা; এবং আল্লাহর সাথে কোন কিছু অংশীদার করা, যার সম্পর্কে তিনি কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর প্রতি এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না। আল-আ‘রাফ, ৭/৩৩
إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَنْ تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ
যারা পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে দুনিয়া ও পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি; আর আল্লাহ জানেন তোমরা জান না। আন-নূর, ২৪/১৯
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ وَمَنْ يَتَّبِعْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ فَإِنَّهُ يَأْمُرُ بِالْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ
হে মুমিনগণ, শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না আর যে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তখন সে (শয়তান) নির্লজ্জতার ও মন্দ কাজের আদেশ করবে। আন-নূর, ২৪/২১
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ حَظَّهُ مِنَ الزِّنَا، أَدْرَكَ ذَلِكَ لاَ مَحَالَةَ، فَزِنَا الْعَيْنِ النَّظَرُ، وَزِنَا اللِّسَانِ الْمَنْطِقُ، وَالنَّفْسُ تَمَنَّى وَتَشْتَهِي، وَالْفَرْجُ يُصَدِّقُ ذَلِكَ، وَيُكَذِّبُهُ
আদম সন্তানের উপর যিনার যে অংশ লিপিবদ্ধ আছে তা অবশ্যই সে প্রাপ্ত হবে। দু-চোখের যিনা হল দৃষ্টিপাত করা, দু-কানের যিনা হল শ্রবণ করা, জিহবার যিনা হল কথোপকথন করা, হাতের যিনা হল স্পর্শ করা, পায়ের যিনা হল হেঁটে যাওয়া, অন্তরের যিনা হল আকাংখা ও কামনা করা আর গুপ্তাঙ্গ তা বাস্তবায়িত করে অথবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। সহীহুল বুখারী: ৬২৪৩, ৬৬১২, সহীহ মুসলিম: ৬৬৪৬, ৬৬৪৭
>>> ফেসবুক, you tube ইত্যাদি দ্বারা পাপ কাজ না করা <<<
إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولا
নিশ্চয়ই কর্ণ, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। আল-ইস্রা, ১৭/৩৬
يَعْلَمُ خَائِنَةَ الأعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ
চোক্ষুসমূহের খেয়ানত আর অন্তরসমূহ যা গোপন রাখে তিনি (আল্লাহ) তা জানেন। আল-মুমিন, ৪০/১৯
الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
আজ (বিচারের দিনে) আমি তাদের মুখে মোহর মেরে দেব, তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে। ইয়া-সীন, ৩৬/৬৫
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الإنْسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
আর অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার অন্তর তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয় সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি; আর আমি তার ঘাড়ের শিরার চেয়েও অধিক নিকটবর্তী (জ্ঞানের দিক থেকে)। যখন দু’জন গ্রহণকারী (ফেরেশতা) ডানে ও বামে বসে তাদের কর্ম্ লিপিবদ্ধ করছে। যে কথাই উচ্চারণ করে, তা লিপিবদ্ধ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত সংরক্ষণকারী রয়েছে। ক্বাফ, ৫০/১৬-১৮
>>> সমকামিতা থেকে বিরত থাকা <<<
إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِنْ دُونِ النِّسَاءِ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُسْرِفُونَ
অবশ্যই তোমরা (পুরুষেরা) পুরুষদের কাছে যৌন ইচ্ছা পূর্ণ করছো নারীদেরকে বাদ দিয়ে বরং তোমরা সীমালংনকারী সম্প্রদায়। আল-আ‘রাফ, ৭/৮১
أَتَأْتُونَ الذُّكْرَانَ مِنَ الْعَالَمِينَ وَتَذَرُونَ مَا خَلَقَ لَكُمْ رَبُّكُمْ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ عَادُونَ
দুনিয়ার সৃষ্টির মধ্যে তোমরাই কি পুরুষদের কাছে যৌন ইচ্ছা পূর্ণ করছো আর তোমাদের রব তোমাদের জন্যে যে স্ত্রীদেরকে সৃষ্টি করেছেন তোমরা তা বর্জন করছ বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়। আশ্-শু‘আরা, ২৬/১৬৫-১৬৬
>>> অশ্লীলতা, ব্যভিচার ব্যাপকতা লাভ করবে <<<
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يُرْفَعَ الْعِلْمُ، وَيَكْثُرَ الْجَهْلُ وَيَكْثُرَ الزِّنَا، وَيَكْثُرَ شُرْبُ الْخَمْرِ، وَيَقِلَّ الرِّجَالُ، وَيَكْثُرَ النِّسَاءُ حَتَّى يَكُونَ لِخَمْسِينَ امْرَأَةً الْقَيِّمُ الْوَاحِدُ
কিয়ামতের আলামতের মধ্যে রয়েছে; ইলম উঠে যাবে, অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে, মদ্য পানের মাত্রা বেড়ে যাবে, পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে এবং নারীদের সংখ্যা এত অধিক হারে বেড়ে যাবে যে, একজন পুরুষকে পঞ্চাশজন নারীর দেখাশুনা করতে হবে। সহীহুল বুখারী: ৮০, ৫২৩১, ৬৮০৮, সহিহ মুসলিম: ৬৬৭৯
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
لَيَكُونَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّونَ الْحِرَ وَالْحَرِيرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ
অবশ্যই আমার উম্মতের কতক লোক ব্যভিচার, রেশমী কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে। সহীহুল বুখারী: ৫৫৯০
>>> বিবাহ করা <<<
وَأَنْكِحُوا الأيَامَى مِنْكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ إِنْ يَكُونُوا فُقَرَاءَ يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিতদের তোমরা বিবাহ দাও আর তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীল তাদেরও; যদি তারা অভাবগ্রস্ত হয় তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন; এবং আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। আন-নূর, ২৪/৩২
فَانْكِحُوهُنَّ بِإِذْنِ أَهْلِهِنَّ وَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ مُحْصَنَاتٍ غَيْرَ مُسَافِحَاتٍ وَلا مُتَّخِذَاتِ أَخْدَانٍ
অতএব, তাদেরকে তাদের অভিভাবকের অনুমতিক্রমে বিয়ে কর আর নিয়ম অনুযায়ী মোহরানা দাও, যারা হবে সতী-সাধ্বী, তবে অবৈধ যৌনকর্মকারী ও গুপ্ত প্রেমিকা গ্রহণকারী ব্যতীত। আন-নিসা, ৪/২৫
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ، فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ
হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহের দায়িত্ব পালন করার যোগ্যতা রাখে, তাদের উচিত বিবাহ করা। কেননা বিবাহ দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাযত রাখে। আর যে বিবাহের দায়িত্ব পালন করার যোগ্যতা না রাখে, তার উচিত সিয়াম পালন করা। সহীহুল বুখারী: ৫০৬৫, ৫০৬৬, ও সহীহ মুসলিম: ৩২৮৯, ৩২৯১
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لأَرْبَعٍ لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ
চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদের বিয়ে করা হয়; তার সম্পদের কারণে, তার বংশ মর্যাদার কারণে, তার রূপের কারণে আর তার দীনদারীর কারণে। তোমরা দীনদার নারী পেয়ে ভাগ্যবান হও! সহীহ মুসলিম: ৩৫২৭
>>> বিবাহ নবীগণের সুন্নাত <<<
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلا مِنْ قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجًا وَذُرِّيَّةً
অবশ্যই আমি আপনার পূর্বেও অনেক রাসূল প্রেরণ করেছিলাম এবং তাঁদেরকে অনেক স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দিয়েছিলাম। আর-রাদ, ১৩/৩৮
>>> বৈধ যৌনকর্ম করা <<<
فَالآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ
অতএব তোমরা তাদের (তোমাদের স্ত্রীদের) সাথে সহবাস কর (যৌনকর্ম্ কর) আর যা কিছু আল্লাহ লিখে দিয়েছেন তোমাদের জন্য তা (সন্তান) সন্ধান কর। আল-বাকারাহ, ২/১৮৭
فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
অতঃপর যখন তারা পবিত্র হয়, তখন তাদের নিকট গমন কর (যৌনকর্ম্ কর) যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদেরকে আর পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকে ভালবাসেন। আল-বাকারাহ, ২/২২২
نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র; তাই তোমরা শস্যক্ষেত্রে গমন কর যেভাবে চাও। আল-বাকারাহ, ২/২২৩
هُنَّ لِبَاسٌ لَكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَهُنَّ
তারা (তোমাদের স্ত্রীরা) তোমাদের জন্যে পোশাক আর তোমরা তাদের জন্যে পোশাক। আল-বাকারাহ, ২/১৮৭
>>> নিজ স্ত্রীর সাথে সহবাস করাও হচ্ছে সদাকাহ <<<
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
صَدَقَةٌ وَفِي بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَأْتِي أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ قَالَ " أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِي حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ فَكَذَلِكَ إِذَا وَضَعَهَا فِي الْحَلاَلِ كَانَ لَهُ أَجْرٌ " .
তোমাদের প্রত্যেকে নিজ স্ত্রীর সাথে সহবাস করাও হচ্ছে সদকাহ্। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কেউ যদি স্ত্রী সংগম করে এতেও কি সে সাওয়াব পাবে? তিনি বললেন, তোমরা কী মনে কর যদি সে কামাচার করে হারাম পথে তাতে কি তার পাপ হবে না? অনুরূপভাবে যদি সে কামাচার করে হালাল পথে তবে সে সাওয়াব পাবে। সহীহ মুসলিম: ২২১৯
>>> বিবাহে শান্তি ও কল্যাণ আনে <<<
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُمْ مَوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
আর তার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের নিজেদের মধ্য হতে সঙ্গিণীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা তাদের থেকে প্রশান্তি পাও এবং তিনি তোমাদের মাঝে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন, নিশ্চয়ই এসব নিদর্শনাবলী সেসব লোকদের জন্য যারা চিন্তা ভাবনা করে। আর-রূম, ৩০/২১
وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ فَإِنْ كَرِهْتُمُوهُنَّ فَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا
আর তাদের (নারীদের) সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর; অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ যাতে আল্লাহ অনেক কল্যাণ রেখেছেন। আন-নিসা, ৪/১৯
>>> একাধিক বিবাহ করা <<<
وَإِنْ خِفْتُمْ أَلا تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامَى فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ مَثْنَى وَثُلاثَ وَرُبَاعَ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلا تَعْدِلُوا فَوَاحِدَةً أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ذَلِكَ أَدْنَى أَلا تَعُولُوا
আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, এতীমদের প্রতি তোমরা সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিয়ে কর নারীদের মধ্যে হতে যাকে তোমাদের ভাল লাগে; দুই, বা তিন, কিংবা চারটি; আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে সমান আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে একটি; অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে, এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা। আন-নিসা, ৪/৩
>>> পরিবারের দায়িত্ব পালন করা <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ
হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর। আত-তাহরীম, ৬৬/৬
قُلْ إِنَّ الْخَاسِرِينَ الَّذِينَ خَسِرُوا أَنْفُسَهُمْ وَأَهْلِيهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَلا ذَلِكَ هُوَ الْخُسْرَانُ الْمُبِينُ
তুমি বল, নিশ্চয় তারাই হবে ক্ষতিগ্রস্ত, যারা কেয়ামতের দিন নিজেদেরকে ও তাদের পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে; জেনে রাখ এটা হল সুস্পষ্ট ক্ষতি। আয-যুমার, ৩৯/১৫
>>> সন্তান হত্যা মহাপাপ <<<
وَلا تَقْتُلُوا أَوْلادَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ إِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْئًا كَبِيرًا
তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না দারিদ্রের ভয়ে, আমিই তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আহার দিয়ে থাকি, নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ। আল-ইস্রা, ১৭/৩১
وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ بِأَيِّ ذَنْبٍ قُتِلَتْ
আর যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কী অপরাধে তাকে হত্য করা হয়েছে? আত-তাকভীর, ৮১/৮-৯
>>> নেককার সঙ্গী ও সন্তানের জন্যে দোআ <<<
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
রাব্বানা- হাব্লানা- মিন্ আয্ওয়া-যিনা- ওয়া যুর্রিইয়া-তিনা- ক্বুর্রাতা আ‘ইউনিও ওয়াজ্'আল্না- লিল্মুত্তাক্বি-না ইমা-মা-
হে আমাদের রব! আমাদের জন্যে আমাদের জুড়িদেরকে ও আমাদের সন্তানদিকে চক্ষু শীতলকারী করুন, এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে নেতা বানিয়ে দিন। আল-ফুরক্বান, ২৫/৭৪
=== বিষয়ঃ কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে কথা বলার আদব-কায়দা ===
মন্দ কথা অনিষ্ট ডেকে আনে। মন্দ কথার ফলে মানুষের মনে কষ্ট, ঘৃণা, বিদ্বেষ, শত্রুতা এবং হানাহানি সৃষ্টি হয়। ফলে পরিবার, সমাজ ও দেশে অশান্তি, অস্থিরতা এবং বিশৃংখলা সৃষ্টি করে। তাই মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল মানুষকে মন্দ কথা থেকে বিরত হয়ে উত্তম, নম্র কথার মাধ্যমে মানুষকে উপদেশ দিতে বলেছেন।
>>> ফেরেশতা কর্ম লিপিবদ্ধ করছেন তাই প্রত্যেকের সাবধান হওয়া উচিত <<<
مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে, তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার কাছে সদা প্রস্তুত সংরক্ষণকারী রয়েছে। ক্বাফ, ৫০/১৮
>>> উত্তমভাবে কথা বলতে হবে <<<
ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
তুমি তোমার রবের পথের দিকে হিকমত ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর এবং সর্বোত্তম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর; নিশ্চয় তোমার রব খুব ভালভাবেই জানেন কে তার পথ ছেড়ে গুমরাহ হয়ে গেছে এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদেরকে তিনি খুব ভাল করেই জানেন। আন্-নাহ্ল, ১৬/১২৫
قَوْلٌ مَعْرُوفٌ وَمَغْفِرَةٌ خَيْرٌ مِنْ صَدَقَةٍ يَتْبَعُهَا أَذًى وَاللَّهُ غَنِيٌّ حَلِيمٌ
ভাল কথা ও ক্ষমা উত্তম, যে দানের পর কষ্ট দেয়া হয় তার চেয়ে আর আল্লাহ মহা সম্পদশালী, পরম সহিঞ্চু। আল-বাক্বারাহ, ২/২৬৩
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ
যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাস করে, সে যেন ভাল কথা বলে, নতুবা চুপ থাকে। সহীহুল বুখারী: ৬০১৮, সহীহ মুসলিম: ৪৪০৫
وَالْكَلِمَةُ الطَّيِّبَةُ صَدَقَةٌ، وَبِكُلِّ خُطْوَةٍ تَمْشِيهَا إلَى الصَّلَاةِ صَدَقَةٌ، وَتُمِيطُ الْأَذَى عَنْ الطَّرِيقِ صَدَقَةٌ
ভাল কথা হচ্ছে সাদকাহ্, স্বলাতের জন্য প্রত্যেক পদক্ষেপ হচ্ছে সাদকাহ্ এবং কষ্টদায়ক জিনিস রাস্তা থেকে সরানো হচ্ছে সাদকাহ্। সহীহুল বুখারী: ২৯৮৯, সহীহ মুসলিম: ২২২৫
>>> কোন ব্যক্তিকে গালি দেয়া উচিত নয় <<<
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
سِبَابُ المُسْلمِ فُسُوْقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ
কোন মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিকী (গুনাহের) কাজ এবং তার সাথে লড়াই করা কুফরী। সহীহুল বুখারী: ৪৮, ৬০৪৪, ৭০৭৬, সহীহ মুসলিম: ১২৪
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لاَ يَرْمِي رَجُلٌ رَجُلاً بِالْفُسُوقِ، وَلاَ يَرْمِيهِ بِالْكُفْرِ، إِلاَّ ارْتَدَّتْ عَلَيْهِ، إِنْ لَمْ يَكُنْ صَاحِبُهُ كَذَلِكَ
কোন ব্যক্তি যেন অপর ব্যক্তিকে ফাসিক বলে গালি না দেয় এবং কোন ব্যক্তি যেন আরেক ব্যক্তিকে কাফির বলে অপবাদ না দেয়। কেননা, যদি সে তা না হয়ে থাকে, তবে তা তার উপরই পতিত হবে। সহীহুল বুখারী: ৬০৪৫
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا نَهَى اللَّهُ عَنْهُ
প্রকৃত মুসলিম সেই ব্যক্তি, যার যবান (কথা) ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে। সহীহুল বুখারী: ৬৪৮৪
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الْجَنَّةَ
যে ব্যক্তি আমার (সন্তুষ্টির) জন্য তার দু’চোয়ালের মধ্যবর্তী স্থানের (অর্থাৎ জিহবার) ও দু’পা-এর মধ্যবর্তী স্থানের (অর্থাৎ লজ্জাস্থানের) হেফাযতের দায়িত্ব নিবে আমি তার জন্যে জান্নাতের যিম্মাদার হবো। সহীহুল বুখারী: ৬৪৭৪, ৬৮০৭
আনাস ইবনে মালিক থেকে বর্ণিত,
لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَبَّابًا وَلاَ فَحَّاشًا وَلاَ لَعَّانًا، كَانَ يَقُولُ لأَحَدِنَا عِنْدَ الْمَعْتَبَةِ " مَا لَهُ، تَرِبَ جَبِينُهُ ".
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গালি-গালাজকারী, অশালীন ও অভিশাপদাতা ছিলেন না। তিনি আমাদের কারো উপর নারাজ হলে, কেবল এতটুকু বলতেন, তার কি হলো? তার কপাল ধুলাময় হোক। সহীহুল বুখারী: ৬০৩১, ৬০৪৬
>>> কোন ব্যক্তিকে অভিশাপ দেওয়া উচিত নয় <<<
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
وَمَنْ لَعَنَ مُؤْمِنًا فَهْوَ كَقَتْلِهِ، وَمَنْ قَذَفَ مُؤْمِنًا بِكُفْرٍ فَهْوَ كَقَتْلِهِ
কোন ব্যক্তি অন্য মু‘মিনের উপর অভিশাপ দিলে, তা তাকে হত্যা করার শামিল হবে আর কোন মুমিনকে কাফির বলে অপবাদ দিলে, তাও তাকে হত্যা করার শামিল হবে। সহীহুল বুখারী: ৬০৪৭
>>> কোন পুরুষ বা নারীকে ঠাট্রা-বিদ্রূপ, উপহাস করা উচিত নয় <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا يَسْخَرْ قَومٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ
হে মুমিনগণ! কোন পুরুষ যেন অপর কোন পুরুষকে ঠাট্রা-বিদ্রূপ না করে; হতে পারে যাদের বিদ্রূপ করা হচ্ছে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম, আর কোন নারী যেন অন্য নারীকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ না করে হতে পারে যাদের বিদ্রূপ করা হচ্ছে তারা বিদ্রূপকারিণীদের চেয়ে উত্তম। আল-হুজুরাত, ৪৯/১১
>>> অপরের নিন্দা বা দোষারোপ না করা এবং বিকৃত নামে না ডাকা <<<
وَلا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلا تَنَابَزُوا بِالألْقَابِ بِئْسَ الاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الإيمَانِ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ কর না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ (বিকৃত) নামে ডেকো না; ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকা ফাসেকী (গোনাহের) কাজ আর যারা এ ধরণের কাজ হতে বিরত না হয় তারাই যালিম। আল-হুজুরাত, ৪৯/১১
>>> মানুষের দোষ গোপন করা উচিত <<<
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ، لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يُسْلِمُهُ، وَمَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ اللَّهُ فِي حَاجَتِهِ، وَمَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً فَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرُبَاتِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার উপর জুলুম করবে না এবং তাকে জালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে আল্লাহ তার অভাব পূরণ করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের বিপদ দূর করবে, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তার বিপদ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ গোপন করবে, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তার দোষ গোপন করবেন। সহীহুল বুখারী: ২৪৪২, ৬৯৫১
>>> কারো গীবত করা উচিত নয় <<<
وَلا تَجَسَّسُوا وَلا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ
আর তোমরা কারো দোষ অনুসন্ধান করো না এবং তোমরা একে অপরের গীবত করো না; তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? আসলে তোমরা তো একে ঘৃণাই করে থাক, আর আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। আল-হুজুরাত, ৪৯/১২
وَيْلٌ لِكُلِّ هُمَزَةٍ لُمَزَةٍ
দুর্ভোগ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে সামনে নিন্দাকারী ও পেছনে গীবতকারী। আল-হুমাযাহ, ১০৪/১
وَلا تُطِعْ كُلَّ حَلافٍ مَهِينٍ هَمَّازٍ مَشَّاءٍ بِنَمِيمٍ مَنَّاعٍ لِلْخَيْرِ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيمٍ
আর তুমি তার অনুসরণ কর না, যে বেশি বেশি শপথ করে, লাঞ্ছিত, যে পশ্চাতে নিন্দা করে, একের কথা অপরের কাছে লাগিয়ে বেড়ায়, যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সীমালংঘনকারী, পাপিষ্ঠ, কঠোর স্বভাবের, তদুপরি কুখ্যাত। আল-ক্বালাম, ৬৮/১০-১৩
>>> বিনা অপরাধে অন্যকে কষ্ট দেওয়া উচিত নয় <<<
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا
আর যারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে বিনা অপরাধে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। আল-আহযাব, ৩৩/৫৮
>>> মন্দ কথা প্রচার না করা <<<
لا يُحِبُّ اللَّهُ الْجَهْرَ بِالسُّوءِ مِنَ الْقَوْلِ إِلا مَنْ ظُلِمَ وَكَانَ اللَّهُ سَمِيعًا عَلِيمًا
মন্দ কথার প্রচারণা আল্লাহ ভালবাসেন না, তবে কারো উপর যুলম করা হলে ভিন্ন কথা এবং আল্লাহ সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী। আন-নিসা, ৪/১৪৮
>>> মিথ্যা পরিহার করা <<<
وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ
এবং মিথ্যা কথা পরিহার কর। আল-হাজ্জ, ২২/৩০
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِرِ " . قَالَ " قَوْلُ الزُّورِ " . أَوْ قَالَ " شَهَادَةُ الزُّورِ "
আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় গোনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না? তিনি বললেন, মিথ্যা কথা বলা কিংবা মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। সহীহ মুসলিম: ১৬২
إِنَّ اللَّهَ لا يَهْدِي مَنْ هُوَ مُسْرِفٌ كَذَّابٌ
নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারী, মিথ্যাবাদীকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না। আল-মুমিন, ৪০/২৮
وَيْلٌ لِكُلِّ أَفَّاكٍ أَثِيمٍ
দুর্ভোগ প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপীর জন্য। আল-জাসিয়া, ৪৫/৭
فَلا تُطِعِ الْمُكَذِّبِينَ
সুতরাং তুমি মিথ্যারোপকারীদের অনুসরণ কর না। আল-ক্বালাম, ৬৮/৮
>>>> ধারণা-অনুমান থেকে বিরত থাকা <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ
হে মুমিনগণ! তোমরা অত্যধিক ধারণা করা থেকে বেঁচে থাক, নিশ্চয় কতক ধারণা পাপ। আল-হুজুরাত, ৪৯/১২
قُتِلَ الْخَرَّاصُونَ الَّذِينَ هُمْ فِي غَمْرَةٍ سَاهُونَ
অনুমানকারীরা ধ্বংস হোক, যারা অজ্ঞতা ও উদাসীনতার মধ্যে রয়েছে। আয-যারিয়াত, ৫১/১০-১১
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
" إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الْحَدِيث"
তোমরা ধারণা-অনুমান থেকে বেঁচে থাক কারণ ধারণা-অনুমান সর্বাপেক্ষা মিথ্যা কথা। সহীহুল বুখারী: ৬০৬৬, ৬৭২৪, সহীহ মুসলিম: ৬৪৩০
>>> মুনাফেকের বৈশিষ্ট্য চারটি <<<
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ كَانَ مُنَافِقًا خَالِصًا، وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنَ النِّفَاقِ حَتَّى يَدَعَهَا إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ وَإِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ، وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ "
চারটি স্বভাব যার মধ্যে রয়েছে সে খাঁটি মুনাফেক; যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকবে সে তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফেকের একটি স্বভাব থেকে যায়। ১. তার কাছে আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে; ২. যখন সে কথা বলে, মিথ্যা বলে; ৩. সে ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে এবং ৪. সে বিবাদে লিপ্ত হলে কটূক্তি করে। সহীহুল বুখারী: ৩৪, ২৪৫৯, ৩১৭৮, সহীহ মুসলিম: ১১৩
>>> কথা ও কাজে মিল থাকা <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لا تَفْعَلُونَ كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللَّهِ أَنْ تَقُولُوا مَا لا تَفْعَلُونَ
হে মুমিনগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল যা তোমরা কর না? আল্লাহর কাছে অত্যন্ত নিন্দনীয় ব্যাপার যে, তোমরা এমন কথা বল যা তোমরা কর না। আস-সাফ, ৬১/২-৩
>>> ঝগড়া হলে মীমাংসা করে নেওয়া <<<
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
নিশ্চয় মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই, তাই তোমাদের ভাইদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও আর আল্লাহকে ভয় কর যেন তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হয়। আল-হুজুরাত, ৪৯/১০
সুতরাং নম্র কথা ও উত্তম বাক্যের মাধ্যমে মানুষকে উপদেশ দেওয়া উচিত। মানুষকে কুরআন ও হাদীসের দাওয়াত দিতে গিয়ে যারা কটূ বাক্য ও মন্দ কথা বলে তারা আসলে নিজেদেরই পাপের পাল্লা ভারী করছে, এতে নিজেরই ক্ষতি হচ্ছে। তাই দাওয়াত দিতে গিয়ে সবাইকে হিকমত ও উত্তম বাক্য বিনিময় করা উচিত। নতুবা লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।
=== বিষয়ঃ কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহর আযাব এবং তার কারণ ও প্রতিকার ===
>>> ভূমিকম্প <<<
أَأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الأرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ
তোমরা কি নিশ্চিত আছ যে, যিনি আকাশে রয়েছেন তিনি তোমাদেরকেসহ ভূমিকে ধ্বসিয়ে দিবেন না আর ওটা আকস্মিকভাবে থর থর করে কাঁপতে থাকবে? আল-মুলক, ৬৭/১৬
إِذَا زُلْزِلَتِ الأرْضُ زِلْزَالَهَا وَأَخْرَجَتِ الأرْضُ أَثْقَالَهَا وَقَالَ الإنْسَانُ مَا لَهَا
যখন প্রচন্ড কম্পনে জমিন প্রকম্পিত হবে এবং জমিন তার বোঝা বের করে দেবে আর মানুষ বলবে, ‘এর কী হল?’ আয-যিলযাল, ৯৯/১-৩
>>> ভূমিকম্প কিংবা শিলাবৃষ্টি <<<
أَفَأَمِنْتُمْ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمْ جَانِبَ الْبَرِّ أَوْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا ثُمَّ لا تَجِدُوا لَكُمْ وَكِيلا
তোমরা কি নিশ্চিত আছ যে, তিনি তোমাদেরসহ স্থলের কোন দিক ধ্বসিয়ে দেবেন না অথবা তোমাদের উপর শিলা বর্ষণকারী বাতাস প্রেরণ করবেন না? তারপর তোমরা তোমাদের জন্য কোন কর্মবিধায়ক পাবে না। আল-ইসরা, ১৭/৬৮
>>> ভূমিকম্প ছাড়া অন্য যে কোন আযাব যা ধারণাতীত <<<
أَفَأَمِنَ الَّذِينَ مَكَرُوا السَّيِّئَاتِ أَنْ يَخْسِفَ اللَّهُ بِهِمُ الأرْضَ أَوْ يَأْتِيَهُمُ الْعَذَابُ مِنْ حَيْثُ لا يَشْعُرُونَ
যারা (ইসলামের বিরুদ্ধে) মন্দের ষড়যন্ত্র করে তারা কি এ বিষয়ে নিশ্চিত যে, আল্লাহ তাদেরসহ মাটিকে ধ্বসিয়ে দেবেন না অথবা এমন দিক হতে শাস্তি আসবে না যা তাদের ধারণাতীত? আন- নাহল, ১৬/৪৫
>>> পাথর বর্ষণকারী ধুলোঝড় <<<
أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ
নাকি তোমরা নিশ্চিত আছ যে, যিনি আকাশের উপর রয়েছেন তিনি তোমাদের উপর পাথর বর্ষণকারী ঝড়ো হাওয়া প্রেরণ করবেন না, তখন তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী ? আল-মুল্ক ৬৭/১৭
>>> পানিতে ডুবিয়ে আযাব <<<
أَمْ أَمِنْتُمْ أَنْ يُعِيدَكُمْ فِيهِ تَارَةً أُخْرَى فَيُرْسِلَ عَلَيْكُمْ قَاصِفًا مِنَ الرِّيحِ فَيُغْرِقَكُمْ بِمَا كَفَرْتُمْ ثُمَّ لا تَجِدُوا لَكُمْ عَلَيْنَا بِهِ تَبِيعًا
নাকি তোমরা নিশ্চিত আছ যে, তিনি তোমাদেরকে আরেকবার সমুদ্রে নিয়ে যাবেন না তখন তোমাদের উপর প্রচন্ড বাতাস পাঠাবেন না অতঃপর তোমাদের সত্য প্রত্যাখ্যান করার কারণে তোমাদেরকে ডুবিয়ে দেবেন না? তখন তোমরা আমার বিরুদ্ধে এ বিষয়ে কোন সাহায্যকারী পাবে না। আল-ইসরা, ১৭/৬৯
>>> আকাশে কালো ধোঁয়া দিয়ে আযাব <<<
فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ يَغْشَى النَّاسَ هَذَا عَذَابٌ أَلِيمٌ
অতএব অপেক্ষা কর সেই দিনের, যেদিন আকাশ স্পষ্ট ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হবে, যা মানুষদেরকে ঘিরে ফেলবে, এটি যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আদ্-দুখান ৪৪/১০-১১
>>> রাতে বা দ্বিপ্রহরে কিংবা যে কোন সময় আল্লাহর আযাব আসবে <<<
أَفَأَمِنَ أَهْلُ الْقُرَى أَنْ يَأْتِيَهُمْ بَأْسُنَا بَيَاتًا وَهُمْ نَائِمُونَ أَوَأَمِنَ أَهْلُ الْقُرَى أَنْ يَأْتِيَهُمْ بَأْسُنَا ضُحًى وَهُمْ يَلْعَبُونَ أَفَأَمِنُوا مَكْرَ اللَّهِ فَلا يَأْمَنُ مَكْرَ اللَّهِ إِلا الْقَوْمُ الْخَاسِرُونَ
তবে কি জনপদগুলোর অধিবাসীরা নিরাপদ হয়ে গেছে, তাদের উপর আমার কঠোর আযাব রাতে আসবে যখন তারা ঘুমিয়ে থাকবে? নাকি জনপদগুলোর অধিবাসীরা নিরাপদ হয়ে গেছে, তাদের উপর আমার কঠোর আযাব দ্বিপ্রহরে আসবে যখন তারা খেলায় মগ্ন থাকবে? তারা কি আল্লাহর কৌশল থেকে নিরাপদ হয়ে গেছে? বস্তুত ক্ষতিগ্রস্ত কওম ছাড়া আল্লাহর কৌশল থেকে আর কেউ (নিজেদেরকে) নিরাপদ মনে করে না। আল-আ‘রাফ, ৭/৯৭-৯৯
>>> যে কোন ভাবেই আল্লাহ আমাদেরকে আযাব দিতে সক্ষম <<<
قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ
তুমি বল, ‘তিনি তোমাদের উপর দিক থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নীচ থেকে তোমাদের উপর আযাব প্রেরণ করতে যথেষ্ট ক্ষমতাবান। আনআম, ৬/৬৫
>>> পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের উপর আল্লাহর আযাব <<<
فَكُلا أَخَذْنَا بِذَنْبِهِ فَمِنْهُمْ مَنْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِ حَاصِبًا وَمِنْهُمْ مَنْ أَخَذَتْهُ الصَّيْحَةُ وَمِنْهُمْ مَنْ خَسَفْنَا بِهِ الأرْضَ وَمِنْهُمْ مَنْ أَغْرَقْنَا وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَكِنْ كَانُوا أَنْفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
অতঃপর তাদের প্রত্যেককেই তাদের পাপের কারণে আমি পাকড়াও করেছিলাম; তাদের কারো উপর আমি পাঠিয়েছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড ঝড়, কাউকে পাকড়াও করেছিল বিকট আওয়াজ, কাউকে আবার জমিনে ধ্বসিয়ে দিয়েছি আর কাউকে পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছি আর আল্লাহ এমন নন যে, তাদের উপর যুলম করবেন বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর যুলম করেছিল। আল-আনকাবুত, ২৯/৪০
قُلْ سِيرُوا فِي الأرْضِ فَانْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُجْرِمِينَ
তুমি বল, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর তারপর প্রত্যক্ষ কর কিরূপ হয়েছিল অপরাধীদের পরিণাম। আন্-নামল, ২৭/৬৯
قُلْ سِيرُوا فِي الأرْضِ ثُمَّ انْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
তুমি বল, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর, তারপর দেখ, কিরূপ হয়েছিল সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের পরিণাম। আল-আন‘আম, ৬/১১
قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِكُمْ سُنَنٌ فَسِيرُوا فِي الأرْضِ فَانْظُروا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
অবশ্যই তোমাদের পূর্বে বহু জীবনাচরণ অতিবাহিত হয়েছে, সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর তারপর দেখ, কিরূপ হয়েছিল সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের পরিণাম। আলে‘ইমরান। ৩/১৩৭
فَسِيرُوا فِي الأرْضِ فَانْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর, তারপর দেখ, কিরূপ হয়েছিল সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের পরিণাম। আন্-নাহল, ১৬/৩৬
فَانْتَقَمْنَا مِنْهُمْ فَانْظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
অতঃপর আমি তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করলাম, তাই দেখ, কিরূপ হয়েছিল সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের পরিণাম। আয্-যুখরুফ, ৪৩/২৫
أَوَلَمْ يَهْدِ لَهُمْ كَمْ أَهْلَكْنَا مِنْ قَبْلِهِمْ مِنَ الْقُرُونِ يَمْشُونَ فِي مَسَاكِنِهِمْ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ أَفَلا يَسْمَعُونَ
এটাও কি তাদেরকে সত্য পথ দেখায় না যে, আমি তাদের পূর্বে কত মানব বংশ ধ্বংস করেছি, যাদের বাসভূমির উপর দিয়ে তারা (এখন) চলাফেরা করে? এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে; তবুও কি তারা শুনবে না? আস-সাজদাহ, ৩২/২৬
>>> মানুষের পাপের কারণেই আল্লাহর আযাব আসে <<<
وَلَقَدْ أَهْلَكْنَا الْقُرُونَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَمَّا ظَلَمُوا
আর অবশ্যই আমি তোমাদের পূর্বে বহু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি, যখন তারা যুলুম (অর্থাৎ গুনাহ/পাপ) করেছিল। ইউনুস, ১০/১৩
وَمَا أَصَابَكُمْ مِنْ مُصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُو عَنْ كَثِيرٍ
তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তোমাদের অনেক অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দেন। আশ-শুরা, ৪২/৩০
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُمْ بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
মানুষের কৃতকর্মের কারণে স্থলে ও জলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। আর-রূম, ৩০/৪১
>>> বড় আযাবের পূর্বে ছোট আযাব দেন যাতে মানুষ ফিরে আসে <<<
وَلَنُذِيقَنَّهُمْ مِنَ الْعَذَابِ الأدْنَى دُونَ الْعَذَابِ الأكْبَرِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
আর অবশ্যই আমি তাদেরকে গুরুতর আযাবের পূর্বে লঘু আযাব আস্বাদন করাব যাতে তারা (আল্লাহর দিকে) ফিরে আসে। আস-সাজদাহ, ৩২/২১
وَمَا نُرْسِلُ بِالآيَاتِ إِلا تَخْوِيفًا
আর কেবলমাত্র ভয়/ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আমি (তাদের কাছে আযাবের) নিদর্শনসমূহ পাঠাই। ইসরা, ১৭/৫৯
وَإِذَا أَرَدْنَا أَنْ نُهْلِكَ قَرْيَةً أَمَرْنَا مُتْرَفِيهَا فَفَسَقُوا فِيهَا فَحَقَّ عَلَيْهَا الْقَوْلُ فَدَمَّرْنَاهَا تَدْمِيرًا
আর যখন আমি কোন জনপদকে ধ্বংস করাতে চাই তখন তার সচ্ছললোকদেরকে নির্দেশ দেই কিন্তু যখন তারা সেখানে পাপাচারে মেতে উঠে তখন তাদের উপর আমার আযাবের ফায়সালা ন্যায়-সঙ্গত হয়ে যায় অতঃপর আমি তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করে দেই। আল-ইসরা, ১৭/১৬
إِنَّ بَطْشَ رَبِّكَ لَشَدِيدٌ
নিশ্চয় তোমার রবের পাকড়াও অত্যন্ত কঠিন। বুরুজ, ৮৫/১২
وَمَا لَهُمْ مِنَ اللَّهِ مِنْ وَاقٍ
আর আল্লাহর শাস্তি থেকে তাদেরকে রক্ষাকারী কেউ নেই। আর-রাদ, ১৩/৩৪
>>> হাদীসের আলোকে আল্লাহর আযাব ও তার কারণ <<<
আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُقْبَضَ الْعِلْمُ، وَتَكْثُرَ الزَّلاَزِلُ، وَيَتَقَارَبَ الزَّمَانُ، وَتَظْهَرَ الْفِتَنُ، وَيَكْثُرَ الْهَرْجُ ـ وَهْوَ الْقَتْلُ الْقَتْلُ ـ حَتَّى يَكْثُرَ فِيكُمُ الْمَالُ فَيَفِيضُ ".
কিয়ামত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিৎনা প্রকাশ পাবে এবং হারজ বৃদ্ধি পাবে (হারজ অর্থ খুন-খারাবী) তোমাদের সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে। সহীহুল বুখারী: ১০৩৬
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ﻓِﻲ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﺄُﻣَّﺔِ ﺧَﺴْﻒٌ ﻭَﻣَﺴْﺦٌ ﻭَﻗَﺬْﻑٌ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻣَﺘَﻰ ﺫَﺍﻙَ ﻗَﺎﻝَ ﺇِﺫَﺍ ﻇَﻬَﺮَﺕِ ﺍﻟْﻘَﻴْﻨَﺎﺕُ ﻭَﺍﻟْﻤَﻌَﺎﺯِﻑُ ﻭَﺷُﺮِﺑَﺖِ ﺍﻟْﺨُﻤُﻮﺭُ
এই উম্মাতের মধ্যে ভূমিধস, চেহারা বিকৃতি এবং উপর থেকে নিক্ষেপ করে ধ্বংস করার শাস্তি আসবে। জনৈক সাহাবী জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! কখন এরূপ হবে? তিনি বললেন, যখন ব্যাপকহারে গায়িকা, বাদ্যযন্ত্র এবং মদ্যপানের প্রসার ঘটবে। (তিরমিযী অধ্যায়: আবওয়াবুল ফিতান, সহীহুল জামে আস্ সাগীর, হাদীছ নং-৪১১৯)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ﻳَﻜُﻮْﻥُ ﻓِﻰْ ﺁﺧِﺮِ ﻫﺬِﻩِ ﺍﻷُﻣَّﺔِ ﺧَﺴْﻒٌ ﻭ ﻣَﺴْﺦٌ ﻭَﻗَﺬْﻑٌ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻗُﻠْﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ! ﺃَ ﻧُﻬْﻠَﻚُ ﻭَ ﻓِﻴْﻨَﺎ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺤُﻮْﻥَ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻧَﻌْﻢُ, ﺇِﺫﺍ ﻇَﻬَﺮَ ﺍﻟْﺨَﺒَﺚُ
আখেরী যামানায় এই উম্মাতের কিছু লোককে ভূমিধস, চেহারা পরিবর্তন এবং উপরে উঠিয়ে নিক্ষেপ করে শাস্তি দেয়া হবে। আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মাঝে সৎলোক থাকতেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো? উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন অশ্লীলতা বৃদ্ধি পাবে। (তিরমিযী, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান, ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে আস্ সাগীর হাদীছ নং-৮০১২)
>>> আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচতে হলে আমাদের করণীয় <<<<
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُوا وَاتَّقَوْا لَفَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَرَكَاتٍ مِنَ السَّمَاءِ وَالأرْضِ وَلَكِنْ كَذَّبُوا فَأَخَذْنَاهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
আর যদি জনপদসমূহের অধিবাসীরা ঈমান আনত আর তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে অবশ্যই আমি তাদের উপর আসমান ও জমিন থেকে বরকতসমূহ খুলে দিতাম কিন্তু তারা (সত্যকে) প্রত্যাখ্যান করেছিল; সুতরাং তাদের কৃতকর্মের কারণে আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম। আল-আ‘রাফ, ৭/৯৬
>>> এই সমস্ত মহাবিপর্যয় থেকে বাঁচতে হলে আল্লাহর বিধান কার্যকর করতে হবে <<<
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ إِلا تَفْعَلُوهُ تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الأرْضِ وَفَسَادٌ كَبِيرٌ
যারা কুফরী করছে তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, যদি তোমরা তা না কর (অর্থাৎ আল্লাহর বিধান কার্যকর না কর) তাহলে ভূ-পৃষ্ঠে ফিতনা ও মহাবিপর্যয় দেখা দিবে। আনফাল, ৮/৭৩
>>> আল্লাহর বিধান কার্যকর করলে আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন <<<
وَلَيَنْصُرَنَّ اللَّهُ مَنْ يَنْصُرُهُ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ الَّذِينَ إِنْ مَكَّنَّاهُمْ فِي الأرْضِ أَقَامُوا الصَّلاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الأمُورِ
আর আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা তাঁকে সাহায্য করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী। (এরা হল) যাদেরকে আমি পৃথিবীতে ক্ষমতা প্রদান করলে তারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে এবং সৎকাজের আদেশ করে ও মন্দ কাজে নিষেধ করে আর সকল কাজের পরিণাম আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত। আল-হাজ্জ, ২২/৪০-৪১
>>> আল্লাহর আযাব হতে হেফাজত থাকার দুআ <<<
ভূ-কম্পনে আক্রান্ত হলে মুসা আলাইহিস্ সালাম দু'আ করেছিলেন,
اللَّهُمَّ أَنْتَ وَلِيُّنَا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الْغَافِرِينَ وَاكْتُبْ لَنَا فِي هَذِهِ الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ
আল্লা-হুম্মা আন্তা ওয়ালি-য়ুনা- ফাগ্ ফির্ লানা- ওয়ার্ হাম্ না- ওয়া আন্তা খায়রুল্ গা-ফিরি---ন্ ওয়াক্ তুব্ লানা- ফি- হা-যিহিদ্ দুন্ইয়া- হাসানাতাঁও ওয়াফিল্ আ-খিরা
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের অভিভাবক তাই আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন ও আমাদেরকে রহমত করুন আর আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমাকারী। আর আমাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ লিখে দিন। আ’রাফ, ৭/১৫৫-১৫৬
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; প্রতিদিন সকালে ও প্রতি সন্ধ্যায় কোন বান্দা এই দু’আ তিনবার পাঠ করলে কোন কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না।
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
বিস্ মিল্লা- হিল্লাযি লা- ইয়াদ্বুররু মা‘আস্ মিহি শাইউন্ ফিল্ আরদি ওয়া লা- ফিস্ সামা---ই ওয়া হুওয়াস্ সামি-‘উল্ আলি---ম
মহান আল্লাহর নামে যাঁর নামের সাথে আকাশে ও জমিনে কোন কিছু ক্ষতি করতে পারে না আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (আবূ দাউদ, আত-তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, আহমদ)
=== বিষয়ঃ কুরআন খেলা সম্পর্কে কী বলে? ===
وَمَا هَذِهِ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلا لَهْوٌ وَلَعِبٌ وَإِنَّ الدَّارَ الآخِرَةَ لَهِيَ الْحَيَوَانُ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ
আর এই দুনিয়ার জীবন কৌতুক ও খেলা ছাড়া আর কিছুই নয় এবং নিশ্চয় পরকালের আবাসই প্রকৃত জীবন, যদি তারা জানত। আল-আনকাবূত, ২৯/৬৪
إِنَّمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَإِنْ تُؤْمِنُوا وَتَتَّقُوا يُؤْتِكُمْ أُجُورَكُمْ وَلا يَسْأَلْكُمْ أَمْوَالَكُمْ
আসলে দুনিয়ার জীবন খেলা ও তামাশা, আর যদি তোমরা বিশ্বাসী হও ও তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিদান দেবেন আর তিনি তোমাদের কাছে ধন-সম্পদ চান না। মুহাম্মদ, ৪৭/৩৬
>>> পরকালের জীবনই শ্রেষ্ঠ <<<
وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَلَلدَّارُ الآخِرَةُ خَيْرٌ لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ أَفَلا تَعْقِلُونَ
আর দুনিয়ার জীবন খেলা ও তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় এবং পরকালের আবাস শ্রেষ্ঠতর তাদের জন্য যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, তবুও কি তোমাদের বোধোদয় হবে না? আল-আন‘আম, ৬/৩২
قُلْ مَا عِنْدَ اللَّهِ خَيْرٌ مِنَ اللَّهْوِ وَمِنَ التِّجَارَةِ وَاللَّهُ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
তুমি বল, আল্লাহর কাছে যা কিছু আছে তা খেলা ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট, আর আল্লাহই সর্বোত্তম রিযিকদাতা। আল-জুমু‘য়াহ, ৬২/১১
>>> আল্লাহ খেলাচ্ছলে আসমানসমূহ ও জমিন সৃষ্টি করেননি <<<
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاءَ وَالأرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لاعِبِينَ لَوْ أَرَدْنَا أَنْ نَتَّخِذَ لَهْوًا لاتَّخَذْنَاهُ مِنْ لَدُنَّا إِنْ كُنَّا فَاعِلِينَ
আর আকাশ ও পৃথিবী আর উভয়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে আমি খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করিনি। যদি আমি খেলার উপকরণ গ্রহণ করতে চাইতাম, তবে আমার কাছে যা আছে তা দিয়েই আমি করতাম, কিন্তু আমি তা করিনি। আল-আম্বিয়া, ২১/১৬-১৭
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالأرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لاعِبِينَ مَا خَلَقْنَاهُمَا إِلا بِالْحَقِّ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لا يَعْلَمُونَ
আর আসমানসমূহ ও জমিন এবং উভয়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে আমি খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করিনি। এ দু’টোকে যথাযথভাবেই আমি সৃষ্টি করেছি; কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না। আদ্-দুখান, ৪৪/৩৮-৩৯
>>> তারা অমনোযোগী <<<
مَا يَأْتِيهِمْ مِنْ ذِكْرٍ مِنْ رَبِّهِمْ مُحْدَثٍ إِلا اسْتَمَعُوهُ وَهُمْ يَلْعَبُونَ لاهِيَةً قُلُوبُهُمْ
যখনই তাদের নিকট তাদের রবের পক্ষ থেকে নতুন উপদেশ আসে তখন তারা তা খেলাচ্ছলে শ্রবণ করে। তাদের অন্তরগুলো থাকে অমনোযোগী। আল-আম্বিয়া, ২১/২-৩
>>> কেয়ামতের লক্ষণ <<<
فَذَرْهُمْ يَخُوضُوا وَيَلْعَبُوا حَتَّى يُلاقُوا يَوْمَهُمُ الَّذِي يُوعَدُونَ
অতএব, তাদেরকে ছেড়ে দাও, তারা বেহুদা কথা ও খেলা-কৌতুকে মগ্ন থাকুক যতক্ষণ না তারা সেই দিবসের সাক্ষাৎ পায়, যার প্রতিশ্রুতি তাদেরকে দেয়া হয়েছে। আয্-যুখরুফ, ৪৩/৮৩, আল-মা‘আরিজ, ৭০/৪২
أَزِفَتِ الآزِفَةُ لَيْسَ لَهَا مِنْ دُونِ اللَّهِ كَاشِفَةٌ أَفَمِنْ هَذَا الْحَدِيثِ تَعْجَبُونَ وَتَضْحَكُونَ وَلا تَبْكُونَ وَأَنْتُمْ سَامِدُونَ
কেয়ামত নিকটবর্তী। আল্লাহ ছাড়া কেউ তা প্রকাশ করতে সক্ষম নয়। তবে কি তোমরা এ কথায় আশ্চর্যবোধ করছ? আর তোমরা হাসি ঠাট্টা করছ অথচ তোমরা কাঁদছ না? আর তোমরা তো উদাসীন হয়ে রয়েছো। আন্-নাজ্ম, ৫৩/৫৭-৬১
>>> দুনিয়ার আযাব <<<
أَفَأَمِنَ أَهْلُ الْقُرَى أَنْ يَأْتِيَهُمْ بَأْسُنَا بَيَاتًا وَهُمْ نَائِمُونَ أَوَأَمِنَ أَهْلُ الْقُرَى أَنْ يَأْتِيَهُمْ بَأْسُنَا ضُحًى وَهُمْ يَلْعَبُونَ
তবে কি জনপদগুলোর অধিবাসীরা নিরাপদ হয়ে গেছে তাদের উপর আমার কঠোর আযাব রাতে আসবে যখন তারা ঘুমিয়ে থাকবে? নাকি জনপদগুলোর অধিবাসীরা নিরাপদ হয়ে গেছে তাদের উপর আমার কঠোর আযাব দ্বিপ্রহরে আসবে যখন তারা খেলায় মগ্ন থাকবে? আল-আ‘রাফ, ৭/৯৭-৯৮
بَلْ هُمْ فِي شَكٍّ يَلْعَبُونَ فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ يَغْشَى النَّاسَ هَذَا عَذَابٌ أَلِيمٌ
বরং তারা সন্দেহের বশবর্তী হয়ে খেল-তামাশা করছে। অতএব অপেক্ষা কর সেই দিনের, যেদিন আকাশ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হবে। যা মানুষদেরকে ঘিরে ফেলবে, এটি যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আদ্-দুখান ৪৪/৮-১১
>>> পরকালের আযাব <<<
فَوَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ الَّذِينَ هُمْ فِي خَوْضٍ يَلْعَبُونَ يَوْمَ يُدَعُّونَ إِلَى نَارِ جَهَنَّمَ دَعًّا
অতঃপর সেদিন মিথ্যারোপকারীদের জন্যে দুর্ভোগ। যারা খেলাচ্ছলে তামাশায় মগ্ন থাকে। সেদিন তাদেরকে জাহান্নামের আগুনের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। আত-তূর, ৫২/১১-১৩
اعْلَمُوا أَنَّمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَزِينَةٌ وَتَفَاخُرٌ بَيْنَكُمْ وَتَكَاثُرٌ فِي الأمْوَالِ وَالأوْلادِ كَمَثَلِ غَيْثٍ أَعْجَبَ الْكُفَّارَ نَبَاتُهُ ثُمَّ يَهِيجُ فَتَرَاهُ مُصْفَرًّا ثُمَّ يَكُونُ حُطَامًا وَفِي الآخِرَةِ عَذَابٌ شَدِيدٌ وَمَغْفِرَةٌ مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانٌ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلا مَتَاعُ الْغُرُورِ
তোমরা জেনে রাখ, আসলে দুনিয়ার জীবন খেলা ও কৌতুক আর শোভা-সৌন্দর্য, এবং তোমাদের পারস্পরিক গর্ব অহঙ্কার, আর ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র। এর উপমা হল, “বৃষ্টির মত, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদেরকে আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়”; আর পরকালে আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি, আর দুনিয়ার জীবন তো ধোঁকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছু নয়। আল-হাদীদ, ৫৭/২০
وَذَرِ الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَهُمْ لَعِبًا وَلَهْوًا وَغَرَّتْهُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَذَكِّرْ بِهِ أَنْ تُبْسَلَ نَفْسٌ بِمَا كَسَبَتْ لَيْسَ لَهَا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلِيٌّ وَلا شَفِيعٌ وَإِنْ تَعْدِلْ كُلَّ عَدْلٍ لا يُؤْخَذْ مِنْهَا أُولَئِكَ الَّذِينَ أُبْسِلُوا بِمَا كَسَبُوا لَهُمْ شَرَابٌ مِنْ حَمِيمٍ وَعَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْفُرُونَ
আর তুমি তাদেরকে পরিত্যাগ কর, যারা নিজেদের দীনকে খেলা ও তামাশারূপে গ্রহণ করেছে এবং যাদেরকে দুনিয়ার জীবন ধোঁকায় রেখেছে এবং তুমি কুরআন দ্বারা উপদেশ দাও, যাতে কোন ব্যক্তি তার কৃতকর্মের কারণে ধ্বংসে পতিত না হয়, তার জন্যে আল্লাহ ছাড়া কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী নেই এবং যদি সে সবকিছুর বিনিময়ে মুক্তিপণ দেয়, তবুও তার থেকে তা গ্রহণ করা হবে না। এরাই তারা, যারা ধ্বংসের শিকার হয়েছে তাদের কৃতকর্মের দরুন, তাদের জন্য রয়েছে ফুটন্ত পানীয় এবং যন্ত্রণাদায়ক আযাব, যেহেতু তারা কুফরী করত। আল-আন‘আম, ৬/৭০
==== বিষয়ঃ কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে মুরতাদের শাস্তির বিধান ===
মুরতাদ হলো যে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করার পর পুনরায় কাফির হয়ে যায় অথবা জন্মগত মুসলিম ইসলাম থেকে বের হয়ে কাফির হয়ে যায়। কাফেরের চেয়ে মুরতাদের কুফুরি চরম কঠিন। মুরতাদ যদি তাওবা না করে তাহলে দুনিয়াতে তার হুকুম হলো হত্যা। সে কারো উত্তরাধিকারী হবে না আর সে কাউকে উত্তরাধিকারী বানাবে না। আর যখন সে মারা যাবে তখন তার সমস্ত সম্পদ বায়তুলমালে জমা হবে। আর আখেরাতে তার হুকুম চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
وَمَنْ يَرْتَدِدْ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌ فَأُولَئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
আর তোমাদের মধ্য থেকে যে তাঁর দীন থেকে ফিরে যাবে অতঃপর কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, ফলে ঐসব লোকদের তাদের আমলসমূহ দুনিয়া ও আখেরাতে নষ্ট হয়ে যাবে এবং তারাই আগুনের অধিবাসী হবে, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল-বাকারাহ, ২/২১৭
কোন সাবালক, বিবেকবান ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ইসলাম পরিত্যাগ করলে তাকে ইসলামের দা’ওয়াত দিতে হবে এবং ইসলামের প্রতি উৎসাহিত করতে হবে এবং তাওবা করার জন্য বলতে হবে, হয়তো বা সে তাওবা করবে। যদি তওবা করে তাহলে সে মুসলিম। যদি তাওবা না করে মুরতাদ অবস্থায় অনড় থাকে তাহলে তাঁর কুফুরির জন্যে তরবারি দ্বারা তাকে হত্যা করতে হবে।
>>> আল্লাহর রাসূলের শত্রুর পরিচয় <<<
আল্লাহ নবী প্রেরণ করার সাথে সাথে নবীদের অনেক শত্রু তৈরী করেছেন। আর তা অতীতে ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতে কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। নবীর শত্রুরা হবে অপরাধী ও দুস্কৃতিকারী। আল্লাহ বলেন-
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا مِنَ الْمُجْرِمِينَ وَكَفَى بِرَبِّكَ هَادِيًا وَنَصِيرًا
এবং এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য দুস্কৃতিকারীদের মধ্য হতে শত্রু করেছি, আর পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারী হিসেবে আপনার রবই যথেষ্ট। আল-ফুরক্বান, ২৫/৩১
>>> এই শত্রুগুলো হবে মানুষ ও জিন এর মধ্য থেকে <<<
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الإنْسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا وَلَوْ شَاءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُونَ وَلِتَصْغَى إِلَيْهِ أَفْئِدَةُ الَّذِينَ لا يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ وَلِيَرْضَوْهُ وَلِيَقْتَرِفُوا مَا هُمْ مُقْتَرِفُونَ
এবং এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য শয়তানদেরকে শত্রু করেছি মানুষের ও জিনের মধ্য থেকে, তারা একে অপরকে চাকচিক্যপূর্ণ কথা দ্বারা ওয়াহী করে থাকে যেন (একে অপরকে) ধোঁকা দিতে পারে, আর যদি তোমার রব ইচ্ছা করতেন তাহলে তারা তা করতে পারত না, সুতরাং তাদেরকে ও তারা যা রচনা করে, তা বর্জন কর। (তারা ওয়াহী করে এ কারণে যে) যারা আখেরাতের প্রতি ঈমান আনে না তাদের অন্তর যেন তাদের (চাকচিক্যপূর্ণ কথার) দিকে আকৃষ্ট হয়, এবং তারা যেন তাতে সন্তুষ্ট হয় আর তারা যে পাপ অর্জন করেছে তারাও যেন সে পাপ অর্জন করে। আল-আন‘আম, ৬/১১২-১১৩
>>> যারা রাসূলকে নিয়ে বিদ্রূপ করে, গালি দেয় তারা মুসলিম নয় <<<
قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ لا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ
তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে বিদ্রূপ করছিলে? তোমরা ওযর পেশ কর না, তোমরা ঈমান আনার পরও অবশ্যই কুফরী করেছ। আত্-তাওবাহ, ৯/৬৫-৬৬
>>> যারা রাসূলকে নিয়ে বিদ্রূপ করে তাদের সাথে চলাফিরা ওঠা বসা করা যাবে না <<<
وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلاَ تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ إِنَّ اللهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْعًا
আর নিশ্চয় তোমাদের প্রতি কুরআনের মাধ্যমে এই বিধান নাযিল করেছেন যে, যখন আল্লাহর আয়াত সমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ করতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা অন্য কথার আলোচনা করে, অন্যথায় তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুনাফেক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামের মধ্যে একই জায়গায় সমবেত করবেন। আন-নিসা, ৪/১৪০
>>> যারা রাসূলকে নিয়ে বিদ্রূপ করে, গালি দেয় তাদের শাস্তির বিধান <<<
إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الأرْضِ فَسَادًا أَنْ يُقَتَّلُوا أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُمْ مِنْ خِلافٍ أَوْ يُنْفَوْا مِنَ الأرْضِ ذَلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ إِلا الَّذِينَ تَابُوا مِنْ قَبْلِ أَنْ تَقْدِرُوا عَلَيْهِمْ فَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এবং জমিনে ফাসাদ (দাঙ্গা-হাঙ্গামা) সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা তাদেরকে শূলে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্ত ও পাগুলো বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে, এটি হল তাদের জন্য দুনিয়ার লাঞ্ছনা আর তাদের জন্যে আখেরাতে রয়েছে কঠোর শাস্তি। তারা ছাড়া, যারা তওবা করে তোমরা তাদের উপর নিয়ন্ত্রণ লাভের পূর্বে; জেনে রাখ, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আল-মায়িদাহ, ৫/৩৩-৩৪
ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: “যে ব্যক্তি তার দীনকে পরিবর্তন করে তাকে তোমরা হত্যা কর”। (সহীহুল বুখারী)
আবু মূসা আশ‘আরী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, একজন মানুষ ইসলাম গ্রহণ করার পর আবার ইহুদি হয়ে যায়। এমন সময় মু‘আয ইবনে জাবাল (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) আবু মূসা আশ’আরী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এর নিকট আসেন যখন তাঁর নিকট ঐ মুরতাদ ব্যক্তি উপস্থিত ছিল। মু‘আয (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বললেন: এর কী হয়েছে? আবু মূসা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, ইসলাম গ্রহণ করার পর আবার সে ইহুদি হয়ে গেছে। মু‘আয (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, যতক্ষণ না একে হত্যা করা হবে ততক্ষণ আমি সাওয়ারী থেকে অবতরণ করবো না। ফলে আবু মূসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হুকুম করলেন এবং লোকটিকে হত্যা করা হলো। এরপর হযরত মু‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু অবতরণ করলেন। (সহীহুল বুখারী: ৪৩৪১, সহীহ মুসলিম)
রাসূলের ঠাট্টা-বিদ্রূপকারীকে যে হত্যা করবে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে না
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে গালিদাতা জনৈক ইহুদীকে জনৈক মুসলিম শ্বাসরোধ করে হত্যা করলে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার রক্তমূল্য বাতিল করে দেন (আবু দাউদ: ৪৩৬১, ৪৩৬৩, সুনানু নাসাঈ: ৪০৭৬)।
>>> আমরা শাস্তি প্রদানে ব্যর্থ হলে সেই শাস্তি আল্লাহ প্রদান করবেন <<<
ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ شَاقُّوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَمَنْ يُشَاقِقِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
এটা এ কারণে যে, তারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করেছে আর যে আল্লাহ ও রাসূলের বিরোধিতা করে নিশ্চয়ই সেক্ষেত্রে আল্লাহ শাস্তি প্রদানে অত্যন্ত কঠোর। আল-আনফাল, ৮/১৩
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ رَسُولَ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
আর যারা আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। আত্-তাওবাহ, ৯/৬১
>>> তারা যেদিকে ফিরে যেতে চায় আল্লাহ তাদেরকে সেদিকে ফিরাবেন <<<
وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا
আর যে রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তার জন্য হিদায়াত স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও এবং মুমিনের পথের বিপরীত পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে ফেরাব, যেদিকে সে ফিরে যেতে চায় এবং তাকে প্রবেশ করাব জাহান্নামে আর তা কতো নিকৃষ্টতর আবাসস্থল। আন-নিসা, ৪/১১৫
>>> মুরতাদদের কর্মসমূহ নষ্ট হয়ে যাবে <<<
وَمَنْ يَرْتَدِدْ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌ فَأُولَئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
আর তোমাদের মধ্য থেকে যে তাঁর দীন থেকে ফিরে যাবে অতঃপর কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, ফলে ঐসব লোকদের তাদের আমলসমূহ দুনিয়া ও আখেরাতে নষ্ট হয়ে যাবে, এবং তারাই আগুনের অধিবাসী হবে, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল-বাকারাহ, ২/২১৭
وَالَّذِينَ كَفَرُوا فَتَعْسًا لَهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ
আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্যে রয়েছে দুর্গতি এবং তিনি তাদের কর্ম বিনষ্ট করে দিবেন। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা অপছন্দ করে, অতএব আল্লাহ তাদের কর্মসমূহ ব্যর্থ করে দিবেন। মুহাম্মদ, ৪৭/৮-৯
وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلالا مُبِينًا
আর যে আল্লাহকে ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করবে সে সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট হবে। আল-আহযাব, ৩৩/৩৬
>>> মুরতাদদের দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহ শাস্তি দিবেন <<<
إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُهِينًا
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহ তাদের প্রতি লানত করেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত করে রেখেছেন অপমানজনক শাস্তি। আল-আহযাব, ৩৩/৫৭
إِنَّ الَّذِينَ يُحَادُّونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ كُبِتُوا كَمَا كُبِتَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَقَدْ أَنْزَلْنَا آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ مُهِينٌ
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে তাদেরকে অপদস্থ করা হবে যেমনভাবে অপদস্থ করা হয়েছিল তাদের পূর্ববর্তীদেরকে, আর অবশ্যই আমি নাযিল করেছি সুস্পষ্ট প্রমাণাদি আর কাফেরদের জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। আল-মুজাদালাহ, ৫৮/৫
إِنَّ الَّذِينَ يُحَادُّونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ فِي الأذَلِّينَ
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে তারা চরম লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত। আল-মুজাদালাহ, ৫৮/২০
>>> যারা রাসূলকে নিয়ে বিদ্রূপ করে, গালি দেয় তাদের পরকালের শাস্তি <<<
مَنْ يُحَادِدِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَأَنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدًا فِيهَا ذَلِكَ الْخِزْيُ الْعَظِيمُ
যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে নিশ্চয়ই তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন সেখানে সে চিরকাল থাকবে, এটিই হল চরম লাঞ্ছনা। আত্-তাওবাহ, ৯/৬৩
وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا
আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করবে অবশ্যই তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, সেখানে সে চিরকাল থাকবে। আল-জিন, ৭২/২৩
وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُودَهُ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُهِينٌ
যে আল্লাহ ও তার রাসূলকে অমান্য করবে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করবে, তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন, সেখানে সে চিরকাল থাকবে; আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। আন-নিসা, ৪/১৪
পরিশেষে বলতে চাই ছাহাবীগণসহ সর্বযুগের ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত, যে ব্যক্তি কাফের ও মুরতাদ তাকে হত্যা করা ওয়াজিব (ইবনু তায়মিয়াহ, আছ-ছারেমুল মাসলূল ২/১৩-১৬)। তবে তা প্রমাণ সাপেক্ষে আদালতের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব সরকারের (কুরতুবী)। এ দায়িত্ব পালন না করলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের কিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। ঐ ব্যক্তি তওবা করলে তার তওবা কবুল হবে। কিন্তু মৃত্যুদন্ড বহাল থাকবে। এটাই হল বিদ্বানগণের সর্বাগ্রগণ্য মত (উছায়মীন, লিকাউল বাবিল মাফতূহ ৬/৫৩)।
==== বিষয়ঃ নবীদের দুআ ===
>>> আদম আলাইহিস্ সালাম ও তার স্ত্রী ক্ষমা চেয়ে দু‘আ করেছিলেন <<<
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
রাব্বানা- য্বালাম্ না--- আন্ ফুসানা- ওয়া ইল্লাম্ তাগ্ ফির্ লানা- ওয়া তার্ হাম্ না- লানাকু-নান্ না মিনাল্ খা-সিরী---ন্
হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের উপর অন্যায় করেছি, আর যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন আর আমাদেরকে রহমত না করেন, তাহলে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব। আ‘রাফ, ৭/২৩
>>> নূহ আলাইহিস্ সালামের দু‘আ <<<
رَبِّ اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِمَنْ دَخَلَ بَيْتِيَ مُؤْمِنًا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَلا تَزِدِ الظَّالِمِينَ إِلا تَبَارًا
রাব্বিগ্ ফির্ লি- ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া ওয়া লিমান্ দাখালা বাইতিয়া মু-মিনাও ওয়ালিল্ মু-মিনি-না ওয়ালিল্ মু-মিনা-তি ওয়ালা- তাযিদিয্ য্বো-লিমি-না ইল্লা- তাবা-রা-
হে আমার রব! আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে ক্ষমা করুন, আর যে মুমিন হয়ে আমার ঘরে প্রবেশ করে তাকেও ক্ষমা করুন এবং মুমিন পুরুষদেরকে ও মুমিন নারীদেরকে ক্ষমা করুন এবং যালেমদের ধ্বংস ছাড়া অন্য কিছু বৃদ্ধি করবেন না। নূহ, ৭১/২৮
رَبِّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَسْأَلَكَ مَا لَيْسَ لِي بِهِ عِلْمٌ وَإِلا تَغْفِرْ لِي وَتَرْحَمْنِي أَكُنْ مِنَ الْخَاسِرِينَ
রাব্বি ইন্নি--- আঊ-যুবিকা আন্ আস্আলাকা মা- লাইসা লি- বিহি‘ইল্ ম্, ওয়া ইল্লা- তাগ্ ফির্ লি- ওয়াতার্ হাম্ নি--- আকুন্ মিনাল খা-সিরি-ন্
হে আমার রব! নিশ্চয় আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি যে সম্বন্ধে আমার জ্ঞান নেই সে সম্পর্কে প্রশ্ন করা হতে, আর যদি আমাকে ক্ষমা ও রহমত না করেন তাহলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব। হুদ, ১১/৪৭
>>> নূহ আলাইহিস্ সালাম নৌকায় উঠার সময় দু‘আ করেছিলেন <<<
بِسْمِ اللَّهِ مَجْرِاهَا وَمُرْسَاهَا إِنَّ رَبِّي لَغَفُورٌ رَحِيمٌ
বিস্ মিল্লা-হি মাজ্ রে-হা- ওয়া মুর্ সা-হা- ইন্না রাব্বী- লাগাফুরুর্ রাহী---ম
আল্লাহর নামে এর চলা ও থামা, নিশ্চয় আমার রব অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। হুদ, ১১/৪১
>>> নূহ আলাইহিস্ সালাম নৌকায় উঠার পর দু‘আ করেছিলেন <<<
رَبِّ أَنْزِلْنِي مُنْزَلا مُبَارَكًا وَأَنْتَ خَيْرُ الْمُنْزِلِينَ
রাব্বি আন্ যিল্ নি- মুন্ যালাম্ মুবা-রাকাঁও ওয়া আন্তা খায়রুল্ মুন্ যিলি--ন্
হে আমার রব! আমাকে অবতরণস্থানে বরকতপূর্ণভাবে অবতরণ করান, আপনি উত্তম অবতারণকারী। আল-মু’মিনুন, ২৩/২৯
>>> ইবরাহীম আলাইহিস্ সালামের দু‘আ <<<
رَبِّ اجْعَلْ هَذَا بَلَدًا آمِنًا وَارْزُقْ أَهْلَهُ مِنَ الثَّمَرَاتِ مَنْ آمَنَ مِنْهُمْ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ
রাব্বিজ্‘আল্ হাজা- বালাদান্ আ-মিনাঁও ওয়ার্ যুক্ আহ্ লাহু মিনাছ্ ছামারা-তি মান্ আ-মানা মিন্ হুম্ বিল্লা-হি ওয়াল্ ইয়াওমিল্ আখির্
হে আমার রব! আপনি একে নিরাপদ নগরীতে পরিণত করুন এবং তার অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান আনে তাদেরকে সব রকম ফল-মূল হতে রিযিক দান করুন। আল-বাকারাহ, ২/১২৬
رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
রাব্বানা- তাকাব্বাল্ মিন্না--- ইন্নাকা আন্তাস্ সামী-‘উল ‘আলী---ম্।
হে আমাদের রব! আমাদের থেকে আপনি কবুল করুন, নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী। আল-বাকারাহ, ২/১২৭
رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِنْ ذُرِّيَّتِنَا أُمَّةً مُسْلِمَةً لَكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
রাব্বানা- ওয়াজ্‘আল্ না- মুস্ লিমাইনি লাকা ওয়ামিন্ যুর্ রিইয়াতিনা--- উম্ মাতাম্ মুস্ লিমাতাল্ লাকা ওয়া আরিনা- মানা-সিকানা- ওয়াতুব্ ‘আলাইনা--- ইন্নাকা আন্তাত্ তাওওয়া-বুর্ রাহি---ম্
হে আমাদের রব! আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরদের মধ্য থেকে আপনার অনুগত একটি দল বানিয়ে দিন এবং আমাদেরকে আমাদের ইবাদাতের পন্থা দেখিয়ে দিন এবং আমাদের উপর ক্ষমাশীল হন। নিশ্চয় আপনি তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। আল-বাকারাহ, ২/১২৮
رَبَّنَا وَابْعَثْ فِيهِمْ رَسُولا مِنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْ إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
রাব্বানা- ওয়াব্‘আছ্ ফিহিম্ রাসুলাম্ মিন্ হুম্ ইয়াত্ লু- ‘আলাইহিম্ আ---য়্যা-তিকা ওয়া ইউ‘আল্লিমু হুমুল্ কিতাবা ওয়াল হিক্ মাতা ওয়া ইউযাক্কিহিম্ ইন্নাকা আন্তাল্ ‘আযিযুল্ হাকি---ম
হে আমাদের রব, তাদের মধ্যে তাদের থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করুন, যে তাদের নিকট আপনার আয়াতসমূহ তিলওয়াত করবে এবং তাদেরকে কিতাব ও সুন্নাত শিক্ষা দিবে আর তাদেরকে পবিত্র করবে; নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আল-বাকারাহ, ২/১২৯
أَسْلَمْتُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
আস্ লাম্ তু লি রাব্বিল ‘আ-লামি---ন্
আমি বিশ্বজগতের রবের নিকট আত্মসমর্পণ করলাম। আল-বাকারাহ, ২/১৩১
رَبِّ اجْعَلْ هَذَا الْبَلَدَ آمِنًا وَاجْنُبْنِي وَبَنِيَّ أَنْ نَعْبُدَ الأصْنَامَ
রাব্বিজ্‘আল্ হা-জাল্ বালাদা আ-মিনাও ওয়াজ্ নুব্ নি- ওয়া বানি-ইয়া আন্ না’বুদাল্ আস্ না---ম্
হে আমার রব! এই শহরকে নিরাপদ করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তি পূজা করা থেকে দূরে রাখুন। ইবরাহীম, ১৪/৩৫
رَبَّنَا إِنِّي أَسْكَنْتُ مِنْ ذُرِّيَّتِي بِوَادٍ غَيْرِ ذِي زَرْعٍ عِنْدَ بَيْتِكَ الْمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِيُقِيمُوا الصَّلاةَ فَاجْعَلْ أَفْئِدَةً مِنَ النَّاسِ تَهْوِي إِلَيْهِمْ وَارْزُقْهُمْ مِنَ الثَّمَرَاتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُونَ
রাব্বানা--- ইন্নি--- আস্ কান্ তু মিন্ যুর্ রিইয়াতি- বিওয়া-দিম্ গাইরে যি- যার্ য়িন্ ইন্দা বায়তিকাল্ মুহার্ রামি রাব্বানা- লিইউক্কি-মুস্ সোলা-তা ফাজ‘আল্ আফ্‘ইদাতাম্ মিনান্ না-সি তাহ্উই--- ইলাইহিম্ ওয়ার্ যুক্ হুম্ মিনাছ্ ছামারা-তি লা‘আল্লাহুম্ ইয়াশকুরু---ন্
হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমি আমার কতক বংশধরদেরকে অনুর্বর উপত্যকায় তোমার পবিত্র ঘরের নিকট বসতি স্থাপন করালাম, হে আমাদের রব, যাতে তারা সালাত কায়েম করে, সুতরাং কিছু মানুষের অন্তর আপনি তাদের দিকে ঝুঁকিয়ে দিন এবং তাদরেকে ফল-ফলাদি থেকে জীবিকা প্রদান করুন, যাতে করে তারা শুকরিয়া আদায় করে। ইবরাহীম, ১৪/৩৭
رَبَّنَا إِنَّكَ تَعْلَمُ مَا نُخْفِي وَمَا نُعْلِنُ وَمَا يَخْفَى عَلَى اللَّهِ مِنْ شَيْءٍ فِي الأرْضِ وَلا فِي السَّمَاءِ
রাব্বানা--- ইন্নাকা তা‘আলামু মা- নুখ্ ফি- ওয়ামা- নু‘অলিন্, ওয়ামা- ইয়াখ্ ফা ‘আলাল্লাহি মিন্ শাইয়িন্ ফিল্ আরদি ওয়ালা- ফিস্ সামা-‘ই
হে আমাদের রব! নিশ্চয় আপনি জানেন যা আমরা গোপনে করি ও যাহা আমরা প্রকাশ করি এবং আল্লাহর কাছে কোন কিছুই গোপন নেই, না জমিনে আর না আসমানে। ইবরাহীম, ১৪/৩৮
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي وَهَبَ لِي عَلَى الْكِبَرِ إِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ إِنَّ رَبِّي لَسَمِيعُ الدُّعَاءِ
আল্ হাম্ দু লিল্লা হিল্লাযি ওয়াহাবা লি- ‘আলাল্ কিবারি ইস্ মা-‘ই-ল্ ওয়া ইস্ হা-ক্ক্ ইন্না রাব্বি- লা সামিউদ্ দু---আ
সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাকে বৃদ্ধ বয়সে ঈসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন, নিশ্চয় আমার রব দু‘আ শ্রবণকারী। ইবরাহীম, ১৪/৩৯
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلاةِ وَمِنْ ذُرِّيَّتِي رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاءِ
রাব্বিজ্ ‘আল্ নী- মুক্বীমাস্ সোলা-তি ওয়ামিন্ যুর্ রিইয়াতী-, রাব্বানা- ওয়া তাক্বাব্বাল্ দুআ--
হে আমার রব! আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান ও আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমাদের রব! আর আপনি আমার দু‘আ কবুল করুন। ইবরাহীম, ১৪/৪০
رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
রাব্বানাগ্ ফির্ লী- ওয়ালি ওয়ালি দাইইয়া ওয়ালিল্ মূ-মিনী-না ইয়াওমা ইয়াকু-মুল্ হিসা--ব্
হে আমাদের রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে ও মুমিনদেরকে সেদিন ক্ষমা করুন, যেদিন হিসাব কায়েম হবে। ইবরাহীম, ১৪/৪১
وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ وَالَّذِي يُمِيتُنِي ثُمَّ يُحْيِينِ وَالَّذِي أَطْمَعُ أَنْ يَغْفِرَ لِي خَطِيئَتِي يَوْمَ الدِّينِ
ওয়া ইযা-মারিদ্ব্ তু ফাহুওয়া ইয়াশ্ ফি---ন্, ওয়াল্লাযি ইয়ুমি-তুনি- ছুম্মা ইয়ুহ্ ই-ন্, ওয়াল্লাযি- আত্বমায়ুআই ইয়াগ্ ফিরালি- খাত্বি-আতি- ইয়াওমাদ্ দি---ন্
আর যখন আমি রোগাক্রান্ত হই তখন তিনিই আমাকে আরোগ্য দান করেন আর যিনি আমাকে মৃত্যু দেবেন এরপর আবার তিনি আমাকে জীবত করবেন; আর আমি আশা করি বিচারের দিবসে তিনি আমার ক্রটিসমূহ ক্ষমা করবেন। আশ্-শু‘আরা, ২৬/৮০-৮২
رَبِّ هَبْ لِي حُكْمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ وَاجْعَلْ لِي لِسَانَ صِدْقٍ فِي الآخِرِينَ وَاجْعَلْنِي مِنْ وَرَثَةِ جَنَّةِ النَّعِيمِ
রাব্বি হাব্লি- হুক্মাও ওয়াল্ হিক্কনি- বিস্ সো-লিহি---ন্ ওয়াজ্‘আল্ লি- লিসা-না সিদ্ক্বিন্ ফিল্ আখিরি---ন্ ওয়াজ্ ‘আলনি- মিও ওয়ারাছাতি জান্নাতিন্ না‘ই--ম
হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের সাথে মিলিত করুন; এবং পরবর্তীদের মধ্যে আমাকে সত্যভাষী করুন এবং আমাকে নেয়ামতে ভরা জান্নাতের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আশ্-শু‘আরা, ২৬/৮৩-৮৫
رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ
রাব্বি হাব্ লী- মিনাস্ সো-লিহি---ন্
হে আমার রব! আমাকে সৎকর্মশীল সন্তান দান কর। আস-সাফফাত, ৩৭/১০০
رَبَّنَا عَلَيْكَ تَوَكَّلْنَا وَإِلَيْكَ أَنَبْنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ رَبَّنَا لا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِلَّذِينَ كَفَرُوا وَاغْفِرْ لَنَا رَبَّنَا إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
রাব্বানা- ‘আলাইকা তাওয়াক্কাল্ না- ওয়াইলাইকা আনাব্ না- ওয়াইলাইকাল্ মাসি--র, রাব্বানা- লা- তাজ্‘আল্ না- ফিত্ নাতাল্ লিল্লাযি-না কাফারু- ওয়াগ্ ফির্ লানা- রাব্বানা- ইন্নাকা আন্তাল্ ‘আযিযুল্ হাকি---ম
হে আমাদের রব! আমরা আপনার উপরই ভরসা করছি, এবং আপনারই দিকেই আমরা অভিমুখী এবং আপনার কাছে প্রত্যাবর্তনস্থল। হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে অবিশ্বাসীদের জন্য ফিতনার কারণ করবেন না এবং আমাদের ক্ষমা করুন; হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আল-মুমতাহিনাহ, ৬০/৪-৫
>>> লুত আলাইহিস্ সালামের দু‘আ <<<
رَبِّ نَجِّنِي وَأَهْلِي مِمَّا يَعْمَلُونَ
রাব্বি নাজ্জিনি- ওয়া আহ্ লি- মিম্মা ইয়ামালু---ন্
হে আমার রব! তারা যা করছে তা হতে আমাকে এবং আমার পরিবারবর্গকে রক্ষা করুন। আশ্-শু‘আরা, ২৬/১৬৯
رَبِّ انْصُرْنِي عَلَى الْقَوْمِ الْمُفْسِدِينَ
রাব্বি ঊন্ সূর্ নি- আলাল্ কাওমিল্ মুফ্ সিদি---ন্
হে আমার রব! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী লোকদের উপর আমাকে সাহায্য করুন। ‘আল-আনকাবূত, ২৯/৩০
>>> ইউসুফ আলাইহিস্ সালামের দু‘আ <<<
مَعَاذَ اللَّهِ إِنَّهُ رَبِّي أَحْسَنَ مَثْوَايَ إِنَّهُ لا يُفْلِحُ الظَّالِمُونَ
মা‘আ-যাল্লা---হ, ইন্নাহু রাব্বি--- আহ্সানা মাছওয়া---আই ইন্নাহু লা- ইউফ্ লিহুয্ যো-লেমু---ন্
আমি আল্লাহর আশ্রয় চাই, নিশ্চয় তিনি আমার রব, তিনি আমার থাকার উত্তম ব্যবস্থা করেছেন, নিশ্চয় যালিমগণ সফল হয় না। ইউসুফ, ১২/২৩
رَبِّ السِّجْنُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا يَدْعُونَنِي إِلَيْهِ وَإِلا تَصْرِفْ عَنِّي كَيْدَهُنَّ أَصْبُ إِلَيْهِنَّ وَأَكُنْ مِنَ الْجَاهِلِينَ
রাব্বিস্ সিজ্ নু আহাব্ বু ইলাইয়া মিম্মা ইয়াদ্ইউ-নানি--- ইলাই, ওয়া ইল্লা- তাস্ রিফ্ আন্নি- কায়দাহুন্না আস্ বু ইলাইহিন্না ওয়া আকুন্ মিনাল্ জা-হিলি---ন্
হে আমার রব, তারা আমাকে যেদিকে আহবান করছে তার চাইতে কারাগারই আমি বেশি পছন্দ করি, আর আপনি যদি আমার থেকে তাদের ছলনা না ফিরান তাহলে আমি তাদের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং আমি অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব। ইউসুফ, ১২/৩৩
فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضِ أَنْتَ وَلِيِّي فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ تَوَفَّنِي مُسْلِمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ
ফা-ত্বিরাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল্ আর্ দ্বি আন্তা ওয়ালিয়ি- ফিদ্দুন্ইয়া- ওয়াল্ আখিরা, তাওয়াফ্ ফানি মুস্ লিমাঁও ওয়াল্ হিক্ক্ নি বিস্ সোলিহি---ন্
হে আসমান ও জমিনের স্রষ্টা, আপনিই আমার অভিভাবক দুনিয়াতে ও আখেরাতে, আমাকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যুদান করুন এবং আমাকে সৎলোকদের সাথে মিলিত করুন। ইউসুফ, ১২/১০১
>>> রোগমুক্তি কামনায় আইউব আলাইহিস্ সালাম দু‘আ করেছিলেন <<<
أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنْتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ
আন্নি মাস্ সানিইয়াদ্ব্ দ্বুর্রু ওয়া আন্তা আর্ হামুর্ রা-হিমি--ন্
নিশ্চয় আমাকে দুঃখকষ্টে (অসুখে) ধরেছে আর আপনি হলেন দয়াবানদের সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াবান। আল-আম্বিয়া, ২১/৮৩
أَنِّي مَسَّنِيَ الشَّيْطَانُ بِنُصْبٍ وَعَذَابٍ
আন্নি মাস্ সানিইয়াশ্ শায়ত্বো-নু বিনুস্ বিন্ ওয়া আযা---ব
নিশ্চয় শয়তান আমাকে কষ্ট ও আযাবে ফেলেছে। সোয়াদ, ৩৮/৪১
>>> শু‘আইব আলাইহিস্ সালামের দু‘আ <<<
عَلَى اللَّهِ تَوَكَّلْنَا رَبَّنَا افْتَحْ بَيْنَنَا وَبَيْنَ قَوْمِنَا بِالْحَقِّ وَأَنْتَ خَيْرُ الْفَاتِحِينَ
‘আলাল্লা-হি তাওয়াক্কাল্ না- রাব্বানাফ্ তাহ্ বাইনানা- ওয়া বাইনা ক্বাওমিনা- বিল্ হাক্কি ওয়া আন্তা খায়রুল্ ফা-তিহি---ন্
আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করছি। হে আমাদের রব! আমাদের মাঝে ও আমাদের সম্প্রদায়ের মাঝে সঠিক ফয়সালা করে দিন এবং আপনি উত্তম ফয়সালাকারী। আ‘রাফ, ৭/৮৯
>>> মুসা আলাইহিস্ সালামের দু‘আ <<<
رَبِّ اغْفِرْ لِي وَلأخِي وَأَدْخِلْنَا فِي رَحْمَتِكَ وَأَنْتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ
রাব্বিগ্ ফির্ লি- ওয়ালি আখি- ওয়া আদ্ খিল্ না- ফি- রাহমাতিকা ওয়া আন্তা আর্ হামুর্ রা-হিমি---ন্
হে আমার রব! আমাকে ও আমার ভাইকে ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আপনার রহমতের মধ্যে প্রবেশ করান আর আপনি হলেন দয়াবানদের সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াবান। আ‘রাফ, ৭/১৫১
اللَّهُمَّ أَنْتَ وَلِيُّنَا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الْغَافِرِينَ وَاكْتُبْ لَنَا فِي هَذِهِ الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ
আল্লা-হুম্মা আন্তা ওয়ালি-য়ুনা- ফাগ্ ফির্ লানা- ওয়ার্ হাম্ না- ওয়া আন্তা খায়রুল্ গা-ফিরি---ন্ ওয়াক্ তুব্ লানা- ফি- হা-যিহিদ্ দুন্ইয়া- হাসানাতাঁও ওয়াফিল্ আ-খিরা
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের অভিভাবক তাই আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন ও আমাদেরকে রহমত করুন আর আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমাকারী। আর আমাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ লিখে দিন। আ‘রাফ, ৭/১৫৫-১৫৬
رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِنْ لِسَانِي يَفْقَهُوا قَوْلِي
রাব্বিশ্ রাহ্ লি- স্বোদ্রি- ওয়া ইয়াস্ সির্ লি--- আম্ রি- ওয়াহ্ লুল্ উক্কদাতাম্ মিল্ লিসা-নি- ইয়াফ্ক্বাহু- কাওলি-
হে আমার রব! আমার জন্যে আমার বক্ষকে প্রশস্ত করে দিন এবং আমার জন্যে আমার কাজ সহজ করে দিন এবং আমার জিহবা হতে জড়তা দূর করে দিন যাতে আমার কথা তারা বুঝতে পারে। ত্ব-হা, ২০/২৫-২৮
رَبِّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَغَفَرَ لَهُ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
রাব্বি ইন্নি- যোলাম্ তু নাফ্ সি- ফাগ্ ফির্ লি- ফাগাফারা লাহ, ইন্নাহু হুওয়াল্ গাফু-রুর্ রাহি---ম্
হে আমার রব! নিশ্চয় আমি নিজের উপর জুলুম করেছি, তাই আমাকে ক্ষমা করুন; অতঃপর তিনি তাকে ক্ষমা করলেন, নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু। আল-কাসাস, ২৮/১৬
رَبِّ بِمَا أَنْعَمْتَ عَلَيَّ فَلَنْ أَكُونَ ظَهِيرًا لِلْمُجْرِمِينَ
রাব্বি বিমা-- আন্‘আম্ তা আলাইয়া ফালান্ আকু-না যোহি-রাল্ লিল্ মুজ্ রিমি-ন্
হে আমার রব! আপনি আমার উপর অনেক কিছু দ্বারা অনুগ্রহ করেছেন, তাই কখনও আমি অপরাধীদের জন্যে সাহায্যকারী হব না। আল-কাসাস, ২৮/১৭
رَبِّ نَجِّنِي مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
রাব্বি নাজ্জিনি- মিনাল্ ক্বাওমিয্ যো-লিমি---ন্
হে আমার রব! আমাকে জালেম সম্প্রদায়ের হতে রক্ষা করুন। আল-কাসাস, ২৮/২১
رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
রাব্বি ইন্নি লিমা--- আন্ যাল্ তা ইলাইয়া মিন্ খায়রিন্ ফাক্বি---র্
হে আমার রব! নিশ্চয় আমার প্রতি আপনি যে কল্যাণ অবতীর্ণ করবেন আমি তার মুখাপেক্ষী। আল-কাসাস, ২৮/২৪
>>> ইউনুস আলাইহিস্ সালামের দু‘আ <<<
لا إِلَهَ إِلا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
লা---ইলাহা ইল্লা--- আন্তা সুব্ হা-নাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ্ যো-লিমি---ন্
আপনি ব্যতীত কোন (সত্য) ইলাহ নেই, আপনি পবিত্র মহান, নিশ্চয় আমি সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছি। আল-আম্বিয়া, ২১/৮৭
>>> দাউদ ও সোলায়মান আলাইহিস্ সালামের দু‘আ <<<
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي فَضَّلَنَا عَلَى كَثِيرٍ مِنْ عِبَادِهِ الْمُؤْمِنِينَ
আল্ হাম্ দুলিল্লা- হিল্লাযি- ফাদ্ব্দ্বোলানা- আলা কাছি-রিম্ মিন্ ‘ইবা-দিহিল্ মূ-মিনি-ন্
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে অনেক মুমিন বান্দাদের উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। আন্-নাম্ল, ২৭/১৫
>>> সোলায়মান আলাইহিস্ সালামের দু‘আ <<<
رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَدْخِلْنِي بِرَحْمَتِكَ فِي عِبَادِكَ الصَّالِحِينَ
রাব্বি আওযি‘ইনি--- আন্ আশ্ কুরা নি‘ইমাতা কাল্লাতি--- আন্‘আম্ তা আলাইয়া ওয়া আলা ওয়া-লিদাইয়া ওয়া আন্ আ‘মালা সো-লিহান্ তার্ দ্বো-হু ওয়া আদ্ খিল্ নি- বিরাহমাতিকা ফি ইবা-দিকাস্ সো-লিহি---ন্
হে আমার রব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন, আমি যেন আপনার নিয়ামতের শোকর করতে পারি, যা নিয়ামত আমার উপর ও আমার পিতা-মাতার উপর আপনি দান করেছেন এবং আমি যেন আপনার পছন্দনীয় সৎকাজ করতে পারি এবং আমাকে আপনার রহমতের দ্বারে প্রবেশ করিয়ে আপনার সৎবান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আন্-নাম্ল, ২৭/১৯
رَبِّ اغْفِرْ لِي وَهَبْ لِي مُلْكًا لا يَنْبَغِي لأحَدٍ مِنْ بَعْدِي إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ
রাব্বিগ্ ফির্ লি- ওয়াহাব্ লি- মুল্ কান্ লা- ইয়াম্ বাগি- লি আহাদিম্ মিম্ বা‘য়দি- ইন্নাকা আন্তাল্ ওয়াহা---ব্
হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন রাজত্ব দান করুন, যা কারও জন্য আমার পরে শোভনীয় হবে না। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা। সোয়াদ, ৩৮/৩৫
>>> যাকারিয়া আলাইহিস্ সালাম সন্তান কামনায় দু‘আ করেছিলেন <<<
رَبِّ هَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ
রাব্বি হাব্লী- মিল্লাদুন্কা যুর্রিইয়াতান্ ত্বোইয়িবাহ, ইন্নাকা সামী-‘উদ্ দু‘আ---
হে আমার রব! আমাকে আপনার নিকট হতে পবিত্র সন্তান দান করুন, নিশ্চয় আপনি দু‘আ শ্রবণকারী। আলে‘ইমরান, ৩/৩৮
رَبِّ إِنِّي وَهَنَ الْعَظْمُ مِنِّي وَاشْتَعَلَ الرَّأْسُ شَيْبًا وَلَمْ أَكُنْ بِدُعَائِكَ رَبِّ شَقِيًّا وَكَانَتِ امْرَأَتِي عَاقِرًا فَهَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ وَلِيًّا
রাব্বি ইন্নি ওয়াহানাল্ ‘আয্মু মিন্নি- ওয়াশ্ তা‘আলার্ রা‘আসু শাইবাঁও ওয়া লাম্ আকুন্ বি দু‘আ---ইকা রাব্বি শাক্বিয়া-, ওয়া কা-নাতিম্ রয়াতি ‘আক্কেরান্ ফাহাব্ লি- মিল্লাদুন্ কা ওয়ালিয়া
হে আমার রব! আমার হাড়গুলো দুর্বল হয়ে গেছে আর বার্ধক্যে মাথার চুলগুলো সাদা হয়েছে; হে আমার রব! আপনাকে ডেকে আমি কখনও ব্যর্থ্ হইনি। আর আমার স্ত্রী হল বন্ধ্যা, তাই আপনি আমাকে আপনার পক্ষ থেকে একজন উত্তরাধিকারী দান করুন। মারইয়াম, ১৯/৪-৫
رَبِّ لا تَذَرْنِي فَرْدًا وَأَنْتَ خَيْرُ الْوَارِثِينَ
রাব্বি লা- তাযার্ নি- ফার্ দাও ওয়া আন্তা খায়রুল্ ওয়া-রিছি---ন্
হে আমার রব! আমাকে একাকী রাখবেন না আর আপনি সর্বোত্তম উত্তরাধিকারী। আল-আম্বিয়া, ২১/৮৯
>>> ঈসা আলাইহিস্ সালামের দু‘আ <<<
اللَّهُمَّ رَبَّنَا أَنْزِلْ عَلَيْنَا مَائِدَةً مِنَ السَّمَاءِ تَكُونُ لَنَا عِيدًا لأوَّلِنَا وَآخِرِنَا وَآيَةً مِنْكَ وَارْزُقْنَا وَأَنْتَ خَيرُ الرَّازِقِينَ
আল্লা-হুম্মা রাব্বানা--- আন্ যিল্ ‘আলাইনা- মা---‘ইদাতাম্ মিনাস্ সামা---ই তাকু-নু লানা- ইদাল্ লিআও ওয়ালিনা- ওয়া আ-খিরিনা- ওয়া আ-ইয়াতাম্ মিন্ কা ওয়ার্ যুক্ না- ওয়ান্তা খায়রুর্ রা-যিকি-ন্
হে আল্লাহ! আমাদের রব, আমাদের প্রতি আসমান হতে খাদ্যভর্তি পাত্র অবতীর্ণ্ করুন, যা আমাদের জন্যে হবে খুশীর উপলক্ষ, আমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য ও পরবর্তীদের জন্য আপনার পক্ষ হতে নিদর্শন হবে এবং আমাদের রিযিক দিন এবং আপনি উত্তম রিযিকদাতা। আল-মায়িদাহ, ৫/১১৪
>>> রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু‘আ করেছিলেন <<<
رَبِّ أَدْخِلْنِي مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِي مُخْرَجَ صِدْقٍ وَاجْعَلْ لِي مِنْ لَدُنْكَ سُلْطَانًا نَصِيرًا
রাব্বি আদ্ খিল্ নি- মুদ্ খালা স্বিদ্ ক্বিও ওয়া আখ্ রিয্নি- মুখ্ রাজা স্বিদ্ ক্বিও ওয়াজ্‘আল্ লি- মিল্লাদুন্ কা সুল্ ত্বোনান্ নাসি-রা
হে আমার রব! আমাকে সত্যসহকারে প্রবেশ করান আর আমাকে সত্যসহকারে বের করে আনুন এবং আমাকে আপনার নিকট হতে সাহায্যকারী শক্তি দান করুন। আল-ইস্রা, ১৭/৮০
رَبِّ احْكُمْ بِالْحَقِّ وَرَبُّنَا الرَّحْمَنُ الْمُسْتَعَانُ عَلَى مَا تَصِفُونَ
রাব্বিহ্ কুম্ বিল্ হাক্ক্, ওয়া রাব্বুনার্ রাহমানুল্ মুসতা‘আ-নু আলা মা- তাসিফু-ন্
হে আমার রব! আপনি ন্যায়ভাবে ফয়সালা করে দিন। আর আমাদের রব হলো পরম করুণাময়। তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে তিনিই একমাত্র সহায়স্থল। আল-আম্বিয়া, ২১/১১২
رَبِّ إِمَّا تُرِيَنِّي مَا يُوعَدُونَ رَبِّ فَلا تَجْعَلْنِي فِي الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
রাব্বি ইম্ মা তুরিইয়ান্নি- মা- ইউ‘আদু---ন্, রাব্বি ফালা তাজ্‘আল্ নি- ফিল্ ক্বাওমিয্ যো-লিমি---ন্
হে আমার রব! যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হচ্ছে তা যদি আপনি আমাকে দেখাতে চান, তবে হে আমার রব! আপনি আমাকে যালিম দলের অন্তর্ভুক্ত করবেন না। মু’মিনুন, ২৩/৯৪
>>> কুরআনের আরও কিছু দু‘আ <<<
>>> ফেরাউনের যাদুকররা ঈমান এনে বলেছিল <<<
آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ আ-মান্না- বিরাব্বিল্ ‘আ-লামি---ন্
আমরা ঈমান এনেছি বিশ্বজাহানের রবের প্রতি। আ‘রাফ,৭/১২১, আশ্-শু‘আরা, ২৬/৪৭
>>> ফেরাউনের যাদুকররা ক্ষমা চেয়ে দু‘আ করেছিল <<<
إِنَّا آمَنَّا بِرَبِّنَا لِيَغْفِرَ لَنَا خَطَايَانَا وَمَا أَكْرَهْتَنَا عَلَيْهِ مِنَ السِّحْرِ وَاللَّهُ خَيْرٌ وَأَبْقَى
ইন্না--- আ-মান্না- বি রাব্বিনা- লিইয়াগ্ ফিরালানা- খাত্বো-ইয়া-না- ওয়া মা--- আক্ রাহ্ তানা- আলাইহি মিনাস্ সেহ্ র্, ওয়াল্লা-হু খায়রুন্ ওয়া আব্ ক্বা
নিশ্চয় আমরা আমাদের রবের প্রতি ঈমান এনেছি, যাতে তিনি আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করেন এবং যে যাদু তুমি আমাদেরকে করতে বাধ্য করেছো তাও ক্ষমা করেন এবং আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ ও চিরস্থায়ী। ত্ব-হা, ২০/৭৩
>>> মুসা আলাইহিস্ সালামের সম্প্রদায় দু‘আ করেছিল <<<
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ
রাব্বানা--- আফ্ রিগ্ আলাইনা- সোব্ রাও ওয়া তাওয়াফ্ ফানা- মুস্ লিমি---ন্
হে আমাদের রব! আমাদের উপর ধৈর্যধারণের ক্ষমতা প্রদান করুন এবং আমাদেরকে মুসলিম হিসাবে মৃত্যু দান করুন। আ‘রাফ, ৭/১২৬
عَلَى اللَّهِ تَوَكَّلْنَا رَبَّنَا لا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِلْقَوْمِ الظَّالِمِينَ وَنَجِّنَا بِرَحْمَتِكَ مِنَ الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
‘আলাল্লা-হি তাওয়াক্কাল্ না- রাব্বানা- লা- তাজ‘আল্ না- ফিত্ নাতাল্ লিল্ কাওমিয্ যো-লিমি---ন্ ওয়া নাজ্জিনা- বি রাহমাতিকা মিনাল্ কাওমিল্ কা-ফেরি---ন্
আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করছি। হে আমাদের রব! আমাদেরকে যালেম সম্প্রদায়ের ফিতনায় পরিণত করবেন না এবং আপনার রহমতে আমাদেরকে অবিশ্বাসী সম্প্রদায় হতে রক্ষা করুন। ইউনুস, ১০/৮৫-৮৬
>>> ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু দু‘আ করেছিলেন <<<
رَبِّ ابْنِ لِي عِنْدَكَ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ
রাব্বিব্নিলি- ইন্দাকা বায়তান্ ফি-ল্ জান্নাতি
হে আমার রব! আমার জন্যে আপনার নিকটে জান্নাতের মধ্যে একটি ঘর তৈরি করুন। আত-তাহরীম, ৬৬/১১
>>> তালুত ও তার সৈন্যবাহিনীর দু‘আ <<<
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
রাব্বানা--- আফ্ রিগ্ ‘আলাইনা- সোব্ রাও ওয়াছাব্বিত্ আক্ দা-মানা- ওয়ান্ ছুরনা- ‘আলাল্ কাওমিল্ কা-ফেরি---ন্
হে আমাদের রব! আমাদের উপর ধৈর্যধারণের শক্তি দান করুন এবং আমাদের পদক্ষেপ সুদৃঢ় করুন, আর আমাদেরকে অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাহায্য করুন। আল-বাকারাহ, ২/২৫০
>>> সাবা জাতির রানী বিলকিস ঈমান এনে বলেছিল <<<
رَبِّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي وَأَسْلَمْتُ مَعَ سُلَيْمَانَ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
রাব্বি ইন্নি যোলাম্ তু নাফ্ সি- ওয়া আস্ লাম্ তু মা‘আ সুলায়মা-না লিল্লা-হি রাব্বিল ‘আ-লামি---ন্
হে আমার রব! নিশ্চয় আমি নিজের প্রতি যুলুম করেছি আর আমি সুলায়মানের সাথে বিশ্ব জাহানের রব আল্লাহর নিকট আত্নসমর্পণ করলাম। আন্-নাম্ল, ২৭/৪৪
>>> ঈসা আলাইহিস্ সালাম এর অনুসারীরা ঈমান এনে বলেছিল <<<
رَبَّنَا آمَنَّا بِمَا أَنْزَلْتَ وَاتَّبَعْنَا الرَّسُولَ فَاكْتُبْنَا مَعَ الشَّاهِدِينَ
রাব্বানা--- আ-মান্না- বিমা--- আন্ যাল্ তা ওয়াত্তাবা’নার্ রাসূ-লা ফাক্ তুব্ না- মা‘আশ্ শা-হিদি---ন্
হে আমাদের রব! আপনি যা নাযিল করেছেন আমরা তার প্রতি ঈমান এনেছি এবং আমরা রাসূলকে অনুসরণ করছি, তাই আমাদের নাম সাক্ষ্যদাতাদের সাথে লিপিবদ্ধ করুন। আলে‘ইমরান, ৩/৫৩
>>> গুহাবাসী যুবকদের দু‘আ <<<
رَبَّنَا آتِنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً وَهَيِّئْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا رَشَدًا
রাব্বানা--- আ-তিনা- মিল্লাদুন্ কা রাহমাতাঁও ওয়া হাইয়ি- লানা মিন্ আম্ রিনা- রাশাদা-
হে আমাদের রব! আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন এবং আমাদের জন্যে আমাদের কাজ-কর্ম্ সঠিকভাবে গড়ে দিন। আল-কাহ্ফ, ১৮/১০
>>>> আরশের ফেরেশতাগণ ঈমানদারদের জন্য দু‘আ করছে <<<
رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَحْمَةً وَعِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا وَاتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ رَبَّنَا وَأَدْخِلْهُمْ جَنَّاتِ عَدْنٍ الَّتِي وَعَدْتَهُمْ وَمَنْ صَلَحَ مِنْ آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ وَقِهِمُ السَّيِّئَاتِ وَمَنْ تَقِ السَّيِّئَاتِ يَوْمَئِذٍ فَقَدْ رَحِمْتَهُ وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
হে আমাদের রব! আপনি রহমত ও জ্ঞান দ্বারা সবক
==================
==== বিষয়ঃ কুরআনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দু‘আ ====
>>> শয়তানের প্ররোচনা হতে পানাহ চাওয়ার দু‘আ <<<
رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُونِ
রাব্বি আউ-যুবিকা মিন্ হামাযা-তিশ্ শাইয়া-ত্বি---ন্ ওয়া আউ-যুবিকা রাব্বি আঁই ইয়াহ্ দ্বুরু---ন্
হে আমার রব! শয়তানের প্ররোচনা হতে আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি আর ওদের (শয়তানদের) উপস্থিতি হতে প্রভু আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। মু’মিনুন, ২৩/৯৭-৯৮
>>> ক্ষমা চাওয়ার দু‘আ <<<
رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
রাব্বানা--- ইন্নানা--- আ-মান্না- ফাগ্ ফির্ লানা- যুনূবানা- ওয়াক্বিনা- ‘আযা-বান্ না-র্
হে আমাদের রব! আমরা অবশ্যই ঈমান এনেছি, তাই আমাদের গুণাহসমূহকে ক্ষমা করুন আর আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করুন। আলে‘ইমরান, ৩/১৬
رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
রাব্বানা--- আ-মান্না- ফাগ্ ফির্ লানা- ওয়ার্ হামনা- ওয়াআন্তা খায়রুর্ রা-হিমি---ন্
হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি তাই আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও আমাদের প্রতি রহমত করুন, আর আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। আল-মু’মিনুন, ২৩/১০৯
رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
রাব্বিগ্ ফির্ ওয়ার্ হাম্ ওয়াআন্তা খায়রুর্ রা-হিমি---ন্
হে আমার রব! ক্ষমা করুন ও রহমত করুন আর আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। মু’মিনুন, ২৩/১১৮
رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
রাব্বানা--- আত্ মিম্ লানা- নূ-রানা- ওয়াগ্ ফির্ লানা- ইন্নাকা আলা ক্বুল্লি শায়য়িন্ ক্বাদি-র্
হে আমাদের রব! আমাদের জন্যে আমাদের নূরকে পরিপূর্ণ করে দিন আর আমাদেরকে ক্ষমা করুন, নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আত-তাহরীম, ৬৬/৮
>>>বাবা মায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার দু‘আ <<<
رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
রাব্বির্ হাম্ হুমা- কামা- রাব্বাইয়া-নি- সোগি-রা-
হে আমার রব! তাদের উভয়ের প্রতি রহমত করুন, যেভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালন পালন করেছে। আল-ইস্রা, ১৭/২৪
>>> পূর্ববর্তী মুমিন ভাইদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার দু‘আ <<<
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلإخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالإيمَانِ وَلا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلا لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ
রাব্বানাগ্ ফির্ লানা- ওয়ালি ইখ্ওয়া-নি নাল্লাযি-না সাবাক্বুনা- বিল্ ঈমা-নি ওয়ালা তাজ্‘আল ফি- ক্বুলুবিনা- গিল্ লাল্ লিল্লাযিনা আ-মানু- রাব্বানা-- ইন্নাকা রাউ-ফুর্ রাহিম্
হে আমাদের রব! আমাদেরকে এবং আমাদের সেইসব ভাইদেরকে ক্ষমা করুন যারা আমাদের পূর্বে ঈমান এনেছে; আর যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য আমাদের অন্তরে কোন হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না, হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি করুণাময়, পরম দয়ালু। আল-হাশর, ৫৯/১০
>>> ধৈর্যধারণ করার দু‘আ <<<
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
রাব্বানাগ্ ফির্ লানা- যুনূ-বানা- ওয়াইস্ রা-ফানা- ফি--- আম্ রিনা- ওয়া ছাব্বিত্ আক্কদা-মানা- ওয়ান্ ছুরনা- আলাল্ কাওমিল্ কা-ফেরি---ন্
হে আমাদের রব! আমাদের গুণাহসমূহ আর আমাদের কাজের ক্ষেত্রে আমাদের বাড়াবাড়িকে ক্ষমা করুন এবং আমাদের পদক্ষেপ সুদৃঢ় করুন আর অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদিগকে সাহায্য করুন। আলে‘ইমরান, ৩/১৪৭
>>> মুসলিম ব্যক্তি ঈমান এনে দু‘আ করে <<<
رَبَّنَا آمَنَّا فَاكْتُبْنَا مَعَ الشَّاهِدِينَ
রাব্বানা--- আ-মান্না- ফাক্ তুব্ না- মা‘আশ্ শা-হিদি---ন্
হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি তাই আমাদের নাম সাক্ষ্যদাতাদের সাথে লিপিবদ্ধ করুন। আল-মায়িদাহ, ৫/৮৩
>>> জ্ঞান বৃদ্ধির জন্যে দু‘আ <<<
رَبِّ زِدْنِي عِلْمًا রাব্বি যিদ্ নি- ‘ইল্ মা-
হে আমার রব! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দাও। ত্ব-হা, ২০/১১৪
>>> দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণের দু‘আ <<<
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
রাব্বানা--- আ-তিনা- ফিদ্দুনিয়া- হাসানাতাঁও ওয়াফিল্ আখিরাতি হাসানাতাঁও ওয়াকিনা- ‘আযা-বান্ না---র্
হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন ও আখেরাতেও কল্যাণ দান করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা করুন। আল-বাকারাহ, ২/২০১
>>> রহমানের বান্দাদের দু‘আ <<<
رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا إِنَّهَا سَاءَتْ مُسْتَقَرًّا وَمُقَامًا
রাব্বানাস্ রিফ্ ‘আন্না- ‘আযা-বা জাহান্নাম্ ইন্না আযা-বাহা- কা-না গারা-মা-, ইন্নাহা- সা---আত্ মুস্তাক্বার্ রাঁও ওয়া মুক্বা-মা-
হে আমাদের রব! আমাদের হতে জাহান্নামের শাস্তি দূরীভূত করুন; নিশ্চয় তার শাস্তি হল অবিচ্ছিন্ন, নিশ্চয় তার অবস্থানস্থল ও আবাসস্থল অত্যন্ত নিকৃষ্ট। আল-ফুরক্বান, ২৫/৬৫-৬৬
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
রাব্বানা- হাব্ লানা- মিন্ আয্ওয়া-যিনা- ওয়া যুর্ রিইয়া-তিনা- ক্কুর্ রাতা আ‘ইউনিও ওয়াজ্ 'আল্ না- লিল্ মুত্তাক্কি-না ইমা-মা-
হে আমাদের রব! আমাদের জন্যে আমাদের জুড়িদেরকে ও আমাদের সন্তানদিকে চক্ষু শীতলকারী করুন, এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে নেতা বানিয়ে দিন। আল-ফুরক্বান, ২৫/৭৪
>>> আল্লাহর সাহায্য কামনায় দু‘আ <<<
حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ
হাস্বুনাল্লা-হু ওয়া নি’মাল্ ওয়াকি---ল্
আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই হলেন উত্তম কর্ম বিধায়ক। আলে'ইমরান, ৩/১৭৩
حَسْبِيَ اللَّهُ لا إِلَهَ إِلا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
হাস্বি আল্লা-হু লা--- ইলা-হা ইল্লা-হু ‘আলাইহি তাওয়াক্বাল্তু ওয়া হুয়া রাব্বুল্ ‘আর্শীল্ ‘আয্বি---ম্
আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তাঁরই উপর আমি ভরসা করছি এবং তিনিই মহান আরশের রব। আত্-তাওবাহ, ৯/১২৯
إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
ইন্না- লিল্লা-হি ওয়া ইন্না--- ইলাইহি- রা-জিয়ু---ন্
নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং তাঁরই দিকে ফিরে যাব। আল-বাকারাহ, ২/১৫৬
>>> হিদায়াত পাবার দু‘আ <<<
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلا الضَّالِّينَ
ইহ্ দিনাস্ব্ স্বিরা-ত্বোল্ মুস্তাক্বি---ম্, স্বিরা-ত্বোল্লাযি-না আন্‘আম্ তা আলাইহিম্ গাইরিল্ মাগ্ দ্বু-বি আলাইহিম্ ওয়ালাদ্ব্ দ্বো---লি---ন্
আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করুন। তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন, যাদের উপর আপনার ক্রোধ আপতিত হয়নি এবং যারা পথভ্রষ্টও নয়। আল-ফাতিহা, ১/৬-৭
>>> হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার দু‘আ <<<
رَبَّنَا لا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ رَبَّنَا إِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِيَوْمٍ لا رَيْبَ فِيهِ إِنَّ اللَّهَ لا يُخْلِفُ الْمِيعَادَ
রাব্বানা- লা-তুযিগ্ কুলূবানা- বা‘দা ইয্ হাদাইতানা- ওয়াহাব্ লানা- মিল্লাদুন্ কা রাহমাহ, ইন্নাকা আন্তাল্ ওয়াহ্ হা---ব্, রাব্বানা--- ইন্নাকা জা-মি‘য়ুন্ না-সি লিইয়াওমিল্ লা-রাইবা ফি---, ইন্নাল্লাহা লা- ইয়ুখ্ লিফুল্ মি-‘আ---দ্
হে আমাদের রব! আপনি আমাদের হিদায়াত দানের পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ হতে আমাদেরকে রহমত দান করুন, নিশ্চয় আপনি মহাদাতা। হে আমাদের রব! নিশ্চয় আপনি সকল মানুষকে একদিন একত্রিত করবেন তাতে কোন সন্দেহ নাই; নিশ্চয় আল্লাহ প্রতিশ্রুতির বিপরীত করেন না। আলে‘ইমরান, ৩/৮-৯
>>> আল্লাহর প্রশংসামুলক দু‘আ <<<
اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَنْ تَشَاءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَاءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَاءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَاءُ بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
আল্লা-হুম্মা মা-লিকাল্ মুল্কি তু-তিল্ মুল্কা মান্ তাশা----য়ু ওয়া তান্ যি‘য়ুল্ মুল্কা মিম্ মান্ তাশা----য়ু ওয়া তু‘ইজ্জু মান্ তাশা----য়ু ওয়া তুযিল্লু মান তাশা----য়ূ বিইয়াদিকাল্ খাই---র্, ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িন্ ক্কাদি---র্
হে আল্লাহ! আপনি রাজত্বের মালিক, আপনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব দান করেন এবং যার কাছ থেকে চান রাজত্ব কেড়ে নেন এবং আপনি যাকে চান সম্মান দান করেন, আর যাকে চান অপমানিত করেন, আপনার হাতেই রয়েছে কল্যাণ; নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। আলে‘ইমরান, ৩/২৬
اللَّهُمَّ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِي مَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
আল্লা-হুম্মা ফা-ত্বিরাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল্ আর্ দ্বি ‘আ-লিমাল গাইবে ওয়াশ শাহা-দাতি আন্তা তাহ্ কুমু বায়না ‘ইবা-দিকা ফি- মা- কা-নু- ফি-হি ইয়াখ তালিফু---ন্
হে আল্লাহ! আসমান ও জমিনের স্রষ্টা, অদৃশ্যের ও দৃশ্যের জ্ঞানী, আপনিই আপনার বান্দাদের মাঝে ফয়সালা করে দিবেন, যে বিষয়ের মাঝে তারা মতভেদ করছে। আয-যুমার, ৩৯/৪৬
>>> আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করার দু‘আ <<<
رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِي فِي ذُرِّيَّتِي إِنِّي تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
রাব্বি আওযি‘ইনি--- আন্ আশ্ কুরা নি‘ইমাতাকাল্ লাতি--- আন্‘আম্ তা ‘আলাইয়া ওয়া‘আলা ওয়া-লিদাইয়া ওয়া আন্ আ‘য়্মালা সো-লিহান্ তার্ দ্বো-হু ওয়া আস্ লিহ্ লি- ফি- যুর্ রিইয়াতি- ইন্নি- তুব্ তু ইলাইকা ওয়া ইন্নী মিনাল্ মুস্ লিমি---ন্
হে আমার রব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন, আমি যেন আপনার নিয়ামতের শোকর আদায় করতে পারি, যে নিয়ামত আমার উপর ও আমার পিতা-মাতার উপর দান করেছেন এবং আমি যেন আপনার পছন্দনীয় সৎকাজ করতে পারি এবং আমার জন্যে আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করুন, নিশ্চয় আমি আপনার নিকট তওবা করছি এবং আমি আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত। আল-আহকাফ, ৪৬/১৫
>>> যানবাহনে উঠার পর দু‘আ <<<
তিনবার আল্লা-হু আকবার বলে নিম্নের দু‘আ পাঠ করা
سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُونَ
সুব্ হা-নাল্লাযি- সাখ্ খারা লানা- হাযা ওয়া মা- কুন্না- লাহু মুকরিনি---ন্, ওয়া ইন্না--- ইলা রাব্বিনা- লামুন্ কালিবু---ন্
পবিত্র মহান তিনি যিনি এগুলোকে আমাদের জন্য বশীভূত করে দিয়েছেন। আর আমরা এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম ছিলাম না। আর নিশ্চয় আমরা আমাদের রবের কাছেই ফিরে যাব। আয-যুখরুক, ৪৩/১৩-১৪
>>> অসহায় মজলুম ব্যক্তিদের দু‘আ <<<
رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَل لَنَا مِنْ لَدُنْكَ وَلِيًّا وَاجْعَل لَنَا مِنْ لَدُنْكَ نَصِيرًا
রাব্বানা--- আখরিজ্ না- মিন্ হা-যিহিল্ ক্বারইয়াতিল্ য্বো-লিমি আহ্ লুহা- ওয়াজ‘আল্ লানা- মিল্লাদুন্ কা ওয়ালিইয়াও ওয়াজ‘আল্ লানা- মিল্লাদুন্ কা নাসি-রা-
হে আমাদের রব! আমাদেরকে এই যালিম অধ্যূষিত জনপদ হতে বের করুন এবং আপনার নিকট থেকে আমাদের জন্য একজন অভিভাবক বানিয়ে দিন আর আপনার নিকট থেকে আমাদের জন্য একজন সাহায্যকারী বানিয়ে দিন। আন-নিসা, ৪/৭৫
>>> মুমিনদের দু‘আ <<<
آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
আমানার্ রাসূলু বিমা--- উন্ যিলা ইলাইহি মির্রাব্বিহি ওয়াল্ মু’মেনু---ন্, কুল্লুন্ আমানা বিল্লাহি ওয়া মালা---‘ইকাতিহি ওয়া কুতুবিহি ওয়া রুসুলিহি লা-নুফার্রেকু বাইনা আহাদিম্ মের্রুসুলিহ্ ওয়াক্বালূ সামি‘ইনা- ওয়াআত্বো‘না- গুফ্ রা-নাকা রাব্বানা- ওয়াইলাইকাল্ মাসীর
রাসূল তার রবের পক্ষ থেকে তার নিকট নাযিলকৃত বিষয়ের প্রতি ঈমান এনেছে, আর মুমিনগণও, প্রত্যেকে ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি, আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না, আর তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের ক্ষমা করুন, আর আপনার কাছেই প্রত্যাবর্তনস্থল। আল-বাকারাহ, ২/২৮৫
رَبَّنَا لا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلا تُحَمِّلْنَا مَا لا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
রাব্বানা- লা- তুওয়া-খিয্না--- ইন্ নাসিনা--- আওআখ্ত্বোআনা-, রাব্বানা- ওয়ালা- তাহ্মিল্ ‘আলাইনা--- ইস্রান্ কামা হামাল্তাহু আলাল্লাযি-না মিন্ ক্বাব্লিনা-, রাব্বানা- ওয়ালা- তুহাম্মিল্না- মা- লা- ত্বা-ক্বাতা লানা- বিহি ওয়া‘ফু ‘আন্না- ওয়াগ্ফির্ লানা- ওয়ার্হাম্না- আন্তা মাওলা-না- ফান্সুর্না- ‘আলাল্ ক্বাওমিল্ কা-ফিরী---ন্
হে আমাদের রব! আমরা যদি ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তাহলে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না; হে আমাদের রব! আমাদের উপর এমন দায়িত্ব চাপাবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর আপনি তা চাপিয়ে দিয়েছিলেন; হে আমাদের রব! আমাদের উপর এমন কোন বোঝা চাপাবেন না যার সামর্থ্য আমাদের নেই, এবং আমাদের দোষ-ত্রুটি দূর করে দিন ও আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন আর আমাদের উপর রহমত করুন; আপনিই আমাদের অভিভাবক, তাই আমাদের সাহায্য করুন অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে। আল-বাকারাহ, ২/২৮৬
>>> চিন্তাশীল ব্যক্তিদের দু‘আ <<<
رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذَا بَاطِلا سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ رَبَّنَا إِنَّكَ مَنْ تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ
রাব্বানা- মা- খালাক্তা হা-যা- বা-ত্বিলান্ সুব্ হা-নাকা ফাক্বিনা- ‘আযা-বান্ না---র্, রাব্বানা--- ইন্নাকা মান্ তুদ্ খিলিন্ না-রা ফাক্বাদ্ আখ্ যাইতা, ওয়ামা-লিয্ য্বো-লিমি-না মিন্ আন্ সো---র্
হে আমাদের রব! আপনি এটা অর্থহীন সৃষ্টি করেননি, আপনি পবিত্র মহান, সুতরাং আমাদেরেকে জাহান্নামের আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা করুন। হে আমাদের রব! নিশ্চয় আপনি যাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন তাহলে অবশ্যই তাকে আপনি অপমানিত করলেন আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নাই। আলে‘ইমরান, ৩/১৯১-১৯২
رَبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِي لِلإيمَانِ أَنْ آمِنُوا بِرَبِّكُمْ فَآمَنَّا رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الأبْرَارِ رَبَّنَا وَآتِنَا مَا وَعَدْتَنَا عَلَى رُسُلِكَ وَلا تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّكَ لا تُخْلِفُ الْمِيعَادَ
রাব্বানা- ইন্নানা- সামি’না মুনা-দিআই ইয়ুনা-দি লিল্ ইমানি আন্ আ-মিনু বিরাব্বিকুম ফাআ-মান্না- রাব্বানা- ফাগ্ ফির্ লানা- যুনূবানা- ওয়া কাফ্ ফির্ ‘আন্না- সাইয়িআ-তিনা- ওয়া তাওয়াফ্ ফানা- মা‘আল্ আব্ রা---র্ রাব্বানা- ওয়া আ-তিনা- মা- ওয়া ‘আদ্ তানা- ‘আলা রুসুলিকা ওয়া লা- তুখ্ যিনা- ইয়াওমাল্ ক্বিয়া-মা, ইন্নাকা লা-তুখ্ লিফুল্ মি‘আ--দ্
হে আমাদের রব! নিশ্চয় আমরা শুনেছি একজন আহবানকারীকে ঈমানের দিকে আহবান করতে যে, তোমরা তোমাদের রবের উপর ঈমান আনো, তাই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রব! আমাদের গুণাহসমূহ ক্ষমা করুন ও আমাদের থেকে আমাদের দোষত্রুটি দুর করে দিন এবং নেককারদের সাথে আমাদের মৃত্যু দিন। হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে তা প্রদান করুন, যার ওয়াদা আপনার রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদের জন্য করেছেন এবং আমাদেরকে কিয়ামতের দিন অপমানিত করবেন না, নিশ্চয় আপনি প্রতিশ্রুতির বিপরীত করেন না। আলে‘ইমরান, ৩/১৯৩-১৯৪
==== বিষয়ঃ রোগমুক্তি কামনায় ও ঝাড়-ফুঁকে ব্যবহৃত কিছু দু‘আ ====
وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ
ওয়া ইয়াশ্ ফি সুদুরা ক্বাওমিম্ মু’মেনী-ন্
তিনি (আল্লাহ) মুমিন লোকদের অন্তরসমূহ নিরাময় করেন। তওবা, ৯/১৪
قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاءٌ
কুল্ হুওয়া লিল্লাযি-না আ-মানু- হুদাও ওয়াশিফা---উ
বলুন, এতে (কুরআনে) যারা ঈমান আনে তাদের জন্য হেদায়াত ও আরোগ্য। ফুসসিলাত, ৪১/৪৪
وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
ওয়া নুনায্ যিলু মিনাল্ কুরআ-নি মা হুওয়া শিফা---উ- ওয়া রাহমাতুল্ লিল্ মু’মিনী-ন্
আমি এই কুরআন নাযিল করেছি যা মুমিনদের জন্য আরোগ্য ও রহমত। আল-ইস্রা, ১৭/৮২
هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ السَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَعَ إِيمَانِهِمْ
হুওয়াল্লাযি--- আন্ যালাস্ সাকি-নাতা ফি ক্বুলুবিল্ মু’মিনি-না লি ইয়ায্দা-দু--- ঈ’মা-নান্ মা‘আ ঈ’মা-নিহিম্
তিনি মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন যেন তাদের ঈমানের সাথে ঈমান আরও বৃদ্ধি পায়। আল-ফাত্হ, ৪৮/৪
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
ইয়া--- আইয়ুহান্না-সু ক্বাদ্ জা---আত্কুম্ মাও‘ইযাতুম্ মির্ রাব্বিকুম্ ওয়া শিফা---উন্ লিমা- ফিস্ব্ সোদু-রি ওয়া হুদাও ওয়া রাহমাতুল্লিল্ মু’মিনী---ন্
হে মানুষসকল! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ হতে উপদেশ এসেছে এবং তা অন্তরসমূহের মধ্যে যা আছে তার আরোগ্য আর মুমিনদের জন্য হেদায়াত ও রহমত। ইউনুস, ১০/৫৭
এছাড়া সূরা আল-ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, সূরা আল-বাকারাহর শেষ দুই আয়াত, সূরা আল-কাফিরূন, সূরা আল-ইখলাস, সূরা আল-ফালাক্ক, সূরা আন-নাস রোগমুক্তির জন্য ব্যবহৃত হয়।
>>> রোগমুক্তি কামনায় সহীহ হাদীসের দু‘আ <<<
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ، أَذْهِبِ الْبَأْسَ، وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِي، لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا
আল্লা-হুম্মা রাব্বান্না-স্, আয্ হিবিল্ বা’স্, ওয়াশ্ ফি আন্ তাশ্ শা-ফি-, লা- শিফা---আ ইল্লা-শিফা-উকা, শিফা---আন্ লা ইউগা-দিরু সাক্কামা
হে আল্লাহ! মানুষের রব, কষ্ট দুর করে দাও, রোগ নিরাময় করে দাও, তুমি আরোগ্য দানকারী, কোন আরোগ্যকারী নেই তোমার আরোগ্য ব্যতীত, তুমি এমন আরোগ্য দান করো যাতে কোন রোগ অবশিষ্ট না থাকে। (সহীহুল বুখারী: ৫৭৪২, ৫৭৪৩, ৫৭৫০ ও সহীহ মুসলিম: ৫৬০০, ৫৬০২, ৫৬০৩)
>>> সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার <<<
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
আল্লা-হুম্মা আন্তা রাব্বি লা--- ইলাহা ইল্লা আন্তা খালাক্ক্ তানি- ওয়া আনা- ‘আব্দুক্, ওয়া আনা- ‘আলা- আহ্ দিকা ওয়া ওয়াঅ’দিকা মাস্ তাত্বো’ত্, আউ-যুবিকা মিন্ শার্ রি মা- সোনা’ত্, আবু-উ লাকা বি নি’অমাতিকা আলাই, ওয়া আবু-উ বিযাম্ বি, ফাগ্ ফির্ লি- ফাইন্নাহু লা- ইয়াগ্ ফিরুয্ যুনুবা ইল্লা আন্ত্
হে আল্লাহ! তুমি আমার রব, তুমি ছাড়া আর কোন (সত্য) উপাস্য নেই, তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ, আর আমি তোমার বান্দা, আমি তোমার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের উপর যথাসাধ্য প্রতিষ্ঠিত আছি, আমি যা করছি তাঁর অনিষ্ট হতে তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি, আমার উপর তোমার যে নি‘আমত রয়েছে আমি তা স্বীকার করছি, এবং আমি আমার অপরাধও স্বীকার করছি, তাই তুমি আমাকে ক্ষমা কর, নিশ্চয়ই তুমি ব্যতীত অন্য কেউ পাপ ক্ষমা করতে পারে না। সহীহুল বুখারী: ৬৩০৬, ৬৩২৩
তথ্যসূত্র :
বই: ওয়াহীর জ্ঞান। সংকলন: মোহাম্মদ সাইদুর রহমান; সম্পাদনা: অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক; প্রকাশনায়: তাওহীদ পাবলিকেশন্স।
আজকের আইডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url